ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দাদন ॥ কুয়াকাটায় দুই মৎস্যজীবীকে বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২৪ আগস্ট ২০১৬

দাদন ॥ কুয়াকাটায় দুই মৎস্যজীবীকে বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৩ আগস্ট ॥ দাদনের টাকা পরিশোধ না করায় দুই মৎস্যজীবী আবু তালেব (২৫) ও হেলালকে (২০) ধরে এনে রশিতে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুয়াকাটার খাজুরা এলাকা থেকে এ দুই সহোদরকে কুয়াকাটায় ‘মৃধা ফিশ’ আড়তে বেঁধে এ শারীরিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা এভাবে পড়ে থাকে। দুই সন্তানের এমন বিপদের খবর শুনে মা ময়না বেগম সন্ধ্যায় টাকা শোধের প্রতিশ্রুতি দেয়ায় মুক্তি মেলে তাদের। আড়তদার কুদ্দুস মৃধা এ নির্যাতন চালায় জেলেদের ওপর। এ সময় অন্য জেলেরা নির্বিকার অবস্থায় এ দৃশ্য অবলোকন করে। কিন্তু কেউ ছাড়িয়ে নিতে সাহস পায়নি। ব্যবসায়ীরা বিষয়টি সালিশে মিটমাট করার চেষ্টা করছেন। নির্যাতনের শিকার আবু তালেবের বড়ভাই মনির জানান, তার দুই ভাই মজনু, আবু তালেব ও অপর এক জেলে ইলিয়াসকে ২০১৩ সালে মৃধা ফিশ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দাদন দেন। পর্যায়ক্রমে তার দুই ভাইয়ের অংশের টাকা পরিশোধ করার পরে আরও আট হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। মঙ্গলবার ওই টাকা আদায় করতে গিয়ে কুদ্দুস মৃধাসহ তার লোকজন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ের উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কুদ্দুস মৃধা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আবু তালেব ও তার ভাই হেলালকে ধরে আড়তে নিয়ে আসেন। আড়তে নিয়ে মোটা রশি দিয়ে বেঁধে দিনভর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্যাতিত জেলেদের বড়ভাই মনির। এ নির্যাতনের নেতৃত্ব দেন দাদনদার কুদ্দুস মৃধা ও তার ভাগ্নে মালেক। আড়ত মালিক কুদ্দুস মৃধা মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার দাদনের টাকা পরিশোধ না করে অন্যত্র মাছ বিক্রি করছে তারা। আমি টাকা চাইতে গেলে আমার ওপর হামলা করে। পরে খবর পেয়ে মৎস্য শ্রমিকরা গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে এবং ওদের ধরে গদিতে আনা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই জেলের মা ময়না বেগম জানান, কুদ্দুস মৃধা ও তার লোকজন তার ছেলেদের ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন শেষে রাস্তায় ফেলে রাখে। তিনি গিয়ে টাকা পরিশোধ করার শর্তে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও যেতে পারছেন না। কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, নির্যাতনের ধরন দেখে মনে হয়েছে হিংস্র পশু আক্রমণ করেছে। দাদন ব্যবসায়ীদের এমন নির্যাতনের তিনি তীব্র নিন্দা জানান।
×