ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

হিম শীতে এক্সিকিউটিভ স্যুট!

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

হিম শীতে এক্সিকিউটিভ স্যুট!

পান্থ আফজাল প্রকৃতির ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জীবনধারারও পরিবর্তন চলে আসে। হিমেল হাওয়ার দিনে স্থবিরতাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই এ সময় গরম কাপড়ের প্রয়োজন হয়ে ওঠে। এই মৌসুমটি বেশ উপভোগ্যও বটে। এমন সময়ে না ভারি শীতের পোশাক পরা যায়, না বেছে নেয়া যায় সাধারণ পোশাক। তবে এ হালকা শীতটা কিন্তু ফ্যাশনের জন্য দারুণ উপযোগী। চমৎকার সব স্টাইলিশ আর রং-বেরঙের পোশাক হতে পারে আপনার এ সময়ের সর্বোত্তম ফ্যাশন। আধুনিক সময়ে এসে ঋতু বা আবহাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে নিজেকে উপস্থাপনের ড্রেস কোডটাও যেন একটু ভিন্ন। হালকা শীতে কন্ট্রাস্ট শার্ট-প্যান্টের সঙ্গে মিলিয়ে টাই, ফুলহাতা কাফলিংক শার্ট, কালো বা ডার্ক রঙের জুতা, হাতে গর্জিয়াস ঘড়ি আর এর সঙ্গে চাপিয়ে দেয়া বাহারি ব্লেজার বা কোর্ট- এটাই চলতি স্টাইল। মেনস ক্লাব, ক্যাটস আই, প্লাস পয়েন্ট, রিচম্যান, অঞ্জনস, কে-ক্র্যাফটসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে শীতের পোশাক তৈরির প্রতিযোগিতা যেন বেড়ে যায় হিম শীতের শুরুতেই। তবে আধুনিকতা আর যুগের ফ্যাশনে পুরুষ ও মেয়েদের কাছে নিত্যনতুন কালারফুল ব্লেজার, দারুণ স্টাইলিশ ফুল ও হাফশার্ট, স্কাফ কিংবা টাই অর্থাৎ কমপ্লিট স্যুট জনপ্রিয় হচ্ছে। স্মার্টলুক আর পরিবর্তনের ধারায় এক্সিকিউটিভ ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচ করে কালারফুল স্কার্ফের ব্যবহার আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। সব সময়ই তরুণদের চাহিদা থাকে নতুনের প্রতি। হালের ফ্যাশনে তাই প্রতিনিয়ত যোগ হয় নতুন মাত্রা। পোশাকের রং-ঢংয়ে চাই নতুনত্ব। এবারের শীতে তাদের শীত নিবারণের পাশাপাশি স্টাইল রক্ষা করাটাও জরুরী হয়ে পড়েছে। তবে ব্লেজার, কোট বা হাফকোট পরার সময় শরীরের গঠন ও মুখের গড়ন বিবেচনা করা উচিত। উচ্চতা কম হলে স্ট্রাইপ ধরনের পরা ভাল। এক রঙের চেক বেশি মানানসই যাদের উচ্চতা বেশি। যারা মাঝারি গড়নের তারা যে কোনটিই পরতে পারেন। মোটা হলে এক বোতাম, চিকন ও মাঝারি গড়ন হলে দু-তিন বোতাম দিয়ে ব্লেজার, কোট কিম্বা হাফকোট পরলে ভাল দেখায়; আর সেই সঙ্গে প্যান্ট ও ম্যাচিং শার্ট। এক বোতামের ব্লেজার মেয়েদের বেশি মানায়। ব্লেজারের সঙ্গে মানানসই হাইনেক বুট, শার্ট, প্যান্ট ম্যাচিং করে পরে গলায় পেঁচিয়ে নিতে পারেন স্কার্ফ বা টাই। ফ্যাশনের বিষয়ে বেশ রুচিশীল নয় এমন কোন তরুণ-তরুণী বর্তমানে খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ। ফরমাল গেটআপে শার্টের ক্ষেত্রে কিছুটা ডিপ কালারের শার্ট মানানসই ও আরামদায়ক হবে। ঢিলেঢালা পোশাককে পেছনে ফেলে এসেছি অনেক আগেই। বর্তমানে সেমিফিটিং শার্ট ও সেমি ন্যারো প্যান্ট বেশ চলছে। আর চেক বা স্ট্রাইপের শার্টের চেয়ে এক কালারের শার্টই ট্রেন্ডি। পোশাকে প্রতিনিয়তই নতুনত্ব আনছে আমাদের দেশের ব্র্যান্ডগুলো। বর্তমানে শার্টের ক্ষেত্রে ট্রেন্ড হলো সিøম ফিট শার্ট। এই শার্টগুলো এক কালারের কন্ট্রাস্ট বা লাইট কালারের। এছাড়াও বডি ফিটিং শার্ট ও সেমি ন্যারো প্যান্টের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বাজার ঘুরে বেশ কয়েক ধরনের শার্ট ও প্যান্ট দেখা গেছে। বর্তমান ট্রেন্ডের ব্লেজারের কাপড়ের বিশেষ পরিবর্তনের পাশাপাশি এর বাটনগুলোয় অসাধারণ সব মনকাড়া লুক ফুটে উঠেছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, ব্লেজারের সুরুচিপূর্ণ আকৃতি ও কাটে এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তাই এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ফ্যাশন হাউসগুলো বাজারে এনেছে ফ্যাশনেবল ব্লেজার। তবে ধরাবাঁধা এসবের বাইরেও ব্লেজার জগতে যোগ হয়েছে নতুন আরও কয়েকটি রং। এরমধ্যে রয়েছে- নীল, হলুদ, লাল ও গোলাপী। আর বাটনের দিক থেকে রয়েছে এক, দুই, তিন থেকে পাঁচ বাটনের ব্লেজার। ডিজাইনের মধ্যে রয়েছে- বাটন লেস, এমব্রয়ডারি, টপসিন, শার্ট, কলারসহ হাজারো ডিজাইনের ব্লেজার। ব্লেজারে ব্যবহার হয়েছে লেদার, উলেন আর কটন। এর কোনটিতে কোট কলার থাকলেও অধিকাংশ ব্লেজারের কলার শার্টের কলারের নিচে পরার মতো উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। ব্লেজারের নিচের অংশে রাখা হয়েছে রাউন্ড শেপ। আর পকেট ফ্যাশন হিসেবে ব্যবহার হয়েছে এক, দুই বা তিনটি পকেট। ব্লেজারের ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন লোগো আর লেখার কাজ। এসব ব্লেজারে এসেছে নতুনত্বের ছোঁয়া।তাই বর্তমান সময়ে শীতের পোশাকে স্টাইল হিসেবে বাহারি ব্লেজারের চলটাই সবচেয়ে বেশি। ছেলেদের শীতের পোশাকে এবার অবশ্য জনপ্রিয় হালকা ধরনের ব্লেজার। এগুলো তৈরি করা হয়েছে প্রয়োজন ও ফ্যাশন দুটি বিষয়ের কথা মাথায় রেখে। এক সময় ছিল, যখন ব্লেজার বলতে শুধুই ফরমাল কোট বা শর্ট কোটকে বোঝানো হতো। তখনকার কোট বা ব্লেজারে ছিল শুধু অফিসিয়াল লুক। আর ফ্যাশনটা ছিল শুধু ছেলেদের জন্য। এখন সময় বদলেছে। সময় বদলের সঙ্গে মৌসুমেরও পরিবর্তন এসেছে। তাই ফ্যাশন হিসেবে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও এখন ব্লেজার পরছেন। তরুণীদের ক্ষেত্রে টপস, প্যান্ট-ফতুয়া, শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য এই ব্লেজার মানানসই। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্যান্ট ও লেগিংসের ব্যবহার চলছে। তার সঙ্গে বিভিন্ন স্টাইলের ব্লেজার অতিসহজেই মানিয়ে যায়। এসবের কাটিং প্যাটার্নের মধ্যেও বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। কিছু ব্লেজার সামনে খোলা। তাতে হয়ত বোতাম বা ফিতা ব্যবহার করা হয়েছে আটকানোর জন্য। ক্ষেত্রবিশেষ সালোয়ার-কামিজের সঙ্গেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ট শিরত, ফুলশার্ট আর ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে ব্লেজার মানিয়ে যায় ভালভাবেই। এ কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণীদের জন্য বাজারে এসেছে নানা রং ও ঢংয়ের ব্লেজার। এরমধ্যে দেশী-বিদেশী সংগ্রহও রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমান ট্রেন্ডের ব্লেজারের কাপড়ের বিশেষ পরিবর্তনের পাশাপাশি এর বাটনগুলোয় অসাধারণ সব মনকাড়া লুক ফুটে উঠেছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, ব্লেজারের সুরুচিপূর্ণ আকৃতি ও কাটে এসেছে আধুনিক মানের ছোঁয়া। দেশীয় ব্র্যান্ড মেনজ ক্লাব, জেন্টল পার্ক, ক্যাটস আই, এক্সট্যাসি, রেক্স, ইয়োল বেশকিছু ইউনিক ডিজাইন ডেভলপ করেছে এই শীতে। জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেতা ইমতু রাতিস ব্লেজারে ফ্যাশন সম্পর্কে বলেন, ‘শীতের ফ্যাশন হিসেবে কমপ্লিট ড্রেসের ক্ষেত্রে আমি মেনস ক্লাবকেই বেশি প্রিফার করি। রিঙ্কল ফ্রি উলেন কাপড়ই ব্লেজার বানানোর জন্য ভাল। তবে রেমি কটন, টুইড কাপড়ে তৈরি করা ব্লেজারও আমার পছন্দ। শার্টের ক্ষেত্রে চেক ও স্ট্রাইপ চলে সব সময়ই। একরঙা ফ্যাশন তো চলছেই। মাথায় রাখতে হবে, গাঢ় ফ্যাশনের সঙ্গে হালকা রঙের শার্ট আর হালকা রঙের সঙ্গে গাঢ় রঙের শার্ট মানানসই। সঙ্গে স্কার্ফ বা টাই তো আছেই।’ আজকাল পোশাকের ভেতরে গরম কাপড় বা ‘ইনার’ পরে নেন অনেকে। ফলে জ্যাকেট বা ব্লেজার একটু পাতলা হলেও চলে। ছবি : রনি রেজাউল মডেল : বন্যা, মোস্তফা সামি ও রাজ পোশাক : ইজি ও মেনজ ক্লাব
×