ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট কেন্দ্রগুলোতে সংখ্যালঘুদের হয়রানি করা হতে পারে

ট্রাম্পের আহ্বানে ভীতির সঞ্চার

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২০ অক্টোবর ২০১৬

ট্রাম্পের আহ্বানে ভীতির সঞ্চার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে জয় ছিনিযে নেয়া হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটের দিন কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করতে দলে দলে বেরিয়ে আসতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাদের বলেন, ব্যাপক ভোটার প্রতারণা ও এক কারচুপিপূর্ণ ফলাফলের বিরুদ্ধে তাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এদিকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৬ সালের নির্বাচনে কারচুপিপূর্ণ বলে দাবি করায় ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ আনা বন্ধ করে নিজের প্রচার চালিয়ে যেতে রিপাবলিকানের প্রতি আহ্বান জানান। ওবামা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে সফররত ইতালির প্রধানমন্ত্রী সাডেও বেনজির সামনে মঙ্গলবার ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও এএফপির। কলোরাডো স্প্রিংসে মঙ্গলবার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, একেবারেই সাধারণ ঘটনা; আর এরপর এটা বলার জন্য তারা আমাদের সমালোচনা করেন। কিন্তু ফিলাডেলফিয়ার দিকে তাকান, সেখানে কী ঘটছে, শিকাগোর দিকে তাকান, সেন্ট লুইয়ের দিকে দৃষ্টি দিন। এসব শহরের কোন কোনটির দিকে তাকান, সেখানে আপনারা যা ঘটতে দেখছেন তা ভয়াবহ। ট্রাম্পের ভাষা ভোট কেন্দ্রের ভেতর সংখ্যালঘুদের ভীত প্রদর্শনের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। সেখানে তাদের ভোট দেয়ার যোগ্যতা চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে, অথবা বাইরে তারা বেআইনী নির্বাচনী তৎপরতার সম্মুখীন হতে পারেন। কারচুপির মাধ্যমে জয় ছিনিয়ে নেয়া হতে পারেÑ ট্রাম্পের এ বক্তব্যের প্রতি ওবামা বিদ্রƒপাত্মক তিরস্কার ছোড়েন। তিনি বলেন, ভোটগ্রহণের আগেই নির্বাচনের ফলাফলকে অবৈধ দেখানোর জন্য ট্রাম্পের প্রয়াস নজিরবিহীন। হোয়াইট হাউস ক্রমশ উদ্বিগ্ন যে, ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি দেবেন না এবং দেশকে এক রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দেবেন। পলিটিকো ও মর্নিং কনসান্টের এক জরিপে দেখা যায়, নির্বাচনকে আসলেই ট্রাম্পের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে রিপাবলিকানদের শতকরা ৭৩ ভাগসহ আমেরিকান ভোটারদের শতকরা ৪১ ভাগ এখন বিশ্বাস করেন। কলোরাডোতে প্রচার চালাতে গিয়ে ট্রাম্প ‘আমরা রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম মহান বিজয় অর্জন করতে যাচ্ছি’ বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। তিনি হিলারি ক্লিনটনের প্রচার শিবিরের এক সম্প্রসারিত অংশ হওয়ায় মার্কিন মিডিয়ার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্রই এক কারচুপিপূর্ণ ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে এবং ভোটারদের বিষিয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, হয় আমাদের এ নির্বাচনে জয়ী হতে হবেÑ নয়ত আমাদের দেশকে হারাতে হবে। ভোট কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করতে ট্রাম্পের আহ্বানে অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী আইন সম্পর্কে তার অজ্ঞতাই প্রকাশ পায়। আইন অনুযায়ী নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংশ্লিষ্ট কাউন্টিতে রেজিস্টার্ড হতে হবে। ট্রাম্পের ওয়েবসাইটে ভোট পর্যবেক্ষক হিসেবে সাইনআপ করার একটি ফর্ম থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোর স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, তারা সার্টিফাইড নির্বাচন পর্যবেক্ষক হতে চাচ্ছেন- এমন ট্রাম্প সমর্থকদের সংখ্যা বাড়তে দেখেননি। ওহাইও রিপাবলিকান পার্টির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাটি ইগান বলেন, চলতি বছর ট্রাম্প শিবিরের পক্ষে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা ২০১২ সালের পর্যবেক্ষকদের সংখ্যারই সমান। তিনি এ অঙ্গরাজ্যে দলীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ পরিচালনা করে থাকেন। গত সপ্তাহে পিটার্সবার্গের বাইরে শ্বেতাঙ্গপ্রধান এক সমাবেশে ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলেন, আমরা চাই না এ নির্বাচন আমাদের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হোক, তাই আপনাদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর দৃষ্টি রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের আহ্বানে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে সাইনআপটি করতে খুব কমই সাড়া দিলেও ট্রাম্প সমর্থকরা নির্বাচনের দিন ডেমোক্র্যাটিক ঘাঁটিগুলোর ভোটকেন্দ্রগুলোতে দলে দলে সমবেত হবেন কিনা- সেটিই বড় প্রশ্ন। ফিলাডেলফিয়া ভোটিং বোর্ডের ডেমোক্র্যাটিক সদস্য লিসা এম ডিলি বলেন, ট্রাম্প সমর্থকরা ভোটারদের ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করতে ভোট কেন্দ্রগুলোতে সমবেত হবেন বলে তার আশঙ্কা।
×