ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে

প্রকাশিত: ২০:০২, ৬ মে ২০১৬

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে

অনলাইন ডেস্ক॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তার পরিকল্পনা দেশের জন্য কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি ডেকে আনবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নের যে অঙ্গীকার করেছেন তাতে তিনি প্রেসিডেন্ট হলে তার এ পরিকল্পনাতেই দেশের অর্থনীতি প্রায় ২ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ‘দ্য আমেরিকান অ্যাকশন ফোরাম’ এক গবেষণায় এমন আভাসই দিয়েছে। গবেষণা প্রতবেদনটি বৃহস্পতিবারই প্রকাশ পাওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্প যেসব নীতিমালা প্রস্তাব করেছেন তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এ গবেষণা। তার নীতিমালার মধ্যে আছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি ভেঙে দেওয়াসহ মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের মত পদক্ষেপও। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে প্রায় ৬৮ লাখ অভিবাসী কাজ করছে। তাদেরকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলে বেসরকারি খাতে ৩৮ হাজার ১৫০ কোটি ডলার থেকে ৬২ হাজার ৩২০ কোটি ডলার লোকসান হতে পারে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ওইসব কর্মীকে দেশ থেকে সরিয়ে দিলে পর্যাপ্ত বৈধ অভিবাসীর অভাবের কারণে লাখ লাখ কর্মসংস্থান কর্মীশূণ্য হয়ে পড়বে। বিশেষ করে, কৃষিসহ নির্মাণের মত শিল্পক্ষেত্র, যেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী কাজ করে সে জায়গুলো খালি হয়ে যাবে। “ট্রাম্প এ বিষয়গুলো একেবারেই অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।” বলেন, আমেরিকান অ্যাকশন ফোরামের প্রেসিডেন্ট ডগলাস হোলজ-এয়াকিন। এ সপ্তাহে খুবই সাফল্যের সঙ্গে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার পথে অবস্থান পাকা করে ফেলেছেন ট্রাম্প। ইন্ডিয়ানা প্রাইমারিতে হারের পর টেড ক্রুজ সরে দাঁড়ানোতে কাসিচ ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী। সেই কাসিচও সরে দাঁড়ানোতে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনেকটা নিশ্চিতভাবেইরিপাবলিকান দলের প্রার্থী হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অবৈধ অভিবাসীদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন। বিদেশি কর্মীদের কারণেই দেশে সীমিত মজুরি এবং বেকারত্বের মত সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে ওঠে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন তিনি। তবে তার এ অবস্থানের তীব্র সমালোচনা ও বিরোধিতা করেছেন বড় বড় ব্যবসায়ী নেতারাসহ মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার মানুষেরা। মেক্সিকানরা যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষক এবং মাদক চোরকারবারি পাঠাচ্ছে বলে মন্তব্য করেও বিরোধীদের তোপে পড়েছেন ট্রাম্প। মুসলিমদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দেওয়ার কথা বলেও ট্রাম্প তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন। কিন্তু অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্পের কট্টর অবস্থান অনেক মার্কিন ভোটারের মধ্যেই সাড়া জাগিয়েছে। সেপ্টেম্বরে রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ মার্কিনিই বেশিরভাগ কিংবা সব অবৈধ অভিবাসীকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার পক্ষে। আর বিপক্ষে মাত্র ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ মার্কিনি। অভিবাসী বিতাড়নের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশের ক্ষয়ক্ষতির হিসাবটি ‘ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকস’ এর উপাত্ত পর্যালোচনা করে বের করেছে ‘দ্য আমেরিকান অ্যাকশন ফোরাম।’
×