ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি নির্বাচন

মহেশখালীতে গুলি বিনিময় ॥ কুমিল্লায় সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৯ মার্চ ২০১৬

মহেশখালীতে গুলি বিনিময় ॥ কুমিল্লায় সংঘর্ষ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থক-কর্মীরা মুখোমুখি হলেই সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, এমনকি গুলিবিনিময় পর্যন্ত হচ্ছে। স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : মহেশখালী ॥ কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার ও মাঠ দখলে নিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শরিফ বাদশা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনায়েত উল্লাহ বাবুলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও পরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের আটজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে আবদুল মন্নানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে। সোমবার রাত্রে উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের নতুন বাজারে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত নয়টার সময় উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পশ্চিম দিক থেকে নৌকা প্রতীকের শরীফ বাদশার কর্মী-সমর্থকদের মিছিল নতুন বাজারে আসে এবং অপরদিকে একই সময় পূর্বদিক থেকে চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এনায়েত উল্লাহ বাবুলের কর্মী-সমর্থকদের মিছিল নতুন বাজার এলাকায় এলে দু’চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এই ঘটনায় পথচারী, গাড়ির ড্রাইভার ও দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকসহ সিরাজুল হক, মিনতাজ উল্লা, জিয়াউল হোসেন, রুবেল, নুর হোসেন, সোহেল ও আবদুল মন্নাসহ আটজন গুলিবিদ্ধ হয়। বাউফল ॥ আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের নৌকা মার্কার প্রার্থী সামসুল হক ফকিরের খালাত ভাই ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আশ্রাফ আলী ফকির (৩২) সোমবার রাতে বিদ্রোহী প্রার্থী (ঘোড়া মার্কার) জাহাঙ্গীর উল্লাহর সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে খুন হওয়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে বাউফল। এ খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বাউফল থানার ওসি আজম মাসুদুজ্জামানের প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মঙ্গলবার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল, থানা ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করেছে। জানা গেছে, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আশ্রাফ আলী তার কয়েক সহযোগী নিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী ও তার খালাত ভাই সামসুল হক ফকিরের প্রচারে অংশ নিতে সিদ্দিকের হাট থেকে মোটরসাইকেলযোগে মিলঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে কাদের মাতব্বরের ব্রিজের কাছে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর উল্লাহর ২০-২৫ সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা করে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আশ্রাফ আলী ফকিরকে অপহরণ করে এক কিলোমিটার দূরে ঘোড়া মার্কার সমর্থক বারেক মোল্লার বাড়িতে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে জখম করে ঘরের দোতলায় আটকে রাখে। এ ঘটনার সময় ওই এলাকায় এসআই মনির হোসেনের নেতৃত্বে তিন পুলিশ টহল দিচ্ছিল। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আশ্রাফকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলেও পুলিশ করেনি। পরে খবর পেয়ে ওসি আজম মাসুদুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আশ্রাফ আলী ফকিরকে ওই বাড়ির দোতালা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাউফল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আশ্রাফ আলী ফকিরের খুনীদের গ্রেফতার ও বাউফল থানার ওসি মাসুদুজ্জামানকে প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে থানার সামনে অবস্থান নেয়। বরিশাল ॥ জ্যান্ত ঘোড়া নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ঘোড়া প্রতীকের নির্বাচনী প্রচার চালানোর কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকরা ঘোড়ার রাখালকে মারধর করে ঘোড়াসহ পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নে। জানা গেছে, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি লিটন তালুকদারের স্ত্রী লাবন্য আক্তার তালুকদার ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বাকাল ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার নির্বাচনী প্রতীক ঘোড়া মার্কার সমর্থক বাকাল গ্রামের সৈয়বালী গাজী ও নিতাই বিশ্বাস মঙ্গলবার বেলা এগারোটার দিকে জ্যান্ত ঘোড়া নিয়ে এলাকা ঘুরে প্রচার চালাচ্ছিল। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা মার্কার প্রার্থীর সমর্থকরা নিতাই বিশ্বাস ও সৈয়বালীকে মারধর করে ঘোড়াসহ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা নির্বাচনের কারণে নয়; ঘোড়া নিয়ে এলাকার মানুষদের অর্থের বিনিময়ে বিনোদন দেয়ার কথা জানায়। পরবর্তীতে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কুমিল্লা ॥ দেবীদ্বার উপজেলার বড় শালঘর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম ঝারু ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুছ মাস্টারের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাতে ঘটনার সূত্রপাত হয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ওই এলাকায় এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে বড় শালঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুছ মাস্টারের মিছিল বের হলে এ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুল ইসলামের কর্মীদের সঙ্গে প্রথমে বাকবিত-া এবং পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। একপর্যায়ে নৌকার সমর্থকরা সংচাইল গ্রামে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুছের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে। এ সময় ইউনুছ মাস্টারের কর্মীরা নৌকার সমর্থক জামান, আমির, শাহীনসহ কমপক্ষে ছয়জনকে মারধর করে আহত করে।
×