ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা চাই

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১৫ আগস্ট ২০১৬

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা চাই

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনার জন্য ভারত পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানোর একদিন পর শনিবার ভারতের পক্ষ থেকে এই জবাব আসে। সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাস, মুম্বাই ও পাঠানকোট হামলার মতো ‘প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো’ নিয়েও আলোচনার দাবি জানায় ভারত। খবর এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনায় বসতে পাকিস্তান আহ্বান জানানোর একদিন পর শনিবার ভারত সন্ত্রাসবাদের পুরো ইস্যুটি নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানাল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমসাময়িক যেকোন ইস্যু নিয়ে সংলাপকে ভারত স্বাগত জানায়। বাহাদুর আলীর মতো সন্ত্রাসীদের সীমান্ত পার হয়ে আসার মতো ঘটনা দেখিয়ে দেয় যে, সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসীরা এখনও ভারতে আসছে, হাফিজ সাঈদ ও সৈয়দ সালাউদ্দিনের মতো লোকজন তাতে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। এছাড়া মুম্বাই হামলার বিচার এবং পাঠানকোট হামলার বিষয়ে তদন্তে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় ভারত।’ সীমান্ত পারের সন্ত্রাস বা পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে ভারত এর আগেও অনেকবার দাবি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদ এখন দুই দেশের জন্যই আলোচনার সাধারণ ইস্যু। যারা এর ইন্ধনদাতা ও সহযোগিতাকারী অতীতের মতো আমরা তাদের সঙ্গে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনায় বসতে পারি না। এটি প্রতিরোধের জন্য তাদের পক্ষ থেকে আগে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার নয়াদিল্লীতে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বৈঠক করার সময় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাবটি আসে। ওই বৈঠকে মোদি বলেন, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরও ভারতের অংশ এবং পাকিস্তান থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশই সেখানকার পরিস্থিতিকে সহিংস করে তুলেছে। পাকিস্তান অবশ্য সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। এ বছর জানুয়ারিতে ভারতের পাঠানকোন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পর থেকে দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বন্ধ রয়েছে। ইসলামাবাদ বলেছে, ওই ঘটনার জন্য পাকিস্তানই যে দায়ী ভারত সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। গত মাসের ৮ তারিখ হিজবুল মুজাহিদিন নেতা বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর কাশ্মীরে পাঁচ মাস ধরে চলা অশান্ত পরিস্থিতি হঠাৎ করেই খুব উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে সুষমা স্বরাজ মন্তব্য করেন যে, কাশ্মীরকে ভারত থেকে পৃথক করার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য কোন দিনই পূরণ হবে না। পুঞ্চ সেক্টরে পাকিস্তানী সেনাদের গুলি ॥ কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমানা নির্দেশকারী লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে ভারতীয় অবস্থান লক্ষ্য করে পাকিস্তানী সৈন্যরা বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রবিবার ভোরে জম্মুর পুঞ্চ জেলায় এই ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সৈন্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র পিটিআইকে একথা বলেছেন। এর আগে শনিবার পুঞ্চ জেলায় গ্রেনেড হামলায় ১১ জন আহত হয়। ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় দিবস সামনে রেখে লাইন অব কন্ট্রোলের দু’পাশে এখন উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। এদিকে পুঞ্চ জেলার ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দিল্লীতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা ছড়ান। তিনি বলেন, আমরা এবারের স্বাধীনতা দিবসকে কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য উৎসর্গ করলাম। রবিবার ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। এদিকে পুঞ্চ জেলায় যখন পাকিস্তানী সেনারা গুলি ছুছে, ওয়াগা সীমান্তে তখন পাকিস্তানী সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা পরস্পরের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছে।
×