ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অভিষেকেই সেরা হওয়ার অপেক্ষায় মিরাজ!

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২২ অক্টোবর ২০১৬

অভিষেকেই সেরা হওয়ার অপেক্ষায় মিরাজ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর চারটি উইকেট নিতে পারলেই হলো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিতে পারলেই অভিষেক টেস্টেই বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করা বোলার হয়ে যাবেন ডানহাতি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সেরা অভিষেক হবে মিরাজের। সেই অপেক্ষাতেই আছেন এ স্পিনার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনেই ৫ উইকেট নিয়ে ফেলেন স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের কোন বোলারই অভিষেক টেস্টে প্রতিপক্ষের প্রথমদিনে ৫ উইকেট শিকার করতে পারেননি। মিরাজ তা করে দেখালেন। মনে করা হচ্ছিল, প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের যে তিন উইকেট বাকি আছে, দ্বিতীয় দিনে আরও ২টি উইকেট নিতে পারবেন। তাতে ৭ উইকেট নিয়ে, অভিষেক ইনিংসেই বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করতেন তিনি। কিন্তু পারলেন না। দ্বিতীয় দিন ইংল্যান্ডের বাকি থাকা তিন উইকেটের মধ্যে এক উইকেট শিকার করলেন। তাতে অবশ্য অভিষেক ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারিদের কাতারে নাম লেখালেন। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক ইনিংসে আরেক স্পিনার সোহাগ গাজীর (৬/৭৪) পরেই মিরাজের (৬/৮০) অবস্থান হলো। দ্বিতীয় ইনিংসে আর চারটি উইকেট নিতে পারলে অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে নৈপুণ্য দেখানো সব বোলারকেই পেছনে ফেলবেন মিরাজ। সোহাগ গাজী এদিক দিকে সবার আগে। তিনি ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন। যা কিনা এখন পর্যন্ত অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের সেরা বোলিং হয়ে আছে। অভিষেক ইনিংসে সোহাগকে পেছনে ফেলতে না পারলেও অভিষেক টেস্টে সবাইকে ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। আর তিন উইকেট নিলেও অভিষেক টেস্টে সবার ওপরে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য মিরাজকে ২১৯ রানের কম দিতে হবে। যা কিনা ৯ উইকেট নেয়ার ক্ষেত্রে সোহাগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ড আগেই ছিল। চারজন বোলার এর আগে অভিষেক ইনিংসেই ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। ডানহাতি স্পিনার সোহাগ গাজী (৬/৭৪), বামহাতি পেসার মনজুরুল ইসলাম (৬/৮১), বামহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি (৬/৯৪) ও সাবেক ডানহাতি স্পিনার নাঈমুর রহমান দুর্জয় (৬/১৩২) উইকেট করে নিয়েছিলেন। ৫ উইকেট নেয়ার রেকর্ডও ছিল। সেই তালিকায় ছিলেনÑ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৫/৫১) ও তাইজুল ইসলাম (৫/১৩৫)। বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে মিরাজও (৫/৫৯) পাঁচ উইকেট শিকার করেন। তবে আর দুটি উইকেট নিলেই অভিষেক ইনিংসে বাংলাদেশের সব বোলারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ধরা দিয়েছিল। কিন্তু আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম দুই উইকেট নিয়ে নেন। ইংল্যান্ডকে অবশ্য অলআউট করে দেন মিরাজই। প্রথম ইনিংসের প্রথম উইকেটটি নেন এ স্পিনার। স্টুয়ার্ট ব্রডকে আউট করতেই ইংল্যান্ডের ইনিংসও গুটিয়ে যায়। এখন মিরাজ আর চারটি উইকেট নিতে পারলেই বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে অভিষেক টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি বোলার হয়ে যাবেন। পারবেন মিরাজ তা করতে? উইকেটের যে অবস্থা, স্পিন স্বর্গ। তাতে পারতেও পারেন। মিরাজই বলেছিলেন, ‘আসলে অনেক ভাল লাগছে। এ ম্যাচটার কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। আমার অভিষেক ম্যাচ। সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে সফলতা পেয়ে গেছি। আমি আসলে এতটা ভাবিনি। তবে চেষ্টা করেছি যে টিমকে কিছু একটা পারফর্ম করে দেব। আমি কখনই চিন্তা করিনি যে পাঁচ/ছয় উইকেট পাব কিংবা ডোমিনেট করব। এ রকম চিন্তা করিনি। চিন্তা ছিল প্রথম ম্যাচে নিজেকে সেট করার জন্য। আস্তে আস্তে জায়গায় বল করে কিভাবে নিজেকে সেট করা যায় সেই চেষ্টাই করে গেছি। উইকেট সবগুলোই ভাল লাগছে।’ প্রথমদিন বেন ডাকেট, গ্যারি ব্যালান্স, জো রুট, মঈন আলী, জিন বেয়ারস্টোর উইকেট নিয়েছিলেন মিরাজ। দ্বিতীয় দিন ব্রডের উইকেট নিয়ে অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট শিকার করেন। এবার মিরাজের সামনে অভিষেক টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের পালা। সেই অপেক্ষাতেই আছেন মিরাজ।
×