ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৩ মার্চ ২০১৬

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নিয়ে ধোঁয়াশা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনের দিন-ক্ষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামী ২০ মার্চ সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেই স্পষ্ট হবে- পূর্ব নির্ধারিত আগামী ২৮ মার্চেই জাতীয় সম্মেলন হবে, নাকি কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে দেয়া হবে। গত ৯ জানুয়ারি গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আগামী ২৮ মার্চ দলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা বাছাইয়ের বিশাল কর্মযজ্ঞের কারণে জাতীয় কাউন্সিলের চেয়ে এ কাজেই কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক নেতাদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। এ বাস্তবতার প্রেক্ষিতে গত বুধবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকম-লীর এক সভা শেষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউলআলম হানিফ এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় সম্মেলন কিছুটা পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ একটা বড় দল। সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা কাউন্সিলে যোগ দেবেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরাও সম্মেলনে আসবেন। যেহেতু এবারই প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচন হতে যাচ্ছে, আর এই নির্বাচন জাতীয় ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকল নেতাকর্মী নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এসব বিষয় চিন্তা করে সামনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সম্মেলনের তারিখ কিছুটা পরিবর্তন করা হতে পারে। আগামী কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠকেই এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এদিকে শুক্রবার ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থান পরিদর্শনকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জাতীয় কাউন্সিলের সময় পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল এখন পর্যন্ত পেছানোর কোন সম্ভবনা নেই। নির্ধারিত সময়েই কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। পেছানোর প্রয়োজন হলে কিংবা ইস্যু হলে ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা করা হবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহও বলেন, নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁদের বেশিরভাগই জাতীয় সম্মেলন কিছুদিনের জন্য হলেও পেছানোর সম্ভাবনার কথায় বলছেন। তাঁদের মতে, আওয়ামী লীগের মতো উপ-মহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলের জাতীয় সম্মেলনের আগে অনেক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে চলা ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য প্রায় প্রতিদিনই নীতিনির্ধারক নেতাদের ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। দলের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্রসহ সম্মেলনের আগে যেসব গুরুত্বপূর্ণ কর্মকা- রয়েছে, তার কিছুই আগের মতো জোরালোভাবে শুরু হয়নি। এসব কারণে তাঁরা নিশ্চিত কিছু দিনের জন্য হলেও সম্মেলনের সময় পিছিয়ে দেয়া হতে পারে। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ১৯তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই কমিটির মেয়াদ গত ২৯ ডিসেম্বর শেষ হয়। পরবর্তীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ আগামী মে মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এদিকে সম্মেলন সফল করতে বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হয়। কয়েকটি উপকমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মেলনের দিন-ক্ষণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
×