ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

’৭১-এ পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে জিয়ার বিচার দাবি ড. হাছানের

প্রকাশিত: ০৮:১১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

’৭১-এ পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে জিয়ার বিচার দাবি ড. হাছানের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক সরিয়ে নেয়ায় বিক্ষোভ না করে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার ভূমিকার জন্য বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। একই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানসহ তার সহযোগীদের বিচার করারও দাবি জানান তিনি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর সমপর্যায়ে দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি এই স্বাধীনতা পদক দিয়েছিল, যা একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছেলে তারেক রহমানের দেখা হওয়ায় দেশে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান যখনই একত্র হন, তখনই দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হয়। অতীতেও আমরা এমনটা দেখেছি। তাই দেশবাসীর সজাগ থাকতে হবে।’ হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল হতে পারে না। কারণ বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল হলে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোন জোট হতো না। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া শুরু থেকেই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি জনমতের কাছে পরাজিত হয়ে নীরবতার পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু জামায়াতকে জোটে যেমন রেখেছেন, তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজধানীতে বিএনপির দু’একটি ছোট মিছিল বের হলেও দেশের বাইরে কোথাও তাদের দেখা যাবে না। কারণ তারা জনবিচ্ছিন্ন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মীর কাশেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের বিরুদ্ধে আনীত নিন্দা প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, পাকিস্তান নিজের অখ-তা নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। কারণ সে দেশের বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। আর ওই দেশটিতে অন্য কোন ধর্মের লোক না থাকলেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগেই আছে। তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা না বলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মনোযোগ দিন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে ঢাকায় সেদেশের দূতাবাসে গিয়ে খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান আরও বলেন, দেশের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শন করে দেখা করলেন। এভাবে সাক্ষাতের আর কোন নজির কোথাও নেই। এই সাক্ষাতের সময় বিএনপি নেত্রী একটি মধ্যবতী নির্বাচনের দাবি জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সাম্যবাদী দলের সভাপতি হারুন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইস্কান্দার মির্জা শামীম, কৃষকলীগ নেতা এমএ করিম, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।
×