ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ওদের বিচার দাবি ইসলামী ছাত্রসেনার সমাবেশে

জামায়াত-হেফাজতের মাদ্রাসা জঙ্গীবাদের প্রজননক্ষেত্র

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

জামায়াত-হেফাজতের মাদ্রাসা জঙ্গীবাদের প্রজননক্ষেত্র

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জামায়াত-হেফাজত নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গীবাদের প্রজননক্ষেত্র অভিহিত করে দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি উঠেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার মহাসমাবেশে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে হাজার হাজার ছাত্র, ইসলামী চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদ জামায়াত-হেফাজতকে কোরান-সুন্নাহ অপব্যাখ্যাকারী ইসলামের দুশমন হিসেবে অভিহিত করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে তারা বলেছেন, আইএস, আল কায়েদার মানসপুত্র জামায়াত-হেফাজতীদের ছাড় দেয়া চলবে না। ওলামায়ে কেরাম ও বিচারপতিদের সমন্বয়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে কোরান-সুন্নাহর অপব্যাখ্যার অপরাধে মওদুদীবাদী (জামায়াত) ও হেফাজতীদের বিচার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ইসলামী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার তিন যুগ পূর্তি উপলক্ষে শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয় এ মহাসমাবেশ। যেখানে জঙ্গীদের অর্থের যোগানদাতা সকল প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জামায়াত ও হেফাজতের মতাদর্শ এসেছে ওহাবী থেকে। বিশ্বব্যাপী জঙ্গীবাদের মূল হোতা ওহাবীরা। বাংলাদেশেও হরকত-উল-জিহাদ, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন এদের হাতেই প্রতিষ্ঠিত। এদের ঠেকাতে না পারলে এদেশে জঙ্গীবাদ ঠেকানো যাবে না। ইসলামী নেতারা ঘোষণা দেন, বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ইসলামের নামধারী স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গী গোষ্ঠীর কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় এদেশের সুন্নী মুসলমানরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ছাত্র সেনার সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল হক চিশতি। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা এম এ মান্নান। আল্লামা আবদুল করিম সিরাজনগরী, আলহাজ শাহ্ আহসানুজ্জামান, আল্লামা সৈয়দ মসিহুদ্দৌলা, আল্লামা আবুল কাশেম নূরী, আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, গাজী এম এ ওয়াহীদ সাবুরী, আলহাজ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুন, আবু জাফর মুঈনুদ্দীন, সৈয়দ মোজাফ্ফর আহমাদ, এ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, অধ্যাপক এম এ মোমেন, আল্লামা মাসউদ হোসাইন আলকাদেরী, কাজী মুহাম্মদ সোলায়মান চৌধুরী, অধ্যক্ষ আলী মুহাম্মদ চৌধুরী, এ্যাডভোকেট কাজী ইসলাম উদ্দীন দুলাল, মুহাম্মদ আবদুল মতিন, মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন রব্বানি, ছাত্রসেনা সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। প্রধান অতিথি আল্লামা এম এ মান্নান পে স্কেল ইস্যুতে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, শিক্ষকদের অমর্যাদা করে মর্যাদাশীল জাতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তার অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলো ও শাসকগোষ্ঠী নিজেদের দলীয় ও গোষ্ঠী স্বার্থে রাজনীতি করায় দেশবাসীর স্বার্থ উপেক্ষিত থেকে গেছে। অথচ এই গরিব দেশে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে নেয়ার জন্য গণকল্যাণমুখী সমন্বয়ের রাজনীতি বড় প্রয়োজন। সুফিবাদী মানবতাবাদী চেতনার ধারক ও বাহকরাই ইসলামের প্রতীক মন্তব্য করে এ ইসলামী নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একমাত্র জাতীয় ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা। মাওলানা এম এ মতিন পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পদক্ষেপ নেয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে বলেন, যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি কোরান-সুন্নাহর অপব্যাখ্যার অপরাধে মওদুদীবাদী ও হেফাজতীদের বিচারের জন্য শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। নাশকতার অর্থের যোগানদাতা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ভূমিকা প্রত্যাশা করে বলেন, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় এদেশের সুন্নী মুসলমানরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
×