ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ওষুধ খাতে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

ওষুধ খাতে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। আর সে কারণে লেনদেন বেড়েছে তালিকাভুক্ত সব খাতের। তবে শতাংশের হিসাবে বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ব্যাংকিং এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত। গত দুই মাস লেনদেনে এ খাতের আধিপত্য দেখা যাচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভাল। সেই সঙ্গে ওষুধ শিল্পের ভবিষ্যত ভাল থাকায় খাতটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত আগস্টে ডিএসইর মোট লেনদেনে ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবদান ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। এ সময় ডিএসইতে এ খাতটির মোট শেয়ার লেনদেন হয় ২০ কোটি তিন লাখ ৩৫ হাজার ১৫০টি। এর বাজারমূল্য ছিল এক হাজার ৪০৩ কোটি ৩১ লাখ ২৯ হাজার ৭০৬ টাকা। পরের মাসে (সেপ্টেম্বর) এ খাতের শেয়ার লেনদেন কিছুটা কম হলেও মাস শেষে এ খাতটির অবস্থান হয় তৃতীয়। সেপ্টেম্বরে মোট শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪২টি। আর এ শেয়ারগুলোর বাজারমূল্য ছিল এক হাজার ১১১ কোটি ৫১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫ টাকা। সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের ভবিষ্যত সম্ভাবনাময়। এছাড়া খাতটির প্রবৃদ্ধি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সে কারণে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরাও এ খাতের কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। বর্তমানে ১৬০টি দেশে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনেক ওষুধ কোম্পানি উন্নত দেশগুলোর সনদ লাভ করেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিগত চার দশকে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বের অনুন্নত ৪৮ দেশের মধ্যে ওষুধ উৎপাদনে শীর্ষে বাংলাদেশ। দেশের ২৫৭টি কোম্পানি ২৪ হাজার ব্র্যান্ডের ওষুধ তৈরি করে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এ ওষুধ বিদেশে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এক সময় ৮০ শতাংশ ওষুধ আমদানি করতে হতো, সেখানে এখন আমদানি হয় মাত্র ৩ শতাংশ। এছাড়া এক সময় বিদেশী কোম্পানিগুলো এ দেশের ওষুধের বাজার ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করত। সেখানে এখন নিয়ন্ত্রণ করে মাত্র ৭ শতাংশ। পাঁচ বছর আগেও যেখানে ওষুধ রফতানি করে অর্থবছরে আয় হতো ৩০০ কোটি টাকা, এ বছর প্রথম ছয় মাসেই ওষুধ রফতানি করে সমপরিমাণ অর্থ এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দীনের মতে, সরকারী নীতি সহায়তা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়লে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেই বছরে হাজার কোটি টাকার ওষুধ রফতানি করা সম্ভব। বর্তমানে পুঁজিবাজারে এ খাতে ২৮টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি প্রতিষ্ঠানই অবস্থান করছে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে। একটি মাত্র কোম্পানি ‘বিকন ফার্মা’ লভ্যাংশ না দেয়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। এছাড়া অন্য খাতের তুলনায় এ খাতের লভ্যাংশ দেয়ার হারও বেশি। জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক পরিচালক ও মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা নূর-ই-নাহরিন বলেন, আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে সচেতন। তারা এখন অন্যের কথায় শেয়ার কেনাবেচার হার কমিয়ে দিয়েছেন। এর প্রতিফলন পড়েছে ভাল কোম্পানির শেয়ারে। তিনি বলেন, ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভাল। সম্ভবত সে কারণেই এ খাতটির প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।
×