ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বদনাতলী ঘাটে মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ০৭:১০, ১৬ জুলাই ২০১৬

বদনাতলী ঘাটে মানুষের ঢল

নাম বুড়াগৌরাঙ্গ। সরকারী অনেক কাগজপত্রে নদীটির নাম কাজল। প্রবীণদের অনেকে বলেন কাজল নদী। নদটি প্রায় ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত। মাত্র কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। পশ্চিমপাড়ে রতনদী-তালতলী আর পূর্বপাড়ে চরকাজল-চরবিশ্বাস ইউনিয়ন। তীর ঘেঁষে উভয় পাড়ে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। রয়েছে বনাঞ্চল। বঙ্গোপসাগরের ঢেউ প্রতিনিয়ত আছড়ে পড়ে বুড়াগৌরাঙ্গের গায়ে। তাই বুড়াগৌরাঙ্গে মেলে সাগরের আমেজ। একদিকে বঙ্গোপসাগরের প্রতিচ্ছবি। আরেকদিকে সবুজের সমারোহ। এ দু’কারণে স্থানীয়দের কাছে বেড়ানোর জন্য বুড়াগৌরাঙ্গ এরই মধ্যে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ঈদের ছুটির দিনগুলোতে বুড়াগৌরাঙ্গের পশ্চিমপাড়ের রতনদী-তালতলী ইউনিয়নের বদনাতলী ঘাটসহ আশেপাশের এলাকায় নামে মানুষের ঢল। ধর্ম-বর্ণ, বয়স নির্বিশেষে মানুষ মেতে ওঠে নির্মল আনন্দে। প্রকৃতির মাঝে মানুষ খুঁজে নেয় বিনোদনের উপাদান। অন্যান্য বছরের মতো এবারেও ছুটির দিনগুলোতে বদনাতলী ঘাটে ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। অঝোর বর্ষণের মাঝেও মানুষ ছুটে গেছে বদনাতলী ঘাটে। বিশেষ করে যখনই বর্ষণ ঝিমিয়ে পড়েছে, তখনই মানুষ ছুটেছে সেদিকে। দুপুরের পর বেড়েছে জনসমাগম। যা সন্ধ্যা রাতেও ছিল জমজমাট। কিশোর, যুব আর নারীদের হাসিখুশি পদচারণায় মুখর ছিল নদের পাড়। সাহসীদের অনেকে নৌকা নিয়ে নেমে পড়েছিল পানিতে। ছোট ছোট ঢেউয়ের মাঝে নৌকায় ভেসে বেড়িয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আবার বহু পর্যটক ছুটে গেছে জেগে ওঠা ছোট্ট চরটিতে। যে চরটি বন বিভাগের সুবাদে বনাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বনাঞ্চলের মাঝে ঘুরে বেড়ানোতেও রয়েছে আলাদা মজা। যা কেবল উদ্যোগীরাই অনুভব করে। বুড়াগৌরাঙ্গ পটুয়াখালী জেলার দীর্ঘতম নদ-নদীগুলোর অন্যতম। এর উৎস বঙ্গোপসাগর। তাই এটি মাছের খনি হিসেবেও পরিচিত। সারাবছর চলে মাছ শিকার। জেলেদের আনাগোনায় মুখর থাকে। উৎসাহী দর্শনার্থীদের অনেকে পাড়ে সবুজ অরণ্যে ঘুরে বেড়ানোর মাঝে জেলেদের কাছ থেকে কিনে নেয় তাজা মাছ। হোক না দাম বেশি। তরতাজা মাছের কদরই আলাদা। গলাচিপা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার পুবের বদনাতলী ঘাট উৎসাহী পর্যটকদের কল্যাণে এরই মাঝে ছোটখাটো পর্যটনকেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। আগুনমুখা নদী তীরের পানপট্টি লঞ্চঘাটটিও সম্প্রতি স্থানীয়দের কাছে আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এর তীরে দাঁড়িয়েও উপভোগ করা যায় সাগরের সৌন্দর্য। দেখা মেলে জেলেদের নৌকার খোলে কিংবা জালে উঠে আসা তাজা ইলিশ। দেখা যায় গভীর বনাঞ্চল। উত্তাল ঢেউ ভেঙ্গে নৌকার ছুটে চলা যে কারও হৃদয়ে শিহরণ জাগায়। এমনকি সূূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মতো মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের দেখা মেলে পানপট্টি লঞ্চঘাটসহ আশপাশের এলাকা থেকে। -শংকর লাল দাশ, গলাচিপা থেকে
×