ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরির প্রলোভনে তরুণীকে ভারতে বিক্রি

নরক যন্ত্রণার বর্ণনা রেকর্ড করলেন বিচারক

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

নরক যন্ত্রণার বর্ণনা রেকর্ড করলেন বিচারক

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ভারতে যৌনকর্মে বাধ্য করা ও সেখানকার নরক যন্ত্রণার বর্ণনা দিল সদর উপজেলার নীমতলী গাজীপাড়ার পাচারের শিকার এক তরুণী। সে জানিয়েছে ছাতিয়ানতলা গ্রামের রুকসানা নামে এক নারী তাকে কাজের প্রলোভন দিয়ে ভারতে পাচার করে। প্রায় এক বছর পর সেখান থেকে পালিয়ে আসেন সে। বুধবার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মৃত্যুঞ্জয় মিস্ত্রি তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, যশোর সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের মৃত বিলাত আলীর মেয়ে রুকসানা ও তার পরিবারের লোকজন প্রায় ওই তরুণীর বাড়িতে যেত। এ সময় তারা মেয়েটিকে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকরির প্রস্তাব দেয়। এমনকি চাকরি দিতে ১০ হাজার টাকাও দাবি করে। তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রুকসানা ওই মেয়েকে ঢাকার উদ্দেশে নিয়ে যায়। এরপর ওই মেয়ের সঙ্গে তার বাড়ির লোকজনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মেয়েটির পরিবারের লোকজন রুকসানার কাছে গিয়ে মেয়ের খবর জানতে চাইলে সে টালবাহানা শুরু করে। এর মধ্যে একদিন মেয়েটি বাড়িতে ফোন করে জানায়, রুকসানা তাকে ভারতে এনে বিক্রি করে চলে গেছে। এরপর ওই মেয়ের পিতা বাদী হয়ে ১৬ জুন মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনালে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামিরা হলো সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের মৃত বিলাত আলীর তিন মেয়ে রুকসানা বেগম, রেকসোনা, ঝর্ণা বেগম ও স্ত্রী বড় মণি বেগম এবং জালালের ছেলে ইলিয়াস হোসেন। এদিকে গত সোমবার পাচারের শিকার মেয়েটি ভারত থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে আসে। বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তার জবানবন্দী গ্রহণ করেন। এ সময় মেয়েটি আদালতে ভারতে জোরপূর্বক যৌনকর্মে বাধ্য করা ও সেখানকার নরক যন্ত্রণার বর্ণনা দেন। মেয়েটি জানিয়েছে, রুকসানা গার্মেন্টেসে চাকরি দেয়ার কথা বলে তার পিতার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়। এরপর তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বেনাপোল নিয়ে যায়। রুকসানার সঙ্গে আরও দুইজন মেয়ে ছিল। এরপর তারা তাকে ভারতের মুম্বাই শহরে নিয়ে যায়। সেখানে হামিদ ও ইসমাইল নামে দুই ব্যক্তির কাছে তাকে বিক্রি করে দেয় রুকসানা। হামিদ ও ইসমাইল তাকে দিয়ে বিভিন্ন হোটেল ও বাসায় অসামাজিক কাজ করাত। তাদের কথা মতো কাজ করতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হতো। কয়েকদিন আগে তার জ্বর হলে অপর একটি মেয়ের সঙ্গে তাকে ডাক্তার খানায় পাঠানো হয়। এ সময় সুযোগ বুঝে তিনি পালিয়ে আসেন বলে আদালতকে জানিয়েছে। জবানবন্দী গ্রহণ শেষে বিচারক নির্যাতিত তরুণীকে তার পিতা মাতার জিম্মায় দেন। টাঙ্গাইলে চালককে পেটানোর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৭ জানুয়ারি ॥ পুলিশ এক বাসচালককে পেটানোর প্রতিবাদে বাস শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়ক প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। তারা রাবনা বাইপাসে অবস্থিত পুলিশ বক্সটিও ভাংচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাসে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। শ্রমিকরা জানান, বিনিময় পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের চালক রাজিব মিয়া বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের এলেঙ্গায় পৌঁছলে একটি ট্রাককে ওভারটেক করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ডিবি পুলিশের একটি গাড়ি থেকে কয়েক পুলিশ নেমে এসে বাসচালক রাজিবকে পিটিয়ে জখম করে। পরে তাকে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ খবর টাঙ্গাইল বাস টার্মিনালে পৌঁছলে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা টার্মিনালের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এক দল শ্রমিক রাবনা বাইপাসে গিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে।
×