ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সকল নাগরিকের প্রেসিডেন্ট হতে চাই ॥ হিলারি

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৩০ জুলাই ২০১৬

সকল নাগরিকের প্রেসিডেন্ট হতে চাই ॥ হিলারি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে হিলারি ক্লিনটন আনুষ্ঠানিকভাবে তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিন ৬৮ বছর বয়সী হিলারি এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন। আগামী নবেম্বরের এই নির্বাচনে হিলারি জয়ী হলে তিনি হবেন দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসি ও এএফপির। মনোনয়নপত্র গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তৃতা দেন তিনি। এ সময় নিজেকে দেশের সকল নাগরিকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার গোছালো বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যত, অস্ত্র আইন নিয়ন্ত্রণ, নারী অধিকার, বৈষম্যমূলক বাণিজ্য চুক্তি বাতিল, কর্মসংস্থান, বেতন বৃদ্ধি, সমকামী অধিকার রক্ষা ও অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়াসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পায়। এ সময় রিপাবলিকার প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও তুলোধুনা করতে ছাড়েননি তিনি। এ সময় জনগণের স্বার্থে নিজেকে একজন ক্লান্তিহীন লড়াকু সৈনিক হিসেবে বর্ণনা করেন সাবেক এই ফার্স্ট লেডি। তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধকারাচ্ছন্ন ছবি এঁকেছেন। তিনি বলেন ট্রাম্প ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। ফিলাডেলফিয়ার ওয়েলস ফার্গো সেন্টারের অনুষ্ঠিত এই কনভেনশনের থিম ছিল ‘ঐক্যই শক্তি’ (স্ট্রংগার টুগেদার)। এই থিমকে স্মরণ করিয়ে হিলারি বলেন, জাতির স্বার্থে সাবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। এ সময় আগ্রামী নির্বাচনে ভোটারদের দেশের কথা মাথায় রেখে হিসাবে ভূল না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমার সারা জীবনের স্বপ্ন, আমি এমন একটি আমেরিকা গড়তে চাই যেখানে সবাই নিজের মেধা দিয়ে জাতিকে গড়ে তুলতে পারবে। আর আমি যুক্তরাষ্ট্রের সকল দল ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান ও ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রেসিডেন্ট হতে চাই। আমি হোয়াইট হাউসে আপনাদের কথা মনে রাখব। এক্ষেত্রে কারা তাকে ভোট দিল বা কারা না দিল সেটা কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। হিলারি আমেরিকা সম্পর্কে ট্রাম্পের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের মতে আমেরিকা দিন দিন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি অসুখী দেশে পরিণত হয়েছে। এর উত্তরে হিলারি বলেন, ‘তিনি সারাবিশ্ব এবং অন্যদের থেকে আমাদের আলাদা করতে চান।’ এছাড়া হিলারি বলেন, ‘আমি বার্নি স্যান্ডার্স এবং সারাদেশে তার সকল সমর্থককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি আপনাদের জানাতে চাই আমি আপনাদের কথা শুনেছি।’ স্যান্ডার্সের সমর্থকদের সঙ্গে মিটমাটের সম্পর্ক গড়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তিনি। হিলারি বলেন, ‘আমি বার্নি স্যান্ডার্স ও তার সকল সমর্থককে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি আপনাদের জানাতেই চাই যে আমি আপনাদের কথা শুনেছি।’ তিনি বলেন, আপনাদের ভাবনা আমারও ভাবনা।’ হিলারির প্রশংসা করে মঞ্চে বক্তব্য দেন তার স্বামী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও একমাত্র মেয়ে চেলসি ক্লিনটন। চেলসি বলেন, আমার মা একজন ‘চমৎকার, চিন্তাশীল ও উল্লসিত’ মানুষ। আমরা যখনই আমার মা কাজের জন্য বাইরে যেতেন কাগজে লিখে যেতেন তিনি বাইরে গেছেন। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৯৪ সালে যখন তার মা যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি ছিলেন তখন তিনি সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা আইন পাসের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। চেলসি বলেন, ‘আমি এটা খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম। এটা ছিল একটা আঘাত। এটা ছিল চরম বেদনাদায়ক। আমার মা মন থেকে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘আমার বয়স তখন ছিল ১৪। ওই ঘটনা দেখে সহ্য করা আমার জন্য ছিল অনেক কষ্টের। তবে আমার মা, তিনি ছিলেন বিস্ময়কর।’ চেলসি তার মাকে ‘তার হিরো’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
×