ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অর্থ সহায়তার চুক্তি স্বাক্ষর হবে

কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৪ মে ২০১৬

কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি আয় বহুমুখীকরণের মাধ্যমে জাতীয় কৃষির সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রান্তিক কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নের এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। এ তিন সংস্থা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক, ইফাদ ও ইউএসএইড। আজ বেলা ৩টায় শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অর্থ সহায়তার চুক্তি স্বাক্ষর হবে। সাত বছর মেয়াদী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৭১ কোটি ৪ লাখ এবং তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ঋণ ও অনুদান থেকে ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। টেকসই কৃষি ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে ১৫ বছর মেয়াদী এ পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম, দ্বিতীয় পর্যায় (এনএটিপি-২) নামের প্রকল্পটি গত ১৩ এপ্রিল অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, মৎস্য অধিদফতর, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট। এর আগে সাত বছর (২০০৭-২০১৪ সাল পর্যন্ত) মেয়াদী প্রথম পর্যায় বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় এরই মধ্যে একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। এখন দাতাসংস্থাগুলোর সঙ্গে ঋণচুক্তি হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কৃষি চাহিদাভিত্তিক সম্প্রসারণ সেবা প্রদান এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণের কৃষি পণ্যের (ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। বাজার সংযোগ জোরদার করার মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে সহায়ক হবে। কৃষি গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণের মাধ্যমে প্রতিকূল পরিবেশ ও প্রতিবেশ সহিষ্ণু যেমন বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, বালাই ইত্যাদি সহিষ্ণু ও অধিক উৎপাদনক্ষম প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় উচ্চশিক্ষা, কৃষক প্রশিক্ষণ, আইসিটি যন্ত্রপাতি সরবরাহ, ল্যাবরেটরি আধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অবকাঠামো উন্নয়ন করা সম্ভব হবে, যা গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে জানা গেছে, প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে কৃষকের উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি পাবে, যা খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষির সমৃদ্ধি অর্জন নিশ্চিত করবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রস্তাব ২০১৫ সালের ৫ জুন সংস্থাটির বোর্ডসভায় অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ১০০টি কম্পিটেটিভ রিসার্চ গ্রান্ট (সিআরজি) প্রস্তাব বাস্তবায়ন, ৩৩ প্রোগ্রাম বেজ রিসার্চ গ্রান্ট (পিবিআরজি) প্রস্তাব বাস্তবায়ন, ৪০ উন্নত প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে প্রদর্শন করা, উচ্চশিক্ষা বাস্তবায়নে দেশের অভ্যন্তরে ৮০ জনকে এবং দেশের বাইরে ৬০ জনকে পিএইচডি বৃত্তি দেয়া হবে। এছাড়া জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত উন্নয়ন, কৃষকদের সংগঠন সিআইজি গঠন, ১ হাজার ৬২১ ফারমার ইনফরমেশন এ্যান্ড এ্যাডভাইস সেন্টার স্থাপন, নির্বাচিত কৃষিপণ্যের উৎপাদন ৮-১০০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের আওতায় পণ্যবাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষিপ্রযুক্তি হস্তান্তর এবং প্রায় ২৮ লাখ ৪১ হাজার কৃষক পরিবারের উন্নয়নসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
×