ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেমির লড়াইয়ে বাহরাইনের কাছে বাংলাদেশের হার ১-০ গোলে

ফাইনালে মামুনুলরা এখন দর্শক

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

ফাইনালে মামুনুলরা এখন দর্শক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ধাপে ধাপে অভীষ্ট লক্ষ্যের পানে উপনীত হতে হতেও হলো না। স্বপ্নভঙ্গ হলো এক ধাপ আগেই। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালেই থমকে গেছে বাংলাদেশ ফুটবল দলের পথচলা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার অনুষ্ঠিত প্রথম সেমির ম্যাচে বাহরাইন অনুর্ধ-২৩ ফুটবল দলের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে স্বাগতিক দল। গত আসরে তাও ফাইনাল খেলেছিল (রানার্সআপ) বাংলাদেশ। এবার তাও পারেনি তারা। ভারতের কেরলে অনুষ্ঠিত সাফ সুজুকি কাপের নিদারণ ব্যর্থতার পর আশা করা হয়েছিল এবার ঘরের মাটিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের শিরোপা জিতবে মামুনুলরা। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল মারুফুল হকের শিষ্যরা। কিন্তু গ্রুপ পর্বের পরের ম্যাচগুলোতে তাদের পারফর্মেন্স ছিল গড়পড়তায় হতাশাব্যঞ্জক। অন্য দলের (শ্রীলঙ্কা) জয়ে মিলেছিল শেষ চারে যাবার টিকেট। পুরো টুর্নামেন্ট বিচার করলে খুব একটা শক্তিশালী দল নয় বাহরাইন যুব দল। তাদের সঙ্গে গ্রুপ ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ যুব দল। তারা যদি ড্র করতে পারে তাহলে জাতীয় দলের তো হেসে খেলেই জেতা উচিত ছিল। কিন্তু উল্টো তারাই কি না হেরে বসলো, দেশের ফুটবলপ্রেমীদের হতাশা উপহার দিল! ম্যাচের ২ মিনিটে পোস্টের ২৫ গজ দূরে ফ্রি কিক পায় বাহরাইন। মিডফিল্ডার নাসির আল কাসমির শট পোস্ট ছুঁয়ে বাইরে চলে যাওয়ায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ৭ মিনিটে মিঠুন বলের পেছনে ছুটতে গেলে তার বুট গোলরক্ষক মাহবুবের মাথায় লাগলে রেফারি হলুদ কার্ড দেখান মিঠুনকে। ২৪ মিনিটে হেমন্তর পাস থেকে বল পেয়ে মিঠুনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। একই মিনিটে মিঠুন ও রনির মাঝ দিয়ে বল চলে গেলেও তারা সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ৩০ মিনিটে রায়হানের থ্রো থেকে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। কিন্তু বল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩৯ মিনিটে বল নিয়ে বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়েন মিডফিল্ডার বাহরাইনের মোহাম্মদ আলনার। তাকে ফাউল করেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন। ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন রেফারি সিভাকরণ। বক্সের কোণা থেকে ফরোয়ার্ড আনোয়ার আলীর ফ্রি কিক ফিস্ট করে নিশ্চিত গোল থেকে বাহরাইনকে বঞ্চিত করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহীদুল আলম। ইনজুরি সময়ে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের শট ফিস্ট করেন গোলরক্ষক শহীদুল। ফিরতি বলে শহীদুলের মাথার ওপর দিয়ে হেড নেন মিডফিল্ডার ইব্রাহিম আলহুতি। শহীদুল পেছনে ফিরে দৌড়েও বলের নাগাল পাননি। বল আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। ৪৮ মিনিটে মামুনুলের শট বক্সে পেয়ে হেড নিলেও বলের সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে পারেননি সাখাওয়াত রনি। ৫২ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে মিঠুনের শট বক্সে পেয়ে হেড করেন রনি। কিন্তু বল পোস্টে লেগে গোলরক্ষকের কাছে চলে যায়। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। ৮০ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন রনি। ৮১ মিনিটে সোহেল রানার কর্নার বক্সে বিপদমুক্ত করেন বাহরাইনের ডিফেন্ডারা। ৮৭ মিনিটে রেফারির সাথে বাজে আচরণ করায় বহিষ্কৃত হয়ে ডাগআউট ছাড়েন বাহরাইনের কোচ মারজান ইদ। তাতে অবশ্য তার শিষ্যদের কোন সমস্যা হয়নি। অনেক চেষ্টা করেও সমতায় ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারেনি অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত। রেফারি ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজালে ১-০ গোলের তিক্ত হার নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। ১৭৯ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশ এবারের টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে তাদের প্রথম ম্যাচে ৪-২ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুভ সূচনা করে। দ্বিতীয় ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে মালয়েশিয়া একাদশের সঙ্গে। তৃতীয় ও শেষ গ্রুপ ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে নেপালের সঙ্গে। সেই সঙ্গে হয় অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং নাম লেখায় শেষ চারে। পক্ষান্তরে ১২১ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘বি’ গ্রুপে বাহরাইন তাদের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ অলিম্পিক দলের সঙ্গে। দ্বিতীয় ম্যাচে ১-০ গোলে হারায় কম্বোডিয়াকে। তৃতীয় ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে মালদ্বীপের সঙ্গে। ফলে এই গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে তারা নিশ্চিত করে সেমিতে খেলা।
×