ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে প্রেমিকের হুমকিতে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৫ মে ২০১৫

টাঙ্গাইলে প্রেমিকের হুমকিতে স্কুল  ছাত্রীর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৪ মে ॥ শহরের এনায়েতপুর পালপাড়ায় প্রেমিকের হুমকিতে বিয়ের ৬ দিন আগেই বিথী রানী পাল নামে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ মে) তার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল। সদর থানায় মামলা হলেও পুলিশ হুমকিদাতাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ঘটনায় থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। আসামি ধরার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। পুলিশকে ম্যানেজ করে আসামিকে গ্রেফতার না করার অভিযোগ করেছে বাদীর পরিবার। এ ঘটনাটি টাঙ্গাইলে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, পৌরসভার এনায়েতপুর উত্তর পালপাড়ার সত্য রঞ্জন পালের মেয়ে বিথী রানী পাল জেলা সদর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। তাকে প্রাইভেট পড়াতো হাজী আবুল হোসেন ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (হ্যাবিট) শিক্ষক একই এলাকার সুশীল চন্দ্র পালের ছেলে মাধব চন্দ্র পাল (২৬)। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে মাধব চন্দ্র পাল ছাত্রী বিথীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্যায়ে তা দৈহিক সম্পর্কে রূপ নেয়। এ অবস্থায় বিয়ের জন্য চাপ দেয় বিথী। কিন্তু মাধব বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে বিথী। তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হলে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার কারণ জানতে চাইলে অভিভাবকদের সমস্ত ঘটনা খুলে বলে বিথী। এ ব্যাপারে এলাকায় সালিশী বৈঠক বসে। সেখানেও সকলের উপস্থিতিতে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় মাধব। এক পর্যায়ে নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ যৌতুক নিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়। উভয়পক্ষের সম্মতিতে সালিশী বৈঠকে মাধবকে ৫ হাজার ১ টাকা নগদ প্রদান করা হয় এবং ২৫ মে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। যৌতুকের বাকি টাকা জোগাড় ও বিয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বিথীর পরিবার। এরই মধ্যে গত ১৯ মে সকাল পৌনে নয়টার দিকে মাধব চন্দ্র পাল ০১৮৩৯-৫৯৪২৭২ নম্বর থেকে বিথীর মায়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে বিথীকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘চক্রান্তের শিকার হয়ে আমি বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলাম, বিয়ের পর তোকে শান্তিতে থাকতে দেব না, শাস্তি দেব। তুই আমাকে বিয়ে করার চেয়ে গলায় দড়ি দে বা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা কর- সেটাই তোর জন্য ভাল হবে।’ মাধবের বলা কথাগুলো মায়ের কাছে বলে কাঁদতে কাঁদতে নিজের ঘরে চলে যায় বিথী। অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও ঘর থেকে বের না হওয়ায় বাড়ির লোকদের সন্দেহ হয়। তারা দরজা ভেঙ্গে দেখতে পায়, বিথী পরনের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার (ধর্না) সাথে ঝুলে আছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা সত্য রঞ্জন পাল বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় ৩০৬/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে।
×