ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে ৬ কোটি টাকা গায়েব ॥ বিক্ষুব্ধ ঠিকাদার

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২২ জুন ২০১৬

কুড়িগ্রামে ৬ কোটি টাকা গায়েব ॥ বিক্ষুব্ধ ঠিকাদার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অডিটরিয়াম নির্মাণের দরপত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এডিবির বিশেষ বরাদ্দের এ টেন্ডার মেয়র আব্দুল জলিল গুম করেছেন। সোমবার দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত তারিখ থাকলেও পৌরসভায় কোন দরপত্র দাখিল হয়নি। মেয়র নিজ বাড়িতে বসে দরপত্র গ্রহণ করেন। এই দরপত্র কমিটির আহ্বায়ক ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল আহম্মেদ গত ১০ দিন ধরে অনুপস্থিত। দরপত্র সচিবসহ অন্য সদস্যরাও কিছুই জানেন না বলে জানান। অর্থবছরের শেষ মুহূর্তে দরপত্র বাগিয়ে নিতে ঘটেছে তুঘলকি কারবার। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র না হওয়ায় শতকরা ৮ ভাগ অধিক দরে দরপত্র দাখিল করে সরকার দলীয় এই সিন্ডিকেট। ফলে সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। আর দরপত্র গোপন হওয়ায় পৌরসভার তালিকাভুক্ত সাধারণ ঠিকাদাররা অংশগ্রহণ করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। বিশিষ্ট ঠিকাদার আলম হায়দার লিখিত আবেদন করলেও তাকে সিডিউল দেয়া হয়নি। উদ্বেগজনক তথ্য হলো- সরকারের সকল নিয়ম-কানুনকে উপেক্ষা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সিডিউল ও দরপত্র বাক্স দেয়া হয়নি। শুধু তাই নয় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ অকার্যকর করতে এ দরপত্রের তথ্য দেয়া হয়নি সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে। কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র আব্দুল জলিল জানান, পৌরসভার উন্নয়নের স্বার্থে এটি করতে হয়েছে। কারণ টাকা ছাড়া প্রজেক্ট কিংবা বরাদ্দ আনা সম্ভব হয় না। তাই যারা ঢাকায় ঘাটে ঘাটে টাকা খরচ করে এ বরাদ্দ এনেছেন তাদেরই এ কাজ দেয়া হয়েছে। কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল আহম্মেদ কুড়িগ্রামের বাইরে থাকার কথা স্বীকার করে জানান, এটি পুনঃদরপত্র। এ দরপত্র আহ্বান করা হয় চলতি মাসের ৯ জুন। ১৯ জুন ছিল দরপত্র ক্রয়ের শেষদিন আর ২০ জুন ছিল দরপত্র দাখিল ও দরপত্র খোলার নির্ধারিত তারিখ। তবে এ দরপত্র কোন্ কোন্ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি জানি নাÑ মেয়র স্যার সব জানেন’। কুড়িগ্রাম পৌরসভার সচিব এসএম রেজাউল করিম দরপত্র কমিটির সদস্য দাবি করে বলেন, আমি নামমাত্র সদস্য। চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায় শুধু স্বাক্ষর দিতে হয় আমাকে। তবে সবকিছু মেয়র স্যার দেখভাল করেন। এই দরপত্র কমিটির সদস্য সচিব ও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জানান, দরপত্র আহ্বানের কথা শুনেছি। এর সবধরনের প্রক্রিয়া পৌরসভার বাইরে করা হয়েছে বিধায় আমার কিছুই জানা নেই। এ সংক্রান্ত ফাইলপত্রও পৌরসভায় নেই।
×