ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফের মাহমুদুল্লাহ ভেল্কিতে খুলনার জয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

ফের মাহমুদুল্লাহ ভেল্কিতে খুলনার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে তো শেষ ওভারের নায়ক বলে ফেলা যায়। শনিবার চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ম্যাচেও যে বোলিং ম্যাজিক দেখালেন, সেই ম্যাজিকে খুলনা টাইটান্সও ৪ রানে জয় তুলে নিল। শেষ ওভারে জিততে চিটাগাংয়ের দরকার ছিল ৬ রান। ১ রানের বেশি তো দেনই-নি। আবার ৩ উইকেট তুলে নিয়ে খুলনাকে দ্বিতীয় জয়ও এনে দেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। এর আগে বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষেও একই ম্যাজিক দেখান মাহমুদুল্লাহ। সেই ম্যাচে রাজশাহীর ৬ বলে জিততে ৭ রানের দরকার ছিল। কিন্তু ঝলক দেখান মাহমুদুল্লাহ। সেই ম্যাচেও শেষ ওভারে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে রাজশাহীকে অলআউটই করে দেন তিনি। এবার অবশ্য চিটাগাংকে গুটিয়ে দেয়া যায়নি। ৯ উইকেট ফেলা গেছে। তবে ১২৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া চিটাগাং ২০ ওভারে ১২৩ রানের বেশি করতে পারেনি। সেই জয়ে মাহমুদুল্লাহই নায়ক হন। হওয়ারই কথা। শেষ ওভারে যে মাহমুদুল্লাহ ম্যাজিক দেখান। তিনি এমন বোলিং না করলে তো খুলনা জিততেই পারত না। অনেক কষ্ট করেই রান তুলতে হচ্ছে। টি২০ খেলা। অথচ রানই হচ্ছে না। ব্যাটসম্যানদের রান তুলতে বারোটা বেজে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের রিকি ওয়েসেলসের ২৮, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরানের ২৯, আরিফুল হকের অপরাজিত ২৫ ও অলক কাপালীর ২৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১২৭ রান করে খুলনা। জবাব দিতে নেমে চিটাগাং যখন ৭৮ রানে ৬ উইকেট হারায়, তখনই ম্যাচটি খুলনার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় পর্যন্ততো পেসার শফিউল ইসলাম দুর্দান্ত বোলিং করেন। ৪ উইকেট তুলে নেন। কিন্তু সপ্তম উইকেটে আফগানিস্তান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী ও শ্রীলঙ্কান চতুরঙ্গ ডি সিলভা মিলে বড় জুটি গড়ে ফেলেন। দলকে জয়ের কাছাকাছিও নিয়ে যান। ১৯ ওভারে দল ১২২ রানও করে ফেলে। দুইজন মিলে ৪৪ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। ৬ বলে জিততে ৬ রান লাগে। স্বাভাবিকভাবেই জেতার কথা চিটাগাংয়েরই। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ শেষ ওভারটি করতে আসেন। তখনই সবাই বলাবলি করতে শুরু করে দেন, কিছু একটা ঘটতে পারে। সবার স্মৃতিতে তখন রাজশাহীর বিপক্ষে মাহমুদুল্লাহর করা শেষ ওভারের ঝলকানিই মনে পড়ে। সেই চমক এবারও দেখা মিলল। প্রথম বলে নবী ১ রান নেন। পরের বলেই সিলভাকে আউট করে দেন মাহমুদুল্লাহ। তৃতীয় বলে কোন রান দেন না। চতুর্থ বলে লং অফে ক্যাচ তুলে দেন আব্দুর রাজ্জাকও। সাজঘরে ফেরেন। এরমধ্যে নবীও প্রান্ত বদল করে ফেলেন। চার বলে জিততে ৫ রান দরকার। নবী ব্যাটিংয়ে থাকায় মনে হয় খুলনার হারও হয়ে যেতে পারে। চিটাগাং জিততে পারে। কিন্তু কী আশ্চর্য। পঞ্চম বলে নবী রানই নিতে পারেননি। ষষ্ঠ বলে গিয়ে যখন জিততে ৫ রান দরকার, মিড উইকেটে ক্যাচ আউট হয়ে যান নবী। মাহমুদুল্লাহও দুই হাত মেলে দিয়ে দৌড় দেন। ঠিক যেমনটি রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচে আনন্দ উদযাপন করেছিলেন। এবারও জয় নিশ্চিত হতেই পাখির মতো দুইহাত মেলে দিয়ে আনন্দ উদযাপন করলেন। তার বোলিং ম্যাজিকেই যে জিতেছে খুলনা। এমন ম্যাজিক বারবার কিভাবে হচ্ছে? মাহমুদুল্লাহ ম্যাচ শেষে জানান, ‘জানি না। হয়ে গেছে। এর বাইরে সত্যিই কিছু জানি না। খুব নার্ভাস লাগছিল। আমার এখনও হাত ঘামছে। আমি শুধু চেষ্টা করেছি নবীকে যতটা কম স্ট্রাইক দেয়া যায়। চতুরঙ্গার উইকেটটা ওই সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ৬ বলে ৬ রান, দুইজন সেট ব্যাটসম্যান। উইকেট খুবই ভাল ছিল। প্রথম বলে যখন এক হয় তখন আস্তে আস্তে বিশ্বাসটা বাড়তে থাকে। উইকেটটা পাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসটা আরও ভাল হয়। আমি শুধু ভাল জায়গায় বোলিং করার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে কিছুই না। কারণ, আমি চিন্তা করেছিলাম ম্যাচটা হেরে গেছি। জাস্ট এতোটুকুই।’ কিন্তু ম্যাচটা হারেনি মাহমুদুল্লাহর খুলনা। উল্টো তার ম্যাজিকেই জিতে গেছে। প্রথম দুই ওভার করে ২৩ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি মাহমুদুল্লাহ। তৃতীয় ওভার করতে এসে ১ রান দিয়েই ৩ উইকেট নিয়ে নায়ক বনে গেলেন।
×