ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ড. আহসানুল হক আর নেই

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৩ অক্টোবর ২০১৬

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ড. আহসানুল হক আর  নেই

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মোঃ আহসানুল হক আর নেই। রবিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তার ভাগ্নি একই বিভাগের অধ্যাপক নেভিন ফরিদা জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। আছরের নামাজের পর জানাযা শেষে আহসানুল হককে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে বলেও তিনি জানান। নিবেদিত এই শিক্ষকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অধ্যাপক ড. মোঃ আহসানুল হক ছিলেন একজন সৎ, নিষ্ঠাবান কৃতী শিক্ষক ও গবেষক। এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, প্রগতিশীল আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ১৯৬০ সালে। পদোন্নতি পেয়ে ১৯৬৩ সালে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক, ১৯৬৬ সালে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৭২ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল থেকে কবি টি এস এলিয়টের সাহিত্যের ওপর অভিসন্দর্ভ লিখে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন আহসানুল হক। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন স্বীকৃত সাময়িকীতে তার ৪০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৪ সলের ৩০ জুন অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেয়ার আগে ইংরেজী বিভাগে তিনি ৩৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, হলের প্রাধ্যক্ষ ও কলা অনুষদের ডিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। এজন্য পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তার ওপর নির্যাতনও চালিয়েছিল। আহসানুল হকের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৯ জুলাই পাবনা জেলার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ) শাহজাদপুরে। তিনি ১৯৫৫ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাস করেন। পরের বছর একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিয়ে প্রথমে নোয়াখালীর চৌমুহনী কলেজ এবং পরে জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
×