ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষায় সম্পৃক্তরা আগ্রহ হারাচ্ছেন

পিএসসির আর্থিক ক্ষমতা নেই ॥ বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নও হয় না

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৬

পিএসসির আর্থিক ক্ষমতা নেই ॥ বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নও হয় না

বিভাষ বাড়ৈ ॥ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক ক্ষমতা নেই বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি)। ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আয় করলেও কাজের মানোন্নয়নে খরচ করার স্বাধীনতা নেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটির। নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে কোথায়, কাকে, কত সম্মানী দিতে হবে সেই স্বাধীনতা না থাকায় চাইলেও বিসিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার কাজে সম্পৃক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিশেষজ্ঞদের গ্রহণযোগ্য সম্মানী দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রীতিমতো নগণ্য সম্মানী দেয়ায় বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা মূল্যায়নের মতো কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে কাজের মান রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মানসম্মত কাজের স্বার্থে পিএসসির আর্থিক ক্ষমতা ও পরীক্ষার কাজের সম্মানী বৃদ্ধির সুপারিশ করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা। এদিকে একদিকে আর্থিক ক্ষমতা সীমিত হওয়া অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ সম্মানী স্বল্পতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিয়োগ পরীক্ষাসমূহ পরিচালনা সংক্রান্ত অর্থ ব্যয়ে সরকারের কাছে ক্ষমতা চেয়েছে কমিশন। আর্থিক স্বাধীনতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদকে চিঠি দিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে গত ছয় মাসে বিসিএসসহ নন-ক্যাডার পরীক্ষার কাজে ব্যাপক গতি সঞ্চার করা পিএসসির চেয়ারম্যান অন্তত অর্থ বণ্টনে ক্ষমতা দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, পরীক্ষার কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য জাতীয় স্বার্থে নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনার সম্মানী নির্ধারণে কমিশনকে দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধ করেছি আমরা। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও অর্থ ব্যয় এমনকি অর্থ বণ্টরের ক্ষমতাও পিএসসির না থাকায় হতাশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি পিএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব পালনকারী বিশেষজ্ঞদের ফি কিছুটা বাড়ালেও তা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার কাছে রীতিমতো নগণ্য। বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় এ স্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় সবচেয়ে কম ফি বা সম্মানী দেয়া হচ্ছে। নগণ্য অর্থ দিয়ে বিসিএসের মতো পরীক্ষার মান রক্ষা করা কঠিন। পিএসসিকে অন্তত বাজেটের অর্থ ব্যয়ে ক্ষমতা প্রদান ও বিশেষজ্ঞ সম্মানী বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানসম্মত কাজের জন্য অবশ্যই সেভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। নগণ্য অর্থ দিলে ভাল শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা সে কাজে আগ্রহী হবেন না। তাতে কাজের মানও খারাপ হতে বাধ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বিসিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের ‘সামান্য’ সম্মানী দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, পিএসসিতে একটি পরীক্ষা নিতে গেলে যে সম্মানী দেয়া হয় তা বলার মতো নয়। অনেকেই এটা নিয়ে হতাশার কথা বলেন। তিনি বলেন, ভাল কাজের জন্য সম্মানী একমাত্র কথা নয়, তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ভাল মানের কাজ পেতে হলে অন্তত একটা সম্মানজনক অর্থ দেয়া জরুরী। তাতে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে, কাজও হয় মানসম্মত। উপ-উপাচার্য বলেন, সম্প্রতি পিএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব পালনকারী বিশেষজ্ঞদের সম্মানী কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে তার পরেও সেটা রীতিমতো নগণ্য। বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় এ স্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় এর চেয়ে অনেক বেশি সম্মানী দেয়া হচ্ছে। নগণ্য অর্থ দিয়ে বিসিএসের মতো পরীক্ষার মান রক্ষা করা কঠিন। এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, একেবারে পিএসসির আর্থিক ক্ষমতা নেই তা কিন্তু নয়। হ্যা হয়তো কিছু টাকা বাড়াতে চাইলে তাকে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। তবে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিএসসির অবশ্যই আর্থিক ক্ষমতা থাকাটা প্রয়োজন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা, এমনকি শিক্ষা বোর্ডগুলোর পাবলিক পরীক্ষার অর্থেক সম্মানীও পান না পিএসসির নিয়োগ পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা। নগণ্য অর্থ হওয়ায় ভাল শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা বিসিএসের ও নন-ক্যাডার পরীক্ষার কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবীর। শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত এ শিক্ষাবিদ বলছিলেন, টাকাই মূল কথা নয়। এটা সত্যি, কিন্তু এটাও ঠিক যে সম্মানজনক মূল্যায়ন না হলে সেখানে ভাল ফলও পাওয়া যায় না। নগণ্য অর্থ দিয়ে মান রক্ষা করাও কঠিন। পরীক্ষার কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য সম্মানী নির্ধারণে কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া দরকার। যাতে তারা প্রয়োজন অনুসারে ফি নির্ধারণ করে ভাল শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের কাজে যুক্ত করতে পারে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও অর্থ ব্যয় এমনকি অর্থ বণ্টরের ক্ষমতা না থাকা পিএসসির জন্য একটি দুর্বলতা। এটা সরকারের দেখা দরকার। এক প্রশ্নের জবাবে এ শিক্ষাবিদ বলেন, পরীক্ষার সম্মানী অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার কাছে রীতিমতো নগণ্য। বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় আমাদের এ স্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় কম সম্মানী দেয়া হচ্ছে। নগণ্য অর্থ দিয়ে বিসিএসের মতো পরীক্ষার মান রক্ষা করা কঠিন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এ স্তরের পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারীদের সম্মানী কম। কেবল বিদেশ নয়, বাংলাদেশেও যে কোন নিয়োগ ও পাবলিক পরীক্ষার তুলনায় সরকারের সর্বোচ্চ নিয়োগ পরীক্ষা বিসিএসের সম্মানী কম। বেসরকারী তো বটেই, যে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষার তুলনায় পিএসসির দেয়া সম্মানী অনেকটা নগণ্য। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়োগ পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করা শিক্ষকদের সম্মানী দিচ্ছেন প্রতিদিন ২ দুই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। যে কোন পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করলে শিক্ষা বোর্ডগুলোর নির্ধারিত ফি এক হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। এখানেই শেষ নয়, যারা পরীক্ষা কাজে যুক্ত তারাসহ অন্যান্যদের কাজে গতি আনতে শিক্ষা বোর্ডগুলো ও জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বছরে অতিরিক্ত ৯টি বোনাসও দিচ্ছে। বিপরীতে পিএসসির চিত্রে হতাশাজনক বলে বলছেন এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলেই। বিসিএস পরীক্ষায় একদিন দায়িত্ব পালন করলে একজন শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞকে পিএসসি দিতে পারছে মাত্র ৫০০ টাকা। একই অবস্থায় পরীক্ষার অন্য সকল কাজেরও। পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আইম নেছার উদ্দিন বলছিলেন, পিএসসির পরীক্ষার খাতা যে সম্মানিত পরীক্ষকরা দেখেন তারা খাতা বাড়িতে নিয়ে যান এবং সেখানে তাদের নির্দিষ্ট সময় দেয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় একজন পরীক্ষকও যদি খাতা সময়মতো না দেন তাহলে পুরো পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করতে বিলম্ব হয়। আমরা যদি সম্মানী বাড়াতে পারতাম তাহলে তারাই হয়ত এসে পিএসসিতে খাতা দেখতেন। তাহলে এটি আরও ত্বরান্বিত হতো। তিনি বলেন, আমাদের নির্ধারিত সম্মানী খুবই কম। একটা বিশ্ববিদ্যালয় তার পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করলে যেখানে দিচ্ছে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। সেখানে আমাদের ফি মাত্র ৫০০ টাকা। অথচ আমরা চাইলেই সম্মানী বাড়িয়ে দিতে পারি না। জানা গেছে, কোন খাতে কত, কাকে কত সম্মানী দেয়া হচ্ছে তাও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি ছাড়া অর্থ ছাড় পায় না সংস্থাটি। কমিশনের জন্য যে নির্ধারিত বাজেট রয়েছে তাও ব্যয়ের স্বাধীনতা নেই। এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অগ্রিম অনুমতি নিতে হয়। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (ইউপিএসসি) যথেষ্ট আর্থিক স্বাধীনতা রয়েছে। এমনকি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন, ভাতা এবং মর্যাদা এখনও সংগতিপূর্ণ নয়। যদিও এই দুই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়কে সংবিধানে ‘চার্জড এক্সপেন্ডিচার’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। পিএসসি পরীক্ষার ফি হিসেবে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে যে অর্থ পেয়ে থাকে তার চেয়ে অনেক কম অর্থ পরীক্ষা পরিচালনায় ব্যয় করে থাকে। কমিশন পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে ফি বাবদ অর্থ আদায় করে তা সরকারী কোষাগারে জমা হয়। কিন্তু পিএসসি কর্তৃপক্ষের ওই অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতা নেই। সরকারের দেয়া বৎসরিক বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের দ্বারা কমিশন পরীক্ষা পরিচালনাসহ তার অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে পিএসসির আয় ৪৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। অথচ ওই বছরে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য ব্যয় হয়েছে মাত্র ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় ২১ কোটি ১৬ লাখ, ব্যয় ৮ কোটি ৩৪ লাখ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে আয় ১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ব্যয় ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে আয় ১০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা অথচ ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ঠিক এমন এক বাস্তবতায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিয়োগ পরীক্ষাসমূহ পরিচালনা সংক্রান্ত অর্থ ব্যয়ে সরকারের কাছে ক্ষমতা চেয়েছে কমিশন। আর্থিক স্বাধীনতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। পিএসসির এ চেয়ারম্যান বলেছেন, পরীক্ষার কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য জাতীয় স্বার্থে নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনার সম্মানী নির্ধারণে কমিশনকে দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধ করেছি আমরা। বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও আর্থিক স্বাধীনতা নেই। নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে কোথায়, কাকে, কত সম্মানী দিতে হবে সেই স্বাধীনতাটুকু পিএসসির নেই, যা নির্বাচন কমিশনের আছে। আর্থিক এই স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ মন্ত্রণালয়কে এ সহযোগিতার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছি। চিঠিতে পিএসসির চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিয়োগ পরীক্ষাসমূহ পরিচালনা সংক্রান্ত অর্থ ব্যয়ে কমিশনের স্বাধীনতা প্রয়োজন। কিন্তু কমিশনের বাজেটে কিছু ব্যয়ের খাতে (অর্থনৈতিক কোড) তারকা চিহ্নিত রয়েছে। ফলে এ ব্যয়সমূহ পুনঃউপযোজন তথা বরাদ্দকৃত অর্থ বিভাজন ও প্রয়োজনে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হয়। যাতে কমিশনের কার্যক্রম যথাসময় ও জরুরীভিত্তিতে সম্পাদনের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ ও জটিলতার উদ্ভব হয়। পিএসসির গৃহীত পরীক্ষাসমূহের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রশ্নকারক, মডারেটর, পরীক্ষক, নিরীক্ষক, পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সম্মানী বর্তমানে কমিশনের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত হয়ে থাকে উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেছেন, এ সকল ক্ষেত্রে সম্মানী নির্ধারণ ও অনুমোদন যদি কমিশন কর্তৃক সম্পাদন করা যায় তবে এ সকল পরীক্ষা যথাসময়ে এবং দ্রুততার সঙ্গে সম্পাদন করা সম্ভব। এতে কমিশনের কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আসবে। চিঠিতে তিনি আরও বলেন, বিসিএস পরীক্ষাসহ অন্যান্য নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যয় হওয়া সময় কমিয়ে আনায় সরকারের ও কমিশনের অগ্রাধিকার রয়েছে। পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত ব্যয়, যেমন-পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যয়, প্রশ্নকারক, মডারেটর, পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও ভাইভা বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্যগণের সম্মানী সময়োপযোগী করার মাধ্যমে এ সময়সীমা কমানো সম্ভব। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অনেক কমিশন থাকলেও দুটি মাত্র কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান-বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন। এ সব প্রতিষ্ঠানের ব্যয়কে সংবিধানে ‘চার্জড এক্সপেন্ডিচার’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। অন্য কোন কমিশনের জন্য তা প্রয়োজ্য নয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ নির্বাচনকমিশন ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের বাজেটে উল্লেখিত তারকা সম্বলিত অর্থনৈতিক কোডের অর্থ পুনঃ উপযোজন করার লক্ষ্যে এবং জরুরী কার্যক্রম সম্পাদনের স্বার্থে বরাদ্দকৃত বাজেটে তারকা চিহ্নিত অর্থনৈতিক কোডের তারকা চিহ্ন অবলোপন এবং পরীক্ষার কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য জাতীয় স্বার্থে নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনার সম্মানী নির্ধারণে কমিশনকে দায়িত্ব প্রদানের অনুরোধ করছি।
×