ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রিশা হত্যার আসামি ওবায়দুল ছয় দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রিশা হত্যার আসামি ওবায়দুল ছয় দিনের রিমান্ডে

কোর্ট রিপোর্টার ॥ স্কুলছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা (১৪) হত্যা মামলায় আটক ওবায়দুল হকের (২৯) ছয় দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার ইন্সপেক্টর মোঃ আলী হোসেন বৃহস্পতিবার আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসাইন শুনানি শেষে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিকালে আসামিপক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না। তবে বাদীপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর তাছলিমা ইয়াছমিন দিপা, মহিলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার রিংকি এবং রাজধানী মানবাধিকার সংস্থার যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ নাজমুল হুদা রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। রিমান্ড শুনানিকালে নিহত রিশার মা তানিয়া হোসেন এবং বাবা রমজান হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানির সময় তাদের কাঁদতে দেখা যায়। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ওবায়দুল হক প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন সময় রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রিশাকে উত্ত্যক্ত করত। রিশা ও তার সহপাঠী মুহতারিফ রহমান রাফি গত ২৪ আগস্ট বেলা সোয়া ১২টার দিকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে যাচ্ছিল। তারা স্কুলসংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজের উপরে পৌঁছলে আসামি ওবায়দুল রিশাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাম হাতে ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ২৮ আগস্ট রিশা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ঘটনার পর থেকে ওবায়দুল পলাতক ছিল। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর পর ৩১ আগস্ট নীলফামারীর ডোমার থানার সোনারায় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করলেও এখনও হত্যার আলামত ছুরি উদ্ধার হয়নি। এছাড়া ওবায়েদের সঙ্গে আর কারা এ ঘটনায় জড়িত তাও জানা দরকার। এ জন্য তাকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন। রিশার মা রাজধানীর রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় এবং দ-বিধির ৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগে একটি মামলা করেছিলেন। রিশা নিহত হওয়ার আগেই এ মামলা করায় মামলায় ৩০২ ধারা উল্লেখ করা হয়নি। তবে রিমান্ড আবেদনে ৩০২ ধারা সংযোজন করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন। রিশা রাজধানীর বংশাল থানাধীন সিদ্দিকবাজার এলাকার রমজান হোসেনের মেয়ে। ওবায়দুল দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মীরাটঙ্গী গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের ছেলে। ওবায়দুল রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলের বৈশাখী টেইলার্সের কর্মচারী। প্রায় ৬ মাস আগে বৈশাখী টেইলার্সে স্কুলের ড্রেস বানাতে রিশা মায়ের সঙ্গে গিয়েছিল। সেখানে দেয়া মোবাইল নম্বর পেয়ে রিশাকে উত্ত্যক্ত শুরু করে ওবায়দুল। রিশা নিহত হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল ওবায়দুল। বুধবার নীলফামারীর ডোমার থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
×