ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৯ নবেম্বরের মধ্যে এক শ’ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে

সিটিসেল অবিলম্বে খুলে দিতে বিটিআরসিকে আপীল বিভাগের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৪ নভেম্বর ২০১৬

সিটিসেল অবিলম্বে খুলে দিতে বিটিআরসিকে আপীল বিভাগের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯ নবেম্বরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করার শর্তে বেসরকারী মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের বন্ধ তরঙ্গ খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। একই সঙ্গে সিটিসেলের স্থগিত তরঙ্গ বরাদ্দ অবিলম্বে পুনঃবহালের জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছে। সিটিসেল নির্ধারিত তারিখের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে বিটিআরসি আবারও তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রায় ২ হাজার ৩৫০ বিঘা কৃষিজমি, জলাভূমি ও নিচু জমিতে মাটি ভরাট করে ভূমি উন্নয়নে যাওয়া সোনারগাঁও রিসোর্ট সিটির কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি স্থগিত করেছে আপীল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট আপীল বিভাগ এ আদেশ প্রদান করেছে। অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে প্রার্থী করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও আদালতের বিচারক নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়েছে। টাকা পরিশোধ করার শর্তে বেসরকারী মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের বন্ধ তরঙ্গ খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। বরাদ্দ তরঙ্গ খুলে দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে সিটিসেলের আপীল আবেদনের শুনানি শেষে প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বে আপীল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদালতের এই আদেশের পর সিটিসেলের সংযোগ ফিরিয়ে দিতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার। তিনি বলেন, ‘আদেশের অনুলিপির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আদেশের পরই আমি বিটিআরসির উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ফোনে বলে দিয়েছি। বিটিআরসির যা সামর্থ্য আছে, তা নিয়ে সংযোগ ফিরিয়ে দিতে তারা কাজ শুরু করেছেন। আদালতে সিটিসেলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন এ এম আমিনুদ্দিন ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই রাব্বি। পরে সিটিসেলের আইনজীবী ব্যরিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, সিটিসেল যাতে আজই তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারে সে জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি ইতোমধ্যে যে তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল করেছে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে সিটিসেল সচলে আইনগত কোন বাধা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘বিটিআরসি আগের দাবি থেকে ৩৯৭ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এটা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট- কারণ দর্শানোর দাবিতে টাকার পরিমাণ ভুল ছিল। এটা আদালতও রেকর্ড করেছে।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের হিসাবে তারা ২১৬ কোটি টাকা পায়। এ পর্যন্ত দিয়েছি ১৪৪ কোটি টাকা। এখন আবার ১০০ কোটি টাকা দিলে আমাদের স্বীকৃত দায়ের চেয়ে বেশি টাকা চলে যাবে। আমরা সেটা দিচ্ছি। কিন্তু যদি নিষ্পত্তির পর আমরা পাওনা থাকি- সেটা পরে সমন্বয় করা হবে।’ এই আইনজীবী জানান, সিটিসেলের দেয়া ১৪৪ কোটির মধ্যে কর বাবদ ১৪ কোটি টাকা গেছে রাজস্ব খাতে। আর ১৩০ কোটি টাকা বিটিআরসির পকেটে গেছে। অনুমতি স্থগিত ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রায় ২ হাজার ৩৫০ বিঘা কৃষিজমি, জলাভূমি ও নিচু জমিতে মাটি ভরাট করে ভূমি উন্নয়নে যাওয়া সোনারগাঁও রিসোর্ট সিটির কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি স্থগিত করেছে আপীল বিভাগ। প্রধানবিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে ২০১৪ সালের ২ মে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ রুল দিয়ে সোনারগাঁও উপজেলায় এই রিসোর্ট সিটি নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আদালতে বেলার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন এএম আমিন উদ্দিন, মিনহাজুল হক চৌধুরী। সোনারগাঁ রিসোর্ট সিটির মূল প্রতিষ্ঠান ইউনিক প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে ছিলেন কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ইউপি নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ॥ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে প্রার্থী করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে সংগঠনের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এই রিট আবেদন করেন। মনজিল মোরসেদ বলেন, রিটে স্থানীয় সরকার (ইউপি নির্বাচন) সংশোধন আইন (২০১৫) এর ২৬ ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সংবিধানের দুটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিট ॥ আদালতের বিচারক নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। রিটে সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিষয়েও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইকোর্র্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন এ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, সংসদ সচিবালয় সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
×