ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিঠি দিয়েই বেড়েছে কয়েক কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০২:৩৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চিঠি দিয়েই বেড়েছে কয়েক কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুধু চিঠির মাধ্যমে তাগাদা দেওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণে গঠিত শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলের অর্থ ৪৫ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৭২ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংগঠনের নতুন সদস্যদের বরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি একথা জানান। জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া চুন্নু জানান, দায়িত্ব পেয়ে মনে হলো সব থেকে অবহেলিত মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়েল এসে দেখলাম দেশের মানুষের জন্য, কর্মজীবী মানুষের জন্য কাজ করতে হলে সব থেকে ভালো মন্ত্রণালয় হলো শ্রম মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী। ‘এসে দেখলাম শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে মাত্র ৪৫ লাখ টাকা। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাগাদা দিয়ে চিঠি দেওয়া শুরু করি।’ রসিকতার ছলে চুন্নু বলেন, ছোটবেলায় বঙ্কিম চন্দ্র, রবীন্দ্রনাথের চিঠি নকল করে লিখতাম। চিঠি দিয়ে শুধু প্রেমই হয় না, অনেক কাজও হয়। ‘চিঠির কারণে গত পৌনে দুই বছরে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ১৭২ কোটি টাকা জমা হয়েছে। আমার অফিসারদের বলেছি চিঠি দেন, দু’বার-তিনবার করে চিঠি দিয়েছি। বলেছি, লভ্যাংশের অর্থ জমা না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন সবাই লভ্যাংশ দিচ্ছে। অল্প দিনেই এ তহবিল জমার পরিমাণ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে।’ শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানের এক বছরের নিট লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশের মধ্যে চার শতাংশ অর্থ নিজ কোম্পানির শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ থাকে। বাকি এক শতাংশের অর্ধেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে এবং বাকী অর্ধেক শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে জমা দিতে হয়। তহবিলের অর্থ শ্রমিক এবং তাদের সন্তানদের বৃত্তির জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। সংবাদপত্রসহ গণমাধ্যমের মালিকদের আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা লাভ করেন লভ্যাংশের অংশ দিয়ে দেন, এটা আইনে আছে। লভ্যাংশের অর্থ দেওয়ার জন্য মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিঠি দেওয়া হবে কিনা-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাইকেই চিঠি দেব। ওয়েজ বোর্ডের নিয়ম-কানুন মালিকরা যেমন পালন করেন, ঠিক তেমনি বাকীগুলোও পালন করা উচিত। শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, শতভাগ রফতানিমুখী শিল্প বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের রফতানি মূল্যের ০.০৩ শতাংশ সরাসরি শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্রীয় তহবিলে গত ১ জুলাই থেকে জমা শুরু হয়েছে। নভেম্বর থেকে এ তহবিলের মাধ্যমে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সহায়তা প্রদান শুরু করা যাবে। তিনি বলেন, কোনো গার্মেন্টস শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে এ তহবিল থেকে মৃত্যুজনিত কারণে সর্বোচ্চ তিন লাখ এবং বিমা বাবদ দুই লাখ টাকা অর্থ সহায়তা পাবেন। ডিআরইউ সভাপতি সভাপতি জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় সাংগাঠনিক সম্পাদক শেখ মুহম্মদ জামাল হোসাইন, নতুন সদস্য বণিক বার্তার নাজমুল হক তপন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ফারজানা শোভা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র নতুন সদস্য ছাড়াও কর্যনির্বাহী কমিটি ও অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
×