ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নারীর সমঅধিকার ও সচেতনতা

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৩ জুন ২০১৬

নারীর সমঅধিকার ও সচেতনতা

সব মানুষের সমান অধিকারের কথা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন আইন, ঘোষণায় বা সনদে বলা হয়েছে। কিন্তু সমঅধিকারের কথা বলা থাকলেও একটা বিরাট বৈষম্য চোখে পড়ে নারী-পুরুষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে। পরিবারে, কলকারখানায়, কৃষিতে, ব্যবসায়, প্রশাসনে, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে আজও পৃথিবীর প্রতিটি কোণে নারীরা অবহেলিত, নির্যাতিত, বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বিশেষভাবে নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশও এ সনদ স্বাক্ষর করে। স্বাক্ষরের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য নারীর মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিতকরণ, সাংবিধানিক গ্যারান্টিসহ রাষ্ট্রীয় শাসনযন্ত্রের সকল স্তরে যেমন পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে নারীর অংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে পুরুষের সঙ্গে নারীর অধিকারকে সমান স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। নারী-পুরুষভেদে সেখানে কোন পার্থক্য করা হয়নি বরং নারীদের এগিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনে বিশেষ আইন প্রণয়নের কথাও বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। পারিবারিক ক্ষেত্রে নারীর অধিকার রক্ষায় পৃথক পৃথক ধর্মাবলম্বীদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক পারিবারিক আইন, যাতে মূলত বিয়ে, দেনমোহর, তালাক, ভরণপোষণ ও সন্তানের অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত অধিকারগুলো সন্নিবেশিত রয়েছে। পারিবারিকভাবে সংগঠিত এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিটি জেলায় স্থাপিত হয়েছে একটি পারিবারিক আদালত। কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারীরা জানে না, আইনগতভাবে তাদের কি কি অধিকার আছে বা এ অধিকারগুলো না পেলে তারা প্রতিকারের জন্য কোথায় যাবে। উপরন্তু আমাদের চিন্তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে পাচার, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, এসিড সন্ত্রাস, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও ফতোয়াবাজির শিকার অসংখ্য নারীমুখ। এসব অপরাধ দমনের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কঠোর আইন-কানুন প্রণয়ন করেছে, যেমন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, এসিড সন্ত্রাস দমন আইন ২০০২ ও যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন ১৯৪০। এসব আইনের কার্যকারিতার প্রশ্নে অনেকেই মনে করছেন শুধুমাত্র কঠোর শাস্তি প্রদান ছাড়া এসব বিশেষ আইনের ভিন্ন কোন বৈশিষ্ট্য বা কার্যকারিতা নেই। এরই মাঝে আমাদের সামনে আশার আলো ছড়ায় অনেক নারীর সংগ্রামী প্রচেষ্টা। সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থাও নারী অধিকার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে, নির্যাতিত নারীদের বিনামূল্যে আইনী সহযোগিতা দিচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আমাদের সমাজে এমন উদাহরণও রয়েছে যেখানে সাধারণ জনগণের প্রচেষ্টায় বন্ধ হয়েছে বিভিন্ন অন্যায় নির্যাতন। মোটকথা, এসব প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রচলিত আইনগুলোকে আরও যুগোপযোগী ও গতিশীল হওয়া একান্ত প্রয়োজন। সব মানুষের সমান অধিকারের কথা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন আইন, ঘোষণায় বা সনদে বলা হয়েছে। কিন্তু সমঅধিকারের কথা বলা থাকলেও একটা বিরাট বৈষম্য চোখে পড়ে নারী-পুরুষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে। পরিবারে, কলকারখানায়, কৃষিতে, ব্যবসায়, প্রশাসনে, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে আজও পৃথিবীর প্রতিটি কোণে নারীরা অবহেলিত, নির্যাতিত, বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বিশেষভাবে নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশও এ সনদ স্বাক্ষর করে। স্বাক্ষরের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। অপরাজিতা ডেস্ক
×