ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সহকর্মীদের অভিযোগ

আকতার জাহানকে বিভাগীয় সভায় গালিগালাজ করতেন সাবেক স্বামী তানভীর

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আকতার জাহানকে  বিভাগীয় সভায় গালিগালাজ  করতেন সাবেক  স্বামী তানভীর

রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহানকে এ্যাকাডেমিক সভায় প্রায়শই গালিগালাজ ও হয়রানি করতেন একই বিভাগের শিক্ষক ও তার সাবেক স্বামী তানভীর আহমদ। বিভাগের অন্যান্য নারী সহকর্মীকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন তিনি। লিখিতভাবে বিভাগের সভাপতির কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন আকতার জাহান ও তানভীর আহমদের সহকর্মীরা। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে লিখিতভাবে এই অভিযোগ দেন বিভাগের ১৬ শিক্ষক। জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগের দুই শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন ও তানভীর আহমদের বর্তমান স্ত্রী সোমা দেব ছাড়া বাকি ১৬ শিক্ষকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র বিভাগের সভাপতি প্রদীপ কুমার পা-ের কাছে জমা দেয়া হয়। এ সময় বিভাগের সভাপতিও তাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। লিখিত অভিযোগে বিভাগের শিক্ষকরা বলেন, আমাদের বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহানের সম্প্রতি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা পরিসরের আলোচনায় প্রয়াত শিক্ষক আকতার জাহানকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে তার সাবেক স্বামী ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে। তিনি বিভাগের এ্যাকাডেমিক কমিটিতেও আকতার জাহানকে নানা সময় অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও হয়রানির চেষ্টা করেছেন। ঘটনাগুলোর আমরা প্রত্যক্ষ সাক্ষী। এসব ক্ষেত্রে আমরা বাধা দিয়েছি এবং নিবৃত্ত করার চেষ্টাও করেছি। ওই বৈঠকে এক নারী সহকর্মী বলেন, তানভীর আহমদ তার সভাপতিত্বের সময়ে ওই নারী সহকর্মীসহ বিভাগের আরেক নারী সহকর্মীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেন। বিষয়টি সে সময় ওই সহকর্মী বিভাগ ও বিভাগের বাইরের কয়েক জ্যেষ্ঠ শিক্ষককেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তানভীর আহমদ বিভাগের সভাপতি থাকায় পেশাগত নানা হয়রানির ভয়ে বিষয়টি তিনি লিখিত আকারে অভিযোগ করেননি। বিভাগের কয়েক শিক্ষক বলেন, বিষয়গুলোসহ আকতার জাহানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিভাগের এ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় আমরা তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করি। এ ধরনের নৈতিকতাহীন একজন সহকর্মীর সঙ্গে বিভাগে আমাদের পক্ষে পেশাগত কার্যক্রম চালানো অসম্ভব বলে মনে করি। এ সময় অধ্যাপক তানভীর আহমদ বিভাগীয় ও এ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। এ্যাকাডেমিক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে নিজের কক্ষ থেকে অধ্যাপক আকতার জাহানের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই কক্ষ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন আকতার জাহানের ভাই কামরুল হাসান বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার এফআইআরে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সুইসাইড নোট থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, আকতার জাহান প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
×