ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনির মেলব্যাগ ॥ অজয় দাশগুপ্ত

আপনিই হাল ধরুন জননেত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১১ জুন ২০১৬

আপনিই হাল ধরুন জননেত্রী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবার আপনাকে হাল ধরতেই হবে। এটা আমাদের জানা ছিলÑ ওরা ছাড়বে না। ওদের ইতিহাসে মানবতা বলে কিছু নেই। ওরা কারা ওরা কি করতে পারে সে আমাদের সবার জানা। এদেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তাদের চরম ঘৃণা। একদিনের জন্যও বাংলাদেশকে মানেনি তারা। আজও মানতে নারাজ। ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে আর লাভ নেই। আপনার সব গৌরব ও উন্নয়নকে ওরা রক্তে ঢেকে দেবে। এটাই ওদের শেষ খায়েস। শেখ হাসিনা আপনি জানেন আমাদের দেশকে আপনি কোন্ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এখন আমরা ফটো সেশনের ইমেজে নেই। বিদেশী সরকারপ্রধানদের সঙ্গে রেগুলার ফটো সেশনে নয়, আপনার জায়গা ওবামা ক্যামেরনের পাশে। এটা এমনি এমনি ঘটেনি। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশের মানুষের পরিশ্রম মেধা আর আপনার আন্তরিক সদিচ্ছা। এবারের শাসনের পজেটিভ দিকের এক বিশাল বিষয়ই নেগেটিভ দিককে কাছে টেনে এনেছে। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের ফাঁসি ও বিচার তারা মানতে পারেনি। এর সঙ্গে আছে বিলেতে থাকা যুবরাজের ইন্ধন। বিএনপি এখন জেনে গেছে দেশের ভেতর আন্দোলন বলে কিছু মানুষ নেবে না। সে সময় গত। এক সময়ের আপোসহীনা তার বয়সের ভারে ক্যারশিমা হারিয়ে ক্লান্ত। বিএনপিকে সামনে নেয়ার মতো কোন নেতা নেই। আওয়ামী লীগ এবার তার শিরদাঁড়া ভেঙ্গে দিয়েছে। তাছাড়া নতুন প্রজন্মে রাজনীতির যে ধরন বা তারা যা চায় সেটা লীগ বা বিএনপি কারও ভেতর নেই। ফলে তাদের মাঠে নামানো যাবে না। এই নির্বাচন ভোটাভুটিসহ নানা ইস্যু থাকলেও সেগুলো নিয়ে মাঠ গরম করার মতো কোন শক্তি তাদের দেখা যায়নি। এটা একদিকে ভাল, আরেক দিকে বিপদের। রাজনীতিতে সুবিধা করতে না পারলে আন্ডারগ্রাউন্ডে যাওয়ার প্রবণতা বিপজ্জনক। এটা এখন বলে বোঝানোরও দরকার নেই। এর পরিণামে রোজ একজন করে নিরীহ মানুষের জান হারানোর খবর দেখছি আমরা। এটা সহজ ব্যাপার নয়। এর ভেতর দেশ ও জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার বীজ বুনছে ওরা। খুন এখন পুলিশ সুপারের ঘরেও পৌঁছে গেছে। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাগুলোকে ধ্বংস করে দিতে পারলে আপনাদের অর্জন হয়ে যাবে কথার কথা। যাদের তারা টার্গেট করেছে তারা কারা? নিরীহ পুরোহিত, সেবায়েত, মৌলবী, লেখক বা ভিক্ষু। এদের হাতে না আছে অস্ত্র না আছে কোন ভয়ের কিছু। চোর-বদমায়েশ, ব্যাংক লুটেরা বা খুনীদের বিরুদ্ধে একটি চাপাতিও ব্যবহার করা হয়নি কোন দিন। করা হচ্ছে সাধারণের জান নিতে। এর মাজেজা একটাইÑ দেশটাকে অস্থিতিশীল করে তোলা। মানুষ এখন বড় ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। আমরা বিদেশেও টের পাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আপনিও দেশের উচ্চতাকে ধরতে পারছে না। সেটা বিদেশেও না। এখানে যে শাখা-প্রশাখা তার নেতৃত্ব গেছে হাফ পাগলের হাতে। জামায়াত-বিএনপি বা বিদেশে ষড়যন্ত্ররত কারও বিরুদ্ধে কোন কথা নেই এদের। টার্গেট আমার মতো নিরীহ লেখকরা। সাধারণ প্রবাসীদের মনে ভয় ধরানো আওয়ামী লীগের সংস্কার জরুরী। তা অন্তত বাইরে একটা প্রতিরোধ বলয় গড়ে উঠবে। রোজ মানুষ খুন হওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করাতে পারলে সে ছুরি চাপাতি বা গুলি একদিন নামজাদাদের গলাকেও ছেড়ে কথা বলবে না। দেশ যখন উচ্চতায়, প্রধানমন্ত্রী যখন উচ্চতায় তখন এই শাসনের নিম্নগামিতা মানা যায় না। এই সেদিন আপনার বিমান অবতরণে বিলম্বের ঘটনাও শুভ কিছু নয়। তলে তলে এরা কি করছে কে জানে। বঙ্গবন্ধু কন্যা আপনি হাল ধরলে এর সুরাহা হবে না। মানুষ বাঁচান, দেশ বাঁচান। আপনাকে আমাদের আরও অনেক প্রয়োজন। আপনিও নিরাপদে থাকুন। এ দেশ যেন আপনার হাত ধরেই এর জবাব দিতে পারে। প্রবাসীরা তাই চায়। এ দেশ কোন জঙ্গী বা সন্ত্রাসীর অভয়ারণ্য হতে পারে না। ইতিহাস তা বলে না। তাই দ্বিধাহীন চিত্তে আপনার সঠিক ভূমিকাই হবে রক্ষাকবচ। নয়ত অনেক দেরি হয়ে যাবে আমাদের। [email protected]
×