ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

৭ মার্চের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দুই আসামি ॥ বিএনপির নেতৃত্বে এখন-

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৮ মার্চ ২০১৬

দুই আসামি ॥ বিএনপির  নেতৃত্বে এখন-

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলকে ‘নাটক’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, নাটকটা ভালই হয়েছে। চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন দুই আসামি! একজন এতিমের টাকা চুরি করা মামলার আসামি (খালেদা জিয়া), আরেকজন তো (তারেক জিয়া) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি। তার নাম ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছে। তারা জনগণকে কী দেবে? যুদ্ধাপরাধীদের মতো আগুন সন্ত্রাস ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার জন্য একদিন খালেদা জিয়ারও বিচার বাংলার মাটিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রীর জন্ম ভারতে, আর মনেপ্রাণে পাকিস্তানী। উনি দেশে আগুন দিয়ে মানুষ মারে, আর তার হৃদয়ে পেয়ারে পাকিস্তান। তাই উনি তার পেয়ারের পাকিস্তানে গেলেই তো পারেন, দেশে থেকে কেন জনগণকে যন্ত্রণা দিচ্ছেন? তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে ৯২ দিন ধরে অফিসে থেকে বিএনপি নেত্রী প্রায় আড়াই শ’ মানুষকে পুড়িয়েছেন, হত্যা করিয়েছেন। কী অপরাধ ছিল এসব নিরীহ মানুষের? এর জবাব একদিন খালেদা জিয়াকে দিতে হবে। তার বিচারও বাংলার মাটিতে একদিন হবে। আর যতই বাধা আসুক না কেন আমরা সেই বাধাকে অতিক্রম করতে পারব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে পথ আমাদের দেখিয়ে গেছেন সে পথ ধরে তাঁর স্বপ্ন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই। এজন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সোমবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ জনসভার আয়োজন করে। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে জনসভাটি একপর্যায়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়। সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেনÑ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, একেএম রহমতউল্লাহ, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, নগর আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার, মহিলা আওয়ামী লীগের সাবিহা খাতুন, যুবলীগের ওমর ফারুক চৌধুরী, হারুনুর রশিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মোল্লা মোঃ আবু কাওছার, শ্রমিক লীগের সিরাজুল ইসলাম, কৃষক লীগের এ্যাডভোকেট শামসুল হক রেজা, যুব মহিলা লীগের নাজমা আখতার এবং ছাত্রলীগের সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসাইন। জনসভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। বেলা পৌনে তিনটার দিকে সকল ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত সুবিশাল মঞ্চ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বজ্রনির্ঘোষ ভাষণ ছাড়াও দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। দুপুর ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিলসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী পৌনে চারটায় জনসভাস্থলে আসার আগে তীব্র মানুষের স্রোতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে আশপাশের এলাকা যেন রীতিমতো জনসমুদ্রে রূপ নেয়। দুপুর সাড়ে তিনটার পর মাঠে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে দোয়েল চত্বর এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাইকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শুনতে দেখা যায়। জনসভা ঘিরে ঢাকা মহানগর কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতাদের শোডাউনও চোখে পড়ার মতো। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতারা জনসভাকে জনসমুদ্র আখ্যা দিয়ে বক্তৃতা করেন। এছাড়া দলীয় এমপি এবং কাউন্সিলররা বড় ধরনের শোডাউন করে এ জনসভাকে সামনে রেখে। এছাড়া নানা রঙ-বেরঙের টুপি (ক্যাপ) পরে হাতে জাতীয় পতাকা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে প্রবেশ করে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ ও উত্তর। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় যোগদানের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা গাড়ি নিয়ে এসে মৎস্য ভবন, শাহবাগ, টিএসসি চত্বর এলাকায় জড়ো হলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে অফিস ফেরত ও বিভিন্ন যাত্রীদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাজপথে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে শত শত যানবাহনকে। জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের প্রদত্ত রায়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়ার ক্ষমতা দখলকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে জন্ম নেয়া রাজনৈতিক দল মানুষের জন্য কী করবে? যার (বিএনপি) জন্মই অবৈধ পন্থায় অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে। এদের কাছে দেশবাসী কিছু আশা করে না। বাস্তবে এরাই দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করে গেছে। তিনি বলেন, বিএনপি শুধু মানুষ খুন করতে জানে। তারা নাকি নির্বাচন হতে দেবে না। আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে প্রায় আড়াই শ’ মানুষকে পুড়িয়েছে, হত্যা করেছে। মায়ের সামনে, বাবার সামনে ছোট্ট শিশুকেও রেহাই দেয়া হয়নি আগুনের আন্দোলন থেকে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, উনি নাকি সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরে যাবেন না। এই বলে ৬৮ জনকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ৯২ দিন ধরে অবস্থান করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন। এখনও আগুনে দগ্ধরা দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। কেন তাদের পোড়ানো হলো সে জবাব খালেদা জিয়াকে দিতে হবে। মানুষ পুড়িয়ে উনি আন্দোলন করেন। সেই আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বন্ধ করার আন্দোলন। কিন্তু দেশের জনগণ তার সেই আগুন সন্ত্রাসের আন্দোলন সমর্থন করেনি, বরং দেশের জনগণই তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করেছেন। জিয়া-খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরোধিতা ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিচার শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু তাঁকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর পাল্টে যায় সবকিছু। যাদের এদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে আনা হয়, যেসব যুদ্ধাপরাধী কারাগারে বন্দী ছিল তাদের মুক্তি দিয়ে পুনর্বাসিত করেন জেনারেল জিয়া। জিয়া নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন, খেতাবও নেন। নিজেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও দালালি করেছেন ওই পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের। আর তাই জেনারেল জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের হাতে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দেন, রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। এদেশের বিরোধিতাকারীদের হাতে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও পতাকা তুলে দিয়েছেন। এরপর বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল লুটপাট-দুর্নীতি, জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের দেশে। ২১টি বছর এমন ষড়যন্ত্র চলেছে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সফলতা ও উন্নয়ন কর্মকা-গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তাদের নীতি ছিল খাদ্য ঘাটতি রেখে, জাতিকে ভিক্ষুক হিসেবে চিহ্নিত করে বিদেশ থেকে ভিক্ষা নিয়ে আসা। আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও নীতি হচ্ছে, আমরা কারও কাছে হাত পেতে কিংবা ভিক্ষা নিয়ে চলব না, নিজের পায়ে দাঁড়াব। দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। মর্যাদা নিয়ে বিশ্বের বুকে চলব। তিনি বলেন, আমরা বীরের জাতি, মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। তাই আমরা বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব, কারও কাছে হাত পেতে নয়। দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশবাসীরও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সদ্যসমাপ্ত এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের রানার্সআপ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সবক্ষেত্রের উন্নয়নের পাশাপাশি খেলাধুলাতেও আমরা আর পিছিয়ে নেই। আমরা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছি, রানার্সআপ হয়েছি। সামনে আরও বহুদূর যাব। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘বাঙালীকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’Ñ ঠিকই পারেনি। খেলায় এখন বাঙালীকে হিসাব করে বিশ্বের মানুষ। আমি চাই, আমার দেশের প্রতিটি মানুষ এ চেতনা নিয়েই এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাপরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশ কী অবস্থায় ছিল, তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশটাকে ধ্বংস করার সব রকম ষড়যন্ত্র চলেছে এই ২১ বছর। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে তখন এ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ শুরু করে। ’৭৫ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। তারপরও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেখানে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন তারা প্রতিবছর ৭ মার্চের এ ভাষণ বাজাতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং অনেককে জীবনও দিতে হয়েছিল। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য বর্ণনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জাতির পিতা। এ ঘোষণা আসলে তিনি দিয়ে আসছিলেন ১৯৪৮ সাল থেকেই। তারপর ধাপে ধাপে জাতিকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, ৪৫টি বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণটি জনগণকে উজ্জীবিত করে যাচ্ছে। পৃথিবীর আর কোন ভাষণ নেইÑ যে ভাষণটি এত বছর ধরে মানুষ শুনছে, যার আবেদন এখনও এতটুকুও কমেনি। আজকে সারাবিশ্বে এ ভাষণ স্বীকৃত। তিনি বলেন, আজকে বিশ্বের অনেক দেশ এ ভাষণটি শুনতে চায়। ইতোমধ্যে ১২টি ভাষায় এ ভাষণ অনুবাদ করেছি এবং আরও অন্যান্য ভাষায় পর্যায়ক্রমিকভাবে আমরা অনুবাদ করে দিচ্ছি। এ ভাষণ এখন আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। অথচ এ ভাষণকে জিয়াউর রহমান, মুশতাক, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বারবার নিষিদ্ধ করতে চেষ্টা করেছে। দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করে গেছেন, সেই আদর্শ আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ করে আমরা দেশকে গড়ে তুলব। যত বাধাই আসুক না কেন, সেই বাধাকে আমরা অতিক্রম করেই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করেই জাতির পিতার রক্তের প্রতিশোধ আমাদের নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের ভাষা, স্বাধীনতা, স্বাধীন পতাকা ও সংবিধান দিয়ে গেছেন। তাঁর স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন বলেই শত ষড়যন্ত্রের পরও জাতির জনকের হত্যার বিচার হয়েছে, জাতীয় চার নেতা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, রায়ও কার্যকর হচ্ছে। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এখন অর্থনীতিসহ সবদিক থেকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এটা বিশ্বময় স্বীকৃত। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দেশকে পিছিয়ে দিতে ৯২ দিন আগুন নিয়ে খেলেছেন। পরে ইঁদুরের গর্তের মধ্যে ঢুকেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ভুলে আজ বিএনপির এ দশা। এখন ফিনিক্স পাখি তো দূরের কথা তার ডাকে মরা কাকও আওয়াজ তুলবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মুক্তির সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। এখনও নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়া এখন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে এসেছেন। ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচনেও উনি আসবেন। জনগণ আবার তাকে প্রত্যাখ্যান করবেন। খালেদা জিয়ার বিচার দাবি করে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, স্বাধীনতা-গণতন্ত্র-মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না। বরং যুদ্ধাপরাধীদের মতো খালেদা জিয়াদেরও বিচার করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ এখন সারাবিশ্বে মানবতার মুক্তির সনদ। বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণ ছিল অত্যন্ত কৌশলী। একটি ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের সমস্ত রণকৌশল জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন।
×