ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে ক্লিনিকে হামলা, বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

ভোলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে ক্লিনিকে হামলা, বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ২৪ নবেম্বর ॥ ভোলায় বেসরকারী ক্লিনিক হাবিব মেডিক্যাল সেন্টারে বুধবার রাতে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় আদিত্য চন্দ্র দে নামে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ক্লিনিকে রোগীর স্বজন ও উত্তেজিত জনতা হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুরসহ বিক্ষোভ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জন্য পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং অভিযুক্ত চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ আবদুল কাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে পুলিশ তাকে আবরুদ্ধ অবস্থা থেকে আটক করে। কিন্তু নিহতের পরিবার বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোন মামলা না দেয়ায় ও ময়নাতদন্ত করতে রাজি না হওয়ায় ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ভোলা থানার ওসি মীর খায়রুল কবির। অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন মহলের চাপে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় এ ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার হচ্ছে। জেলার অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই। কয়েকটির থাকলেও তারা কোন নিয়ম কানন মানে না। অদক্ষ ও ভুয়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনেশিয়ান ও নার্স দিয়ে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও সব ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাপা পড়ে যায়। ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চাকরিজীবী নিহত শিশুর পিতা রতন চন্দ্র দে জানান, তার এক মাত্র শিশু ঠা-াজনিত রোগে অসুস্থ হলে তাকে বুধবার সন্ধ্যায় ভোলা হাবিব মেডিক্যালের চেম্বারে সদর হাসপাতালে চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ আবদুল কাদেরকে দেখায়। ডাক্তার এক্সরে করে হাবিব মেডিক্যালে আদিত্য চন্দ্র দেখে সেফট্রোন নামক একটি ১ গ্রামের ইনজেকশন জরুরীভাবে দেয়ার জন্য তার ব্যবস্থা পত্রে লিখে দেয়। রোগীর স্বজনরা ওই ইনজেকশন দ্রুত কিনে হাবিব মেডিক্যালের স্টাফ ব্রাদারকে দিলে তা পুশ করে। তার পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে বার বার জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। রাত ৯টার দিকে এক পর্যায় শিশুটি মারা যায়। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজন ও উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ করে হাবিব মেডিক্যালে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র এবং ডাক্তারের চেম্বার ভাংচুর করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত ডাক্তার আবদুল কাদেরকে জনতার বিক্ষোভের মুখে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের প্রিজনভ্যানে ডাক্তারকে উঠানোর সময় বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে তিনি লাঞ্ছিত হন। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে লাঠি চার্জ করে। তবে অভিযুক্ত ডাক্তার আবদুল কাদের বলেন, ওই শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। সে তার পুরনো রোগী। ইনজেকশন পুশ করার পর রোগীর হাইপার সেনসিটিভ রিয়েকশন হয়। এতে রোগীর মৃত্যু হয়। এর জন্য তিনি দায়ী না। তার চিকিৎসা সঠিক ছিল বলে তিনি দাবি করেন।
×