ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেজরিওয়ালের মুখে কালি!

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

কেজরিওয়ালের মুখে কালি!

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ভারতের ক্যারিসম্যাটিক নেতা ভাবা হতো। কারণ অনেক অল্প সময়ের মধ্যে তিনি দুইবার দিল্লীর মসনদে বসেছেন। তবে দ্বিতীয় দফায় তার সময় যেন ভাল যাচ্ছে না। নানা কারণে শুনতে হচ্ছে সমালোচনা। আবার এরই মধ্যে রবিবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। তার মুখের ওপর কালি ছুড়ে প্রতিবাদ করল এক নারী। দিল্লীর ছত্রসাল স্টেডিয়াম। পাঁচ হাজারের মতো অতিথি এসেছেন। সবার উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সবার ভেতরেই বেশ উৎসবের আমেজ। আর উৎসবমুখর পরিবেশ হবেই না বা কেন? আজ তো তারা এখানে জমায়েত হয়েছেন একটি বিশেষ সাফল্য উদযাপন করতে। কিছুদিন আগেই দিল্লীর সড়কগুলোর যানজট নিরসনে দারুণ একটি পদক্ষেপ নেয় আম আদমি সরকার। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শুধু জোড়-বেজোড় সংখ্যার ভিত্তিতে ব্যক্তিগত পরিবহনগুলো রাস্তায় বের হতে পারবে বলে নিয়ম করে দেয়া হয়। এই নিয়মে বেশ সুফল পাওয়া যায়। কমে যায় অসহনীয় যানজট আর দূষণের মাত্রা। আম আদমি পার্টিও এই সাফল্য উদযাপন করতেই রবিবার আয়োজন করা হয় এই সমাবেশের। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে যখন উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছিলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তখনই ঘটে এক মহাবিপত্তি। কেজরিওয়ালের মুখ লক্ষ্য করে কালি ছুড়ে মারেন এক নারী। শুধু কালি ছুড়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, আরও ছুড়ে মারেন হাতে থাকা কাগজ ও সিডি। অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই নারীকে আটক করে পুলিশ। ভাবনা অরোরা (২৬) নামের ওই নারী ‘আম আদমি সেনা’ নামে একটি দলের সদস্য। আম আদমি পার্টির বিদ্রোহী সদস্যদের নিয়ে এ দল গঠিত। এ ঘটনার পর নিয়মানুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর দিকে কালি ছুড়ে মারা ঘটনায় একটি মামলাও করা হয়েছে। কেজরিওয়ালকে লক্ষ্য করে কালি ছোড়ার ঘটনায় আম আদমি পার্টি সরকারের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনাকে দিল্লী পুলিশের নিরাপত্তা ঘাটতি বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীষ সিসোদিয়া। সেই সঙ্গে বিজেপিকেও দূষছেন তিনি। মনীষ বলেন, যদি কেউ কেজরিওয়ালের দিকে কালির বদলে এসিড ছুড়ত? এমনকি কালি ছুড়ে মারার পরও ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়নি। রীতিমতো টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে বক্তব্যও দিয়েছে এ মহিলা। আমার মনে হয়, এটা পুলিশের ষড়যন্ত্র। দেখে মনে হয়েছে, কেজরিওয়ালের ওপর হামলার ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল দিল্লী পুলিশ। উপ-মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, তিনি এ ঘটনার মধ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্রও দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মন্ত্রিসভায় কেজরিওয়ালকে আক্রমণ করা হতে পারে। এছাড়া জোড়-বেজোড় গাড়ি পদ্ধতি ব্যবহার করে আম আদমি পার্টি যে সাফল্য ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে, সেটাকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশও এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। তবে দিল্লী বিজেপির প্র্রধান সতীশ উপাধ্যায় এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তবে এটাও ঠিক যে, এ ঘটনার মাধ্যমে আম আদমি পার্টির প্রতি জনগণের যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে, সেটাই ফুটে উঠেছে।-এনডিটিভি অবলম্বনে।
×