ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমাদের সংখ্যালঘু বলবেন না, আমরা পাকিস্তানী’

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৩ আগস্ট ২০১৬

‘আমাদের সংখ্যালঘু বলবেন না, আমরা পাকিস্তানী’

পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের প্রায় সকল অমুসলিম সদস্য অভিযোগ উঠিয়েছেন যে, সংখ্যালঘুদের জন্য প্রতিবছর কেবল একটি দিবস পালন এ সম্প্রদায়ের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অনলাইনের। সংখ্যালঘু সদস্যরা বৃহস্পতিবার আইন পরিষদের নিম্নকক্ষে জাতীয় সংখ্যালঘু দিবস সম্পৃক্ত বিতর্কে তাদের সকল সমস্যা ও অনুভূতির কথা তুলে ধরেন। তাদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমাকে সংখ্যালঘু বলবেন না, আমি একজন পাকিস্তানী।’ দেশব্যাপী বৃহস্পতিবার পালিত হয়েছে জাতীয় সংখ্যালঘু দিবস। কিন্তু পার্লামেন্ট কক্ষের উভয় দিকের শূন্য আসনগুলো তাদের ভাবাবেগে শীতল পানি ঢেলে দিয়েছে। ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যদের প্রায় সবাই বিতর্কিত সাইবারক্রাইমস বিলের ওপর ভোটাভুটির সময় অধিবেশনে উপস্থিত থাকলেও সংখ্যালঘুদের ওপর বিতর্কের সময় উপস্থিত ছিলেন এক ডজনের কিছু বেশি সদস্য। সংখ্যালঘু সদস্যরা যে সকল সমস্যার কথা উল্লেখ করেন সেগুলো হচ্ছে, জোর করে ধর্মান্তরিতকরণ, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, ধর্মীয় স্থানে যাওয়ার স্বাধীনতা, আইন পরিষদে বর্তমানে তাদের প্রতিনিধি মনোনয়ন ব্যবস্থার পরিবর্তে নির্বাচনের অধিকার এবং সর্বোপরি অমুসলিমরা কেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না সে প্রশ্ন। তাদের বক্তব্যের পক্ষে প্রধান শর্ত ও যুক্তি হচ্ছে ১৯৪৭ এর ১১ আগস্ট কায়েদ-ই-আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর প্রতিশ্রুতি। তিনি ওইদিন প্রথম গণপরিষদে তার ভাষণে বলেছিলেন, এ পাকিস্তান রাষ্ট্রে আপনারা এখন মুক্ত, আপনারা অবাধে আপনাদের গির্জায় যাবেন, আপনারা মসিজদ বা যে কোন উপাসনালয়ে যাবেন অবাধে। আপনারা যে কোন ধর্ম, বর্ণ বা মতবাদে বিশ্বাসী হোন না কেন তাতে রাষ্ট্রের কিছু করার নেই। আমরা এই মৌলিক নীতির সঙ্গে যাত্রা শুরু করছি যে, আমরা সবাই একটি রাষ্ট্রের নাগরিক এবং আমরা সমঅধিকারভুক্ত নাগরিক। পিএমএল-এনয়ের তারেক ক্রিস্টোফার কায়সার সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে অভিযোগ তুলে বলেন, সংখ্যালঘুরা কায়েদ-ই-আযমের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পাকিস্তানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, এ গণতান্ত্রিক অধিকার মুসলিমদের মতো সংখ্যালঘুদের দিতে হবে। তিনি খ্রীস্টান বিয়ে ও বিচ্ছেদ অধ্যাদেশ পরিবর্তনের প্রস্তাব আনেন। কায়সারের দলীয় সহকর্মী খলিল জর্জ উল্লেখ করেন যে, গণপরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন অমুসলিম যোগেন্দ্র নাখ ম-ল। কিন্তু আমরা এখন স্পীকার, প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হতে পারি না। তিনি বলেন, সরকারকে কায়েদের ভাষণ কাগজ, কলম ও চেতনায় বাস্তবায়ন করা উচিত।
×