ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিনটি বিদ্যুত হাব হবে ঘোড়াশাল, গোয়ালপাড়া ও বাঘাবাড়ী ॥ ক্ষমতা থাকবে ৬৫৩৫ মে.ও.

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

তিনটি বিদ্যুত হাব হবে ঘোড়াশাল, গোয়ালপাড়া ও বাঘাবাড়ী ॥ ক্ষমতা থাকবে ৬৫৩৫ মে.ও.

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের তিন বড় বিদ্যুত অঞ্চলকে বিদ্যুত হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। চূড়ান্ত পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার বিদ্যুত বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বলা হয় তিনটি হাব থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক ছয় হাজার ৫৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। বৈঠকে নরসিংদীর ঘোড়াশাল, খুলনার গোয়ালপাড়া ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীকে হাবে পরিণত করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনটি হাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনটি জায়গাতেই বড় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। এসব জায়গার বিদ্যমান বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর অদক্ষতার কারণে জ্বালানি খরচও বেশি হচ্ছে। তিনি বলেন, পুরনো অদক্ষ কোম্পানি বন্ধ করার পাশাপাশি রিপাওয়ারিং (পুনঃক্ষমতায়ন) এবং নতুন বিদ্যুত কেন্দ্রও নির্মাণ করা হবে। এখানে প্রচুর জমি রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন করে জমি অধিগ্রহণেরও প্রয়োজন পড়বে না। দ্বৈত জ্বালানির কেন্দ্রগুলোর ক্ষেত্রে গ্যাসের সংস্থানসংক্রান্ত বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোতে যে গ্যাস ব্যবহƒত হচ্ছে তা দিয়েই অনেকখানি চাহিদা মিটবে। বাকিটা এলএনজির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। সরকারের এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, সরকার ৪০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে কাজ করছে। আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে ৫০ কোটি এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। ফলে জ্বালানি খুব বড় সমস্যা হবে না। ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যান্ড কনসালটেন্ট অব বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পাওয়ার সেলে তিনটি হাবের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। পরিকল্পনা অনুসারে ঘোড়াশালে তিন হাজার ৮৭০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত ইউনিট বসবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। গোয়ালপাড়ায় বসবে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত কেন্দ্র। এ জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে আট হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। বাঘাবাড়িতে ১০ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ৪৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র স্থাপন করার কথা বলা হচ্ছে। উপস্থাপনায় বলা হয়, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়বে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। এজন্য তিন ধাপে ৪৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। পিডিবি সূত্র জানায়, এই তিন বিদ্যুত অঞ্চলে দেড় হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে। তবে এখান থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত মেলে। এর মধ্যে ঘোড়াশালে রয়েছে এ হাজার ২৮ মেগাওয়াট, গোয়ালপাড়ায় ২২৫ মেগাওয়াট ও বাঘাবাড়িতে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র রয়েছে। এ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে গোয়ালপাড়ার দুটি কেন্দ্র এবং বাঘাবাড়ির একটি তেলচালিত। বাকি সব গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র। বৈঠকে ১০ বছরের মধ্যেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যান্ড কনসালটেন্ট অব বাংলাদেশের কর্মকর্তা অরুণ কুমার মহালদার বলেন, বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন হবে না। এতে সময়ও কম প্রয়োজন হবে।
×