ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;জাহাঙ্গীর আলমের জবানবন্দী

জামালপুরের ৮ রাজাকার পাঁচ জনকে শ্মশানঘাটে নিয়ে হত্যা করে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

জামালপুরের ৮ রাজাকার পাঁচ জনকে শ্মশানঘাটে নিয়ে হত্যা করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামালপুরের আলবদর বাহিনীর উদ্যোক্তা আশরাফ হোসেনসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৯তম সাক্ষী শাহ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জবানবন্দী প্রদান করেছেন। তিনি জবানবন্দীতে বলেন, রাজাকাররা আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৭ থেকে ৮ জনকে হত্যা করেছে। তাদের হত্যা করার তিন দিন পর আরও ৫ জনকে শ্মশানঘাটে নিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী তাদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে নোয়াখালীর তিনজনের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন ও প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। আসামি পক্ষে ছিলেন আব্দুস সুবহান তরফদার। প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম শাহ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- আমলাপাড়া, থানা ও জেলা- জামালপুর। আমি ১৯৬৯ সালে জামালপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করি। একাত্তর সালে ময়মনসিংহের পলিটেকনিক ইনস্টিউিটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম। ১৯৭১ সালে সম্ভবত জুলাই মাসের দিকে আমার বড় ভাই রেজাউল করিম চৌধুরী ময়মনসিংহ থেকে আমাদের জামালপুরের বাসায় আসেন। জামালপুর আসার পর আমার সেই ভাই একদিন সকাল আনুমানিক ১০-১১টার সময় জামালপুর শহরের ইয়াকুব বেকারীর কাছে গেলে সেখান থেকে আলবদর আসামি মোঃ আব্দুল মান্নান ও আলবদর আসামি আব্দুল বারী তাকে আটক করে স্থানীয় পিটিআই আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এর পাশেই বদর ক্যাম্প ছিল। রাজাকাররা আমার ভাই রেজাউল করিমকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে পাকিস্তানী সেনারা তাকে ছেড়ে দেয়। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমি ভাইয়ের খোঁজে জামালপুর শ্মশানঘাটে গেলে সেখানে ১৩-১৪টি লাশ দেখতে পাই। আমার বড় ভাই ক্যাম্পে ১৪-১৫ দিন আটক থাকার পর ছাড়া পায়। তার মুখে শুনেছি বদর ক্যাম্পে নিয়ে যাবার পর সেখানে ৭-৮ জনকে বন্দী অবস্থায় দেখেছেন। পরে তাদের হত্যা করা হয়। এর তিন দিন পর আরও ৫ জনকে হত্যা করা হয়। নোয়াখালীর তিনজনের জামিন খারিজ ॥ একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় নোয়াখালীর তিনজনের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিন আসামি হলেন, মোঃ ইউসুফ, মোঃ আব্দুল কুদ্দুস ও মোঃ জয়নাল আবেদিন।
×