ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কর্পোরেট অফিসে করণীয়

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬

কর্পোরেট অফিসে করণীয়

ঢাকাসহ বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় কর্পোরেট অফিসে যাঁরা চাকরিরত আছেন; কি ছোট, কি বড় পদে। বিশেষ করে যাঁদের জীবনে প্রথম কর্পোরেট চাকরি। ক্যাম্পাস জীবনের এলোমেলো জীবন শেষ করে যখন চাকরি জীবন শুরু করবেন তখন নতুন অবস্থায় আপনাকে নানা রকম প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হতে পারে। ছাত্র জীবন আর চাকরি জীবনের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাই কিছু বিষয়-নিয়ম মেনে চললে আপনি চাকরি জীবনেও অনেকটাই ভাল থাকবেন। আপনাকে অফিসের প্রথম যে কাজটি অবশ্যই করতে হবে তা হলো, অফিসের সময় মেনে চলা। আপনাকে সঠিক সময়ে অফিসে আসা এবং অফিস ত্যাগ করার অভ্যাস করতে হবে। নতুন অবস্থায় একটু ছাড় পেলেও বসের সুনজরে পড়তে চাইলে অবশ্যই সময় মেনে অফিস করুন। কর্পোরেট অফিসসমূহে স্পার্টনেস জরুরী একটি বিষয়। তাই যথাসম্ভব চেষ্টা করুন স্মার্ট হয়ে অফিসে যেতে। অফিসের ভেতরে থাকা অবস্থায় আপনাকে কিছু বিষয়ে অবশ্যই ফর্মালিটি মেনে চলতে হবে। না হলে অফিসে আপনার সুনাম বাড়বে না। যেমন, অফিসে একসঙ্গে যখন অনেক কলিগ থাকবে সেখানে সিনিয়র কলিগদের অবশ্যই সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে। আর জুনিয়রদের যথাসম্ভব সাহায্য করতে হবে। অফিসের ভেতর মোবাইলে কথা বলার দরকার হলে, সেটা এমনভাবে বলতে হবে যেন অন্যের কোন সমস্যা না হয়। ভুলেও অনুমতি ছাড়া অন্যের আসনে বসা যাবে না। যদি আসন ফাঁকা থাকে তবুও না। অফিসের ভেতর অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কলিগদের সঙ্গে তর্ক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অফিসের বস কোন দায়িত্ব দিলে তা নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী করতে হবে। অন্যে করল কি করল না তা আপনার বলার দরকার নেই। কারণ এটা বলার দায়িত্ব বসের। অফিসে কখনই জুতা-মোজা খুলে সবার সামনে চেয়ারে পা তুলে বসা যাবে না। এটা অন্য কলিগের কাছে খুবই বিরক্তিকর একটি বিষয়। ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে এমনভাবে করতে হবে যাতে কারও সমস্যা না হয়। একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী। অফিসে বিভিন্ন সময় খাওয়ার আয়োজন হয়ে থাকে। এই খাওয়াদাওয়ার অনুষ্ঠানে নিজেকে সংযত রাখা এবং খাওয়াদাওয়ার কম-বেশি নিয়ে কোন মন্তব্য না করা। বেশিরভাগ অফিসে একটি কমন সমস্যা থাকে। তা হলোÑ এক কলিগ আরেক কলিগের বিরুদ্ধে শুধু শুধু নালিস, বদনাম করা। বসের কাছে নিজে ভাল হতে এটা কিন্তু খুবই নোংরা একটি কাজ। এটাকে গীবত করাও বোঝায়। এ কাজ যারা করে তারা খুবই নীচু মনের মানুষ। এদের থেকে দূরে থাকতে হবে। এই নোংরা কাজ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যদি অফিসে বিপরীত লিঙ্গের কোন কলিগ থাকে তাহলে তার সঙ্গে অন্য কলিগের মতোই স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে হবে। ভুলেও বিপরীত লিঙ্গের কলিগকে বেশি গুরুত্ব দেয়া যাবে না। এতে কিন্তু অফিসে নিজ সুনাম নষ্ট হবে। হয়ত আপনার সামনে কিছু বলবে না কিন্তু আপনার অনুপস্থিতিতে সমালোচনা হবে। অতএব, এ বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। অফিসে নিম্নপদস্থ লোকদের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক রাখতে হবে। এতে অফিসে আপনার সুনাম বাড়বে। অফিসে কিছু কলিগ থাকে যারা হয়ত বসের সঙ্গে ভাল সম্পর্কের কারণে সবার থেকে বেশি বেশি সুবিধা নিয়ে থাকে। হয়ত ভদ্রতার খাতিরে অন্যেরা এটা বলে না। কিন্তু হঠাৎ এটা অফিসে জানাজানি হলে সেদিন আপনাকে সবার মাঝে ছোট হতে হবে। তাই এসব বিষয়ে সাবধান থাকা। অবশেষে একটি কথা, একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে সব জায়গাতেই নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন আপনার কথায়, কাজের মাধ্যমেই আপনার শিক্ষার বহির্প্রকাশ ঘটে। পরিবেশ বুঝে কাজ করতে, বলতে হবে। অন্য কোন পথ না খুঁজে কাজের মাধ্যমেই বসকে খুশি করতে হবে। এতে অফিসে স্বীয় চাকরির অবস্থান অনেক ভাল হবে। একটি কথা সব সময় মনে রাখতে হবে ‘বিজয়ীরা ভিন্ন কাজ করে না, তবে একই কাজ তারা ভিন্ন পথে করে।’ বি:দ্র: লেখাটির উদ্দেশ্য কাউকে হেয় করা নয়। সঠিক বিষয়টি জানানোই লেখাটির মূল উদ্দেশ্য। এসআই শহিদ ছবি : শাহরিয়ার মারসেল মডেল : রাসেল, নিহারীকা ও সেলিম
×