ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

তরুণ শিক্ষার্থী সম্মেলনে আহ্বান

চ্যালেঞ্জিং কাজে বাধা আসবে, কিন্তু পিছিয়ে যাওয়া যাবে না

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১ মে ২০১৬

চ্যালেঞ্জিং কাজে বাধা আসবে, কিন্তু পিছিয়ে যাওয়া যাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘চ্যালেঞ্জিং কাজের ক্ষেত্রে বাধা আসবে, কিন্তু পিছিয়ে যাওয়া যাবে না। স্বপ্নপূরণে শক্ত মনোবলের সঙ্গে শেখার আগ্রহও থাকতে হবে। বড়দের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে’Ñ চ্যালেঞ্জিং পেশায় প্রতিষ্ঠিত হতে করণীয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের করা এক প্রশ্নের উত্তরে এমন পরামর্শই দিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা ফারজানা চৌধুরী। শুধু তিনি নন, গণসাক্ষরতা অভিযানের ২৫ বছর পূর্তির এক অনুষ্ঠানে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযানের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘তরুণ শিক্ষার্থী সম্মেলন’-এ শিক্ষার্থীদের করা প্রশ্নে উঠে এসেছে হাজারও পরামর্শ। পারস্পরিক মতবিনিময় ও জানার ক্ষেত্র তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত এ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের করা নানা প্রশ্নের উত্তর দেনÑ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ, অভিনেতা জাহিদ হাসান, প্রাইভেট সেক্টরের তরুণ ব্যক্তিত্ব ফারজানা চৌধুরী, সঙ্গীতশিল্পী নকীব খান, হায়দার হোসেন, এভারেস্ট বিজয়ী এমএ মুহিত প্রমুখ। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে পুরো অনুষ্ঠান ছিল প্রান্তবন্ত ও হাস্যোজ্জ্বল। শিক্ষাঙ্গণগুলোতে পাঠাগারের বেহাল দশার কথা জানিয়ে এক স্কুল শিক্ষার্থীর করা প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়াম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোর সবচেয়ে অবহেলিত কক্ষটি লাইব্রেরী। নামকরা স্কুলের লাইব্রেরীগুলোরও নাজেহাল অবস্থা। বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবছর নতুন পুস্তক ক্রয়ের জন্য যে বাজেট দেয়া হয় তা ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে কিনাÑ তা খতিয়ে দেখতে হবে। তোমাদের পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের ব্যবধান প্রসঙ্গে করা আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শিক্ষার অধিকারকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমানে মুনাফা ও ব্যবসায়িক লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এ সময় তিনি আরও বলেন, সমাজে নানা পেশায় মর্জাদার ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। উঁচু এবং নিচুর মধ্যে যে ব্যবধান তা প্রসারিত না করে সঙ্কোচিত করতে হবে, রাষ্ট্রকেই সে ব্যবস্থা নিতে হবে। মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা ১৮ বছরই থাকছে জানিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, আমি যতদূর জেনেছিÑ ১৬ বছরের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসবে। মেয়েদের বিয়ে করা বা দেয়ার বয়স ১৮ বছরই থাকছে। তিনি আরেক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তোমাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে সোচ্চার থাকতে হবে। বর্তমানে সমাজ নৈতিকতা বিবর্জিত হয়ে যাচ্ছে। বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কারণে মানুষের বেঁচে থাকার নিরাপত্তা নেই। হারানো মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে সকলকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে এভারেস্ট বিজয়ী এমএ মুহিত বলেন, প্রত্যেকের হৃদয়ে একটা এভারেস্ট থাকে। জয়ের নিমিত্তে আমি লেগে ছিলাম। আপনি যদি লেগে থাকেন পৃথিবীর কোন শক্তি নেই আপনার স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। গায়ক নকীব খান বলেন, আমাদের দেশ সঙ্গীতের দেশ, গানের সঙ্গে হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় খাতটি এগিয়ে যেতে পারছে না। আইন আছে, আইনের প্রয়োগ নেই। মেধাস্বত্ব আইন আছে কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। গান করেও টাকা পাওয়া যায় না। কপিরাইট আইন মানা হয় না। এসব কারণে এ খাত এগিয়ে যেতে পারছে না। তবে এ খাতে মেধাবী ও তরুণ শিল্পীদের আগমনে ভবিষ্যতে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।
×