ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সতর্ক থাকতে বলেছে সংসদীয় কমিটি ॥ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৬ মার্চ ২০১৬

ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সতর্ক থাকতে বলেছে সংসদীয় কমিটি ॥ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ

নাজনীন আখতার ॥ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বাইরে স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্লট নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে প্লট বরাদ্দ দেয়াসহ ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে কমিটি। জবাবে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নীতিমালার আলোকে ১ হাজার ৫৬৫ পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্লট বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বাইরে কাউকে প্লট বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ নেই। পুনর্বাসন খাতে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হয়েছে। বহুল আলোচিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শনের পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ প্রতিবেদনে প্লট বরাদ্দের বিষয়ে এ মন্তব্য করে মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। গত রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় সেতু নির্মাণে সার্বিক কার্যক্রমের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রেও বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেনের নেতৃত্বে কমিটির অপর সদস্যরা সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে কাজের গতি, মান ও মালামাল সংগ্রহের অবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে প্লটের বিষয়ে সুপারিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্তদের বাইরে স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্লট নিচ্ছে বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বিষয়গুলো নজরে রেখে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যেন প্লট বরাদ্দ পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনের কাজে যাতে কোন ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। জবাবে সেতু বিভাগের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জেলা প্রশাসকরা সিসিএল বা ক্যাশ কমপেনসেশন বাই ল’ অর্থাৎ আইন অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করে চিহ্নিত করেন। তাদের পরবর্তীতে মাঠ পর্যায়ের প্লট বরাদ্দ কমিটি এবং প্রকল্প পর্যায়ের প্লট বরাদ্দ কমিটি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হন। এরপরই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রকল্প এলাকায় নির্মিত পুনর্বাসন সাইটে প্লট বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করা হয়। সেতু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নীতিমালার আলোকে এ প্রক্রিয়ায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৬৫ পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্লট বরাদ্দ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি পর্যন্ত ১ হাজার ৪৫৫ প্লট হস্তান্তর করা হয়েছে। কাজেই ক্ষতিগ্রস্তদের বাইরে কাউকে প্লট বরাদ্দ দেয়ার কোন সুযোগ নেই। পুনর্বাসন খাতে জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
×