ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, মেয়র ও মেম্বরদের বেতন বাড়বে

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, মেয়র ও মেম্বরদের বেতন বাড়বে

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি, বিচারক ও সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির পর এবার স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য পারিতোষিক বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান এবং মেম্বাররা বর্ধিত এই সম্মানী ভাতা পাবেন। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সেলিম উদ্দিনের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য পারিতোষিক বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। রাজধানীর দখল হওয়া সকল খাল উদ্ধার করা হবে ॥ সরকারী দলের অপর সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, বর্তমান সরকার রাজধানী ঢাকার দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর। প্রথম মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকার ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধানে থাকা নগরীর ২৬টি খালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ দখল উচ্ছেদ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে এই খালগুলোতে পানির প্রবাহ সচল আছে। বর্তমানে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হওয়া খালগুলো অবৈধ দখলের আর কোন সুযোগ নেই। মন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই এ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ১৩টি যেমন- মহাখালী, বাউনিয়া, আবদুল্লাহপুর মেইন খাল, আবদুল্লাহপুর শাখা খাল, জিরানী খাল, শাহবাদপুর খাল, সতিভোলা খাল, সেগুনবাগিচা খাল, শাহজাহানপুর খাল, খিলগাঁও-বাসাবো খাল, খিলগাঁও-বাসাবো আপস্ট্রিম খাল, কল্যাণপুর মেইন খাল ও দ্বিগুণ খালের উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর কল্যাণপুর খালসহ অন্যান্য খালের অবৈধ স্থাপনা ও দখল থেকে খাল উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়েছে। কল্যাণপুর ও রামচন্দ্রপুর খালের পাড় বাঁধাই করা হয়েছে। ৯৫ ভাগ বিলবোর্ড অপসারিত ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নোত্তরে এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, রাজধানী ঢাকা ঝুঁকিপূর্ণ বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে এ অভিযোগ সত্য নয়। ঢাকা মহানগরীতে সকল বিলবোর্ড অপসারণে বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মহানগরী এলাকার প্রায় ৯৫ ভাগ বিলবোর্ড অপসারিত হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবশিষ্ট বিলবোর্ড অপসারিত হবে। ট্যাক্স ফাঁকি রোধে সিটি কর্পোরেশনে অভিন্ন ইনডেক্স নম্বর ॥ সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, সিটি কর্পোরেশনে অধিকতর নাগরিক সেবা নিশ্চিতে ট্যাক্স আদায় ও কর ফাঁকি রোধে একটি অভিন্ন ইনডেক্স নম্বর চালু করবে সরকার। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কপোঁরেশনসহ দেশের সব সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং নম্বরের সঙ্গে নাগরিক সেবা নিশ্চিত, ট্যাক্স আদায় ও কর ফাঁকি রোধকল্পে একটি অভিন্ন ইনডেক্স নম্বর চালুর পরিকল্পনা সরকারের আছে। মন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন আরবান পাবলিক এ্যান্ড হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ৭টি সিটি কর্পোরেশনের হিসাব ও রাজস্ব বিষয়ক কার্যক্রম অটোমেশন করার জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের কারিগরি মূল্যায়ন শেষ করে উন্নয়ন সহযোগী এডিবির প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। এডিবির অনুমোদন প্রাপ্তির পর পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত গ্রহণ করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে ট্যাক্স আদায় ও কর ফাঁকি রোধে একটি অভিন্ন ইনডেক্স নম্বর চালু করা সম্ভব হবে। দেখাইলেন মুরগি, দিলেন ডিম ॥ প্রশ্নোত্তরপর্বে এমপিদের বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম এলজিআরডি মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, মাননীয় মন্ত্রী, দেখাইলেন মুরগি, দিলেন ডিম। এ দিয়ে কি করব? দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনের চতুর্থ দিনে প্রশ্নোত্তরকালে স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফকে উদ্দেশ করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোঃ সেলিম “মাননীয় মন্ত্রী দেখাইলেন মুরগি, দিলেন ডিম” এই দিয়ে কি করব? তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ সবাই জানে এমপিদের নামে ২০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে রাস্তা-ঘাট সংস্কারে। কিন্তু দিলেন মাত্র ৩ থেকে ৫ কোটি। এ দিয়ে কি করমু। জবাবে মন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে চলে। আপনি (হাজী সেলিম) যদি সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন চান, রাজস্ব বাড়াতে চান, তাহলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের সঙ্গে বসুন, ট্যাক্স বাড়াতে চাইলে বাড়ান। এজন্য সরকারের যে যে সহযোগিতা করার প্রয়োজন করবে। আর যদি মনে করেন সিটি কর্পোরেশনের সব দায়িত্ব সরকারের তাহলে তো সিটি করপোরেশনের অস্তিত্বই থাকে না।
×