ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি-রিজার্ভ ডেতে গড়াল বাকি দুই ম্যাচ

আবাহনীর জয়ের নায়ক সৈকত

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৯ মে ২০১৬

আবাহনীর জয়ের নায়ক সৈকত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি পুরোদমে শনিবারের ম্যাচগুলোতেও জেঁকে ধরল। আর সেই ঝাঁকুনি প্রতিটি ম্যাচের গায়েই লাগল। তাতে করে প্রাইম ব্যাংক-কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি (সিএ) ও মোহামেডান-ক্রিকেট কোচিং স্কুল (সিসিএস) ম্যাচ এক ইনিংস করে হতে পারল। তাও আবার ওভার কেটে খেলা হলো। ম্যাচগুলোর বাকি অংশ রিজার্ভ ডে’তে গড়াল। যেখানে শনিবার খেলা শেষ হয়েছে। সেখান থেকেই আজ ম্যাচগুলো শুরু হবে। তবে একটি ম্যাচের রেজাল্ট ঠিকই হলো। যে ম্যাচটির দিকে সবার দৃষ্টি ছিল। সেই আবাহনী-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচে আবাহনীই জিতল। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অপরাজিত ৫৭ রানে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে জিতল আবাহনী। শেষ বলে জিতল আকাশী-হলুদ শিবির ॥ কি দুর্দান্ত ম্যাচই না হয়েছে। শেষ বলে গিয়ে জিতেছে আবাহনী। সেটি সম্ভব হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। বৃষ্টিতে ম্যাচ শুরু হয় দুপুর ১২টায়। এর আগে খোশমেজাজেই থাকেন আবাহনীর অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। যিনি কিনা আইপিএল শেষে এবার ঢাকা লীগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামলেন। তাতেই জয়ের মুখ দেখলেন সাকিব। সাকিব দলের সঙ্গে যোগ হতেই যে আবাহনী সেরার রূপ দেখাবে তা বোঝাই যাচ্ছিল। প্রাইম দোলেশ্বরকে হারিয়ে আবাহনী সেটিই প্রমাণও করল। আগে ব্যাট করে ২৮ ওভারের ম্যাচে নাসির হোসেনের ৭২ রানে ৭ উইকেটে ১৯১ রান করে দোলেশ্বর। রানের হিসেবে কম নয়। এ রানে আবাহনী হেরেও যেতে পারত। ২৫ রানেই যখন তামিম ও লিটন কুমার দাস সাজঘরে ফেরেন তখন হারের ভয়ও জেঁকে ধরে। এরপরই সাকিব ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে দলকে ৯৯ রানে নিয়ে যান। ৩৯ রান করা শান্ত এমন সময় আউট হলেও সাকিব উইকেট আঁকড়ে থাকেন। বল হাতে খুব ভাল কিছু (১ উইকেট শিকার করেন) করতে না পারলেও ব্যাট হাতে দলকে ৪৫ রান উপহার দেন সাকিব। কিন্তু ১১৯ রানে সাকিব আউট হতেই আবার হারের শঙ্কা দেখা দেয়। সেই শঙ্কা দূর করে দেন সৈকত। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে আবাহনী। আরেকদিকে যখনই ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন, চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন সৈকত। এমন করতে করতে শেষ পর্যন্ত টিকেও থাকেন। শেষ ওভারে জিততে আবাহনীর ১১ রানের প্রয়োজন থাকে। ফরহাদ রেজা বল করতে আসেন। ভরসা থাকেন সৈকতই। চার বলে আসে ৩ রান। দুই বলে জিততে তখন ৮ রানের দরকার থাকে। কি হয়, কি হয়; এমন উত্তেজনাকর মুহূর্তে পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন সৈকত। ১ বলে তখন জিততে ২ রান লাগে। শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েই দেন সৈকত। ৩৫ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৫৭ রান করে আবাহনীকে জেতান সৈকত। সঙ্গে সুপারলীগে ওঠার সম্ভাবনাও জাগিয়ে রাখেন। ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে উঠে যায় আবাহনী। জিততে ১৩৬ বলে ১৩৬ রান লাগবে মোহামেডানের ॥ লীগে এখন শীর্ষে আছে মোহামেডান। সেই শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হলে সিসিএসকে হারাতেই হবে। সেটি মোহামেডান যে পারবে, তা বোঝাও যাচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ৯টার ম্যাচটি ৫ ঘণ্টা পর দুপুর দুইটায় শুরু হয়। ২৫ ওভার করে কমানও হয়। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা গেছে, ম্যাচ শনিবার শেষ হবে না। যদি দ্রুতই গুটিয়ে না যায় সিসিএস। শনিবার ম্যাচের ফল নিষ্পত্তিও হয়নি। আজ রিজার্ভ ডেতে হবে ম্যাচের বাকি অংশ। জয়ের জন্য মোহামেডানের প্রয়োজন ১৩৬ বলে ১৩৬ রান। হাতে আছে ১০ উইকেট। টস হেরে আগে ব্যাট করা ক্রিকেট কোচিং স্কুল ২৪.৫ ওভারে ১৪৯ রান করতেই গুটিয়ে যায়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন সালমান হোসেন। তিনি ৫২ বলে ৮ চারে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন। মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। এছাড়া হাবিবুর রহমান দুটি উইকেট নেন। ১৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহামেডান বিনা উইকেটে ১৩ রান করে। খেলে ২.২ ওভার। এরপরই বৃষ্টি নামলে ম্যাচ আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি শনিবারের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। ইজাজ আহমেদ (১২) ও নাঈম ইসলাম (১) রান নিয়ে ব্যাটিং করছেন। আজ সকালে এই দুই ব্যাটসম্যান নতুন করে শুরু করবেন। ৯০ রান করলেই জিতবে প্রাইম ব্যাংক ॥ সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি। তাতে এমনই অবস্থা হয়েছে, ঢাকা লীগের খেলাগুলো হবে কিনা শনিবার তা নিয়েই সংশয় দেখা গেল। অবশেষে দুপুরে বৃষ্টি থামল। তাতে খেলা শুরু হলো। তবে প্রাইম ব্যাংক-কলাবাগান সিএ ম্যাচটি শুরু হলো দুপুর ২টায়। ওভারও কমানো হলো ২৯টি। কলবাগান একাডেমি আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২১ ওভারে মাত্র ৮৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। পরে মাঠে আলোর স্বল্পতা দেখা দেয়ায় খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচের দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ রোফারি। ফলে প্রাইম ব্যাংক ও কলাবাগান সিএ’র মধ্যকার ম্যাচটি আজ রিজার্ভ ডেতে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাইম ব্যাংক ৯০ রান করলেই জিতবে। আর যদি ম্যাচ না হয়, তাহলে দুই দলই ১ পয়েন্ট করে পাবে। তাতে ২ পয়েন্ট পাওয়া কলাবাগান সিএ’র তেমন কোন ক্ষতি না হলেও ৮ পয়েন্ট পাওয়া প্রাইম ব্যাংকের সুপারলীগে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আজ যেন বৃষ্টি না হয়, সেই দোয়াই নিশ্চয়ই করছে প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটাররা। জিতলেই যে ১০ পয়েন্ট যোগ হয়ে যাবে। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে মোটেও সুবিধা করে উঠতে পারেনি কলাবাগানের দুই ওপেনার ইরফান শুক্কুর ও মোহাম্মাদ আরাফাত। শুক্কুর ১২ রান ও আরাফাত ৯ রান করে আউট হয়ে যান। এরপর প্রাইম ব্যাংকের মোহাম্মদ আজিম ও মনির হোসেনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কলাবাগান একাডেমি। শেষ পর্যন্ত ২১ ওভারে ৮৯ রানে অলআউট হয় তারা। কলাবাগান একাডেমির হয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন। এছাড়া তাপস ঘোষ ১২ রান, প্রসেঞ্জিত দাস ও আব্দুল হালিম দুইজন ১১ রান করে সংগ্রহ করেন। প্রাইম ব্যাংকের মনির ও আজিম ৩টি করে উইকেট পান। স্কোর ॥ আবাহনী-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচ-বিকেএসপি-২৮ ওভার ম্যাচ- দোলেশ্বর ইনিংস ১৯১/৭; ২৮ ওভার (নাসির ৭২, সানজামুল ৪০, রকিবুল ২৫, রনি ১৮, জিয়া ১৮; তাসকিন ২/৫৩)। আবাহনী ইনিংস ১৯৪/৭; ২৮ ওভার (সৈকত ৫৭*, সাকিব ৪৫, শান্ত ৩৯, ভাটিয়া ১৫; আল আমিন ২/৩৬)। ফল ॥ আবাহনী বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (আবাহনী)। মোহামেডান-সিসিএস ম্যাচ-ফতুল্লা-২৫ ওভার ম্যাচ- সিসিএস ইনিংস ১৪৯/১০; ২৪.৫ ওভার (সালমান ৫৮, অমিত ২৪, উত্তম ২৩*, সাইফ ১৩; আরিফুল ৩/২৯, হাবিবুর ২/২৩)। মোহামেডান ইনিংস ১৩/০; ২.২ ওভার (এজাজ ১২*, নাঈম ১*)। ফল ॥ রিজার্ভ ডেতে আজ খেলার বাকি অংশ হবে। প্রাইম ব্যাংক-কলাবাগান সিএ ম্যাচ-মিরপুর-২১ ওভার ম্যাচ কলাবাগান সিএ ইনিংস ৮৯/১০; ২১ ওভার (মিরাজ ১৯, ইরফান ১২, তাপস ১২, প্রসেঞ্জিত ১১; মনির ৩/১২, আজিম ৩/২৩)। ফল ॥ রিজার্ভ ডেতে আজ খেলার বাকি অংশ হবে।
×