ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার বাইরে ম্যাচ ॥ ক্লাবগুলোর মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৬ জুলাই ২০১৬

ঢাকার বাইরে ম্যাচ ॥ ক্লাবগুলোর মিশ্র প্রতিক্রিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় ১২ ক্লাবগুলোও এখন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) আগে ক্যাম্পে মনোযোগী সব দলই। ঢাকার বাইরের ভেন্যুতে ম্যাচ আয়োজনসহ নানা কারণে আলোচিত বিপিএল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তাদের। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত যত ফুটবল লীগ হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই অনুষ্ঠিত হয়েছে শুধুমাত্র ঢাকায়। তবে কিছু লীগ হয়েছে ঢাকাসহ গোটা কয়েক বাইরের ভেন্যুতেও। তবে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচের সংখ্যাই ছিল বেশি। এক সময় ফুটবলই ছিল দেশের এক নম্বর ও সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। বঙ্গবন্ধুৃ জাতীয় স্টেডিয়ামে যেকোন খেলা হলেই কমপক্ষে ৩০-৪০ হাজার দর্শক ছুটে আসতেন খেলা উপভোগ করতে। আর দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডানের খেলা হলে তো কথাই নেই, খেলা শুরুর ৫-৬ ঘণ্টা আগেই স্টেডিয়ামে গিয়ে বসে থাকত ফুটবলপ্রেমীরা। কানায় কানায় পূর্ণ থাকত গ্যালারি। মাঠে ঢুকতে না পেরে দ্বিগুণের বেশি দর্শক স্টেডিয়ামের বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করতেন। মূলত নব্বই দশকের শেষদিক থেকেই বিভিন্ন কারণে ফুটবলের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে শুরু করে। পরে তো মৃতপ্রায়ই হয়ে যায়। দেশীয় ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন বাফুফেতে আসার পর থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফুটবলের হারানো গৌরব ও জনপ্রিয়তা আবারও ফিরিয়ে আনতে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের স্বত্ব বিক্রি করে দিয়েছেন। ফুটবল লীগ এখন নতুন আঙ্গিকে শুরু হবে। এর সবচেয়ে বড় বৈশ্যিষ্ট হচ্ছে- এখন থেকে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরেই বেশি খেলা হবে। তার মানে ফুটবলকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হবে। নিকট অতীতের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ঢাকার বাইরে কোন ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলে তা দেখার জন্য পঙ্গপালের মতো দর্শকরা হামলে পড়েছে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। এবারের লীগের মোট ১৩২ ম্যাচের বেশিরভাগই অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার বাইরে ছয় ভেন্যুতে। এবারের লীগের খেলা হবে একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে। এক ভেন্যুতে এক রাউন্ডের খেলা হবে। সেখানে কমপক্ষে চার দল গিয়ে হাজির হবে। তারপর খেলা শেষ হলে তারা অন্য ভেন্যুতে চলে যাবে। এভাবে প্রতি ভেন্যুতেই পর্যায়ক্রমে মোট ১৩২টি খেলা হবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছেÑ এই পদ্ধতিতে লীগ খেলে অভ্যস্ত নয় ক্লাবগুলো। যদিও তারা এতে সম্মতি প্রকাশ করেই খেলবে, তারপরও প্রশ্ন উঠেছে, নতুন নিয়মের সঙ্গে কতটা খাপ খাইয়ে নিতে পারবে তারা? গত দুই মৌসুম ধরে দেশের ঘরোয়া ফুটবলে শিরোপা মানেই ছিল শেখ জামালের আধিপত্য। কিন্তু এবার মৌসুম শুরুর আগেই দলের বেশিরভাগ ফুটবলার অন্য ক্লাবে পাড়ি জমালে বিপাকে পড়ে ধানম-ির জায়ান্টরা। মামুনুল, নাসিরদের দলে পেতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েও লাভ হয়নি। মৌসুমের প্রথম দুটি আসর স্বাধীনতা কাপ এবং ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। এবার ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের আগে ঘর গোছানো নিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে শেখ জামাল বাহিনীকে। দেশীয়দের মতো শেষ মুহূর্তে ওয়েডসন চলে যাওয়ায় (শোনা গেছে চলে গেছেন গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়েও) আরও বিপাকে আছে শফিকুল ইসলাম মানিকের শিষ্যরা। তবুও এ দল নিয়েই শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন দেখছে দলটি। কোচ মানিকও বলেন, ‘বিভিন্ন ভেন্যুতে আসা-যাওয়া-থাকা-খাওয়া এগুলো খুবই কষ্টকর প্রক্রিয়া। তবে এর সঙ্গে যে দল সবচেয়ে বেশি ভাল মানিয়ে নিতে পারবে, তারাই লীগের শিরোপা জিতবে।’ গোপীবাগের দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন ম্যানেজার আমের খান বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিতে লীগ হবে এবার। তবে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ঘুরে ঘুরে খেলায় অনেক ধকল হবে। ফলে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। তারপরও চেষ্টা করব চ্যাম্পিয়নশিপ রেসে থাকতে।’ প্রস্তুত সিলেট ॥ আগামী ২৪ জুলাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের পর্দা উঠছে। চট্টগ্রামে এদিন উদ্বোধন হবে ঘরোয়া ফুটবলের জমজমাট এই আসরের। এদিকে প্রথমবারের মতো ঘরোয়া ফুটবলের ভেন্যু হয়েছে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম। ফুটবল আসর আয়োজনে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিলেট। সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও সিলেট জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ম্যাচ আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে সিলেটের মাঠের। প্রস্তুত করা করা হয়েছে অনুশীলন ভেন্যু। এছাড়াও অন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্য দলগুলোর হাতে সিলেটের হোটেলগুলোর সব তথ্য দেয়া হয়েছে। ফেডারেশন থেকে হোটেল খরচও দলগুলোকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। সিলেটের ভেন্যুতে ছয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন দুটি করে খেলা হবে। বিকেলে প্রথম ম্যাচ আর সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটের অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ম্যাচ। ১২ দলের বিপিএলের সব দলই ২৯ জুলাইয়ের আগেই চলে যাবে সিলেটে। দলগুলো তাদের পছন্দমতো হোটেল বেছে নিতে তাতে অবস্থান করবে। হোটেলের জন্য এরই মধ্যে দলগুলোর হাতে প্রয়োজনীয় অর্থ তুলে দিয়েছে বাফুফে। সিলেটর প্রথম সারির হোটেলগুলোর তালিকাসহ অন্যান্য তথ্যও দেয়া হয়েছে ক্লাবগুলোকে। সিলেট খেলা চলাকালীন সময়ে দুটি ভেন্যুতে অনুশীলন করবে দলগুলো। একটি বিজিবি মাঠ। অন্যটি সিলেট ক্যাডেট কলেজের মাঠ। এছাড়াও খাদিমনগরে অবস্থিত বাফুফে একাডেমি মাঠেও অনুশীলন করতে পারবে দলগুলো।
×