ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

একনেক বৈঠক

আখাউড়া-আগরতলা রেললাইনসহ ছয় প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৭ আগস্ট ২০১৬

আখাউড়া-আগরতলা রেললাইনসহ ছয় প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আখাউড়া-আগরতলা (বাংলাদেশ অংশ) ডুয়েলগেজ রেল লাইন নির্মাণ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৪ কিলোমিটারের বেশি এ রেলপথ নির্মিত হলে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়বে। তাছাড়া এটি হলে বিদ্যমান আগরতলা-কলকাতা রেলপথ ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকেই কলকাতা পর্যন্ত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করা যাবে। এ সংক্রান্ত একটি উন্নয়ন প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন নির্মাণসহ মোট ছয়টি নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক সাহায্য ৪২১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সময় পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল-ইসলাম এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলমসহ পরিকল্পনা কমিশনের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার মধ্যে নতুন রেলরুট হবে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকারের ৪২১ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে। বাকি ৫৭ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। ২০১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় সম্পাদিত যৌথ ইশতেহারের একটি অন্যতম কার্যক্রম। আঞ্চলিক বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাস্তবায়নে যাতে অতিরিক্ত সময় না লাগে সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এর মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক এবং উপ-আঞ্চলিক কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে একটি নতুন করিডর স্থাপিত হবে। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ অংশে ১০ দশমিক ১ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ মেইন লাইন এবং ৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লুপলাইন নির্মাণ করা হবে। আর আগরতলা অংশে হবে ৫ কিলোমিটার রেলপথ, যা নির্মাণ করবে ভারত। বাংলাদেশ অংশে এটি আখাউড়া-চট্টগ্রাম রেলপথের গঙ্গাসাগর স্টেশনে এসে মিলিত হবে। তারপর বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব পাশ দিয়ে সমান্তরালভাবে আখাউড়া জংশনে মিলিত হবে। অনুমোদিত অন্য পাঁচ প্রকল্প ॥ সভায় কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে একটি বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। প্রায় ১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে টেকনাফের কয়েকটি ইউনিয়ন বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। অনুমোদন পেয়েছে চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকা সীতাকু- এবং মিরসরাই এবং সন্দ্বীপ এলাকার পোল্ডার পুনর্বার্সন প্রকল্প। ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই তিনটি উপজেলা জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া সরকারী কর্মকমিশনের (পিএসসি) কমপ্লেক্সের তৃতীয় পর্যায়ের প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর আওতায় বর্তমান ভবনটির ৮ম তলা থেকে ১১তলা পর্যন্ত উর্ধমুখী সম্প্রসারণ করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।
×