ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রয়োজনে সৌদি নেতৃত্বের সামরিক জোটে সৈন্য পাঠাবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২ জুন ২০১৬

প্রয়োজনে সৌদি নেতৃত্বের সামরিক জোটে সৈন্য পাঠাবে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ সৌদি আরবের নেতৃত্বে সামরিক জোটে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে সৈন্য পাঠাবে বাংলাদেশ। এছাড়া সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে আগামী ৩ জুন সৌদি আরব সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌদি আরব সফরকালে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অধিক হারে সৌদি সহায়তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা, হজ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হবে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সৌদি আরব সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সদ্যসমাপ্ত জাপান সফরের বিষয়েও অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সৌদি আরবে যে সন্ত্রাসবিরোধী সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তার দুটি বিভাগ রয়েছে। এর একটি বিভাগ নিরাপত্তা সহযোগিতা ও আরেকটি বিভাগ সামরিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যেই ৩৪ দেশ এ সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমরাও যুক্ত হয়েছি। তবে আমরা যুক্ত হয়েছি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করার জন্য। তিনি বলেন, এ সেন্টারটি চলবে স্বেচ্ছাসেবীর ভিত্তিতে। এখানে প্রতিটি দেশই এ সংস্থার কার্যক্রমে স্বেচ্ছায় অংশ নেবে। কোনকিছু করতে কোন দেশেরই বাধ্যবাধকতা নেই। সৌদি আরবের এ জোটে বাংলাদেশ সৈন্য পাঠাবে কিনাÑ জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে সৈন্য পাঠানো হবে। এর আগে কুয়েতে ইরাক হামলা চালালে সৌদি আরবের দুটি পবিত্র মসজিদ রক্ষায় আমরা সৈন্য পাঠিয়েছিলাম। এছাড়া সম্প্রতি জোটের অন্তর্ভুক্ত সামরিক বাহিনীর প্রধানদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানও অংশ নিয়েছেন বলে তিনি জানান। সৌদিতে পুরুষ শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদিতে নারী শ্রমিকদের সঙ্গে তার পিতা ও ভাই যেতে পারবেন। এছাড়া জনশক্তি পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা হবে। তবে আমরা সেখানে যাই, এটা নিয়ে আলোচনা করি, তারপর দেখা যাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে আগামী ৩ জুন সৌদি আরব সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সালমান বিন আবদুল আজিজ সৌদি আরবের বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সৌদি আরব সফর। দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ, দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ়করণ ও সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, সৌদি বাদশাহর সঙ্গে আলোচনায় দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশীদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অধিক হারে সৌদি সহায়তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা, হজ ব্যবস্থাপনাসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যাবতীয় বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতা মতবিনিময় করবেন, যা দুই দেশের বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে বলে আমরা আশা করছি।
×