ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কামারুজ্জামানের ফাঁসি ফেসবুকে বুয়েট শিক্ষকের তির্যক মন্তব্যে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

কামারুজ্জামানের ফাঁসি ফেসবুকে বুয়েট শিক্ষকের তির্যক মন্তব্যে তোলপাড়

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকরের পর অসন্তোষ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের একটি ক্লোজ গ্রুপের পোস্টে মন্তব্য করায় ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষক। শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও ওই শিক্ষককে তার নিজ রুমে গিয়ে এ ধরনের মন্তব্যের কারণ জানতে চাইলে শিক্ষকের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। এতে তিনি সামান্য আহত হন। এই ঘটনার পর বুয়েট ছাত্রলীগ কমিটির নেতৃবৃন্দকে বহিষ্কারের দাবিতে সাত দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি। এই কর্মসূচীর বিপরীতে বুয়েট থেকে জামায়াতি শিক্ষক অপসারণ করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের পাল্টা কর্মসূচী দিয়েছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগ। ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জামায়াতে ইসলামের আদর্শের অনুসারী বলে একধিক সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুর একটার দিকে কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করা উপলক্ষে নব গঠিত বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের মিষ্টিমুখ করাতে যান। এর অংশ হিসেবে তারা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওই শিক্ষকের কক্ষে যান। তাদের দেখে ওই শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে উঠেন ও কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এরপর তিনি একজন শিক্ষার্থীকে চড় মারলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়। তখন উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে কক্ষ থেকে বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে নিয়ে যায় এবং ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইতে বলে। পরে অন্যান্য জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা এসে তাকে নিরাপদে নিয়ে যায়। এতে নেতৃত্ব দেন বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ্র জ্যোতি টিকাদার, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক প্রমুখ। এমন পরিস্থিতিতে সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য খালেদা ইকরাম সাংবাদিকদের বলেন, এমন ঘটনা আমাদের জন্য খুবই অপ্রীতিকর। ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত হয় ফেসবুকের পোস্ট থেকে। ‘কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর’ শিরোনামের একটি খবর বুয়েটের শিক্ষার্থী দিপু সরকার শনিবার ‘আড়ি পেতে শোনা’ নামে বুয়েটের একটি গ্রুপে পোস্ট দেয়। এরপর ওই শিক্ষার্থীর পোস্টের নিচে ওই শিক্ষক মন্তব্য করেন ‘এটা কখনই হবে না। অপেক্ষা কর ও দেখ। দিন দিন তোমরা সবাই রাজাকারদের চেয়েও খারাপ হবে। অবিচার কখনই ভাল হয় না।’ এরপর বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মন্তব্যের মাধ্যমে ওইশিক্ষকের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। এতে তিনি আরও উগ্র হয়ে ওঠেন এবং এরকম মন্তব্য করা অব্যাহত রাখেন। তিনি মন্তব্য করেন ‘জয় মা কালি, জয় ইন্ডিয়া’। তিনি আরও লেখেন, ‘বলুন জয় বাংলাদেশ এটা অরাজনৈতিক। কেননা জয় বাংলা দুটি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে।’
×