ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে শ্রমের দাম বাড়তে থাকায় বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। এখন সংস্কারের মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য ব্যবস্থা ও ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতির প্রয়োজন। এটি হলে বাংলাদেশও পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মতো রফতানি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবে। বিশ্বব্যাংক এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এক যৌথ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ‘সাউথ এশিয়া’স টার্ন ঃ পলিসিজ টু বুস্ট কমপিটিটিভনেস এ্যান্ড ক্রিয়েট দ্য নেক্সট এক্সপোর্ট পাওয়ার হাউজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাংলাদেশের ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আরও বেশি সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিবেদনে চারটি নীতিগত ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো- ব্যবসার পরিবেশ উন্নতি, গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের সঙ্গে সংযুক্তকরণ, একই জায়গায় থেকে উৎপাদন সুবিধার সর্বোচ্চকরণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো। প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে শ্রমের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এদিকে প্রতিবছর বাংলাদেশে ২০ লাখেরও বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এই সুযোগ লুফে নিতে এবং অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাংলাদেশকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ৩৯ শতাংশ মানুষের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছর। এদের জন্য স্থায়ী ও মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া খাতভিত্তিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণের অনুপাত এবং মজুরি বৈষম্যও বড় বাধা। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে ও নীতি সহায়তা চালু করতে হবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের কর্মক্ষম এক চতুর্থাংশেরও বেশি মানুষের আবাসস্থলে পরিণত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার এই অনুকূল কার্যক্রম জনশক্তি, শিক্ষার ক্রমবর্ধমান হার ও নগরগুলোর বর্ধিত সুবিধা কাজে লাগানো উচিত। অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটির প্রশংসা করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ায় আমি খুশি। প্রতিবেদনে তুলে ধরা পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ট্রেড কমপিটিটিভনেস গ্লোবাল প্র্যাকটিস বিভাগের লিড ইকোনমিস্ট এবং প্রতিবেদনের লেখক ভিনসেন্ট পলমেড বলেন, সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ ও মানের ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। কারণ এ অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা কম। ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশের বিপুল প্রতিযোগিতা সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে বাণিজ্য ব্যবস্থার ও ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়ন করতে হবে এবং শিল্প কারখানার জন্য জমি স্বল্পতা সমস্যার সমাধান করতে হবে। সঠিক নীতিমালা এবং উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে বাংলাদেশের এশিয়ার ভবিষ্যত রফতানি শক্তি না হওয়ার কোন কারণ নেই। পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবিনা হক, এসিআই লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ দোলা, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
×