
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির সহ-সভাপতি মাওলানা হাবীব আহম্মদ শিহাব বলেছেন, “সমাজের সবচেয়ে ভালো মানুষ হচ্ছেন ইমাম। তারা অপরাধের পথে নয়, মানুষকে কল্যাণের পথে আহ্বান জানান। সেই ইমামকে পিটিয়ে হত্যা ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ। এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। তা না হলে সারাদেশের প্রায় ৯ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিনদের নিয়ে আমরা পুলিশ প্রধানের কাছে যাবো। প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার কাছেও বিচার চাইবো। তবে এখনই নয়—প্রথমে আমরা দেখবো স্থানীয় প্রশাসন কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”
শনিবার (৭ জুন) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের পূর্ব রাজিবপুর গ্রামে নিহত মাওলানা কাউছার হোসেন মিলনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত ও কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
মাওলানা কাউছার স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি মৃত মমিন উল্লাহর ছেলে।
মাওলানা হাবীব আরও বলেন, “অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না—তাদের পরিচয় একটাই, তারা অপরাধী। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাবো, কোনো সন্ত্রাসীকে যেন আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেয় বা প্রশাসনে তদবির না করে। বরং প্রশাসনকে সহযোগিতা করুক, যাতে প্রকৃত অপরাধীরা গ্রেফতার হয়। আমরা আশা করি, ইমাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে।”
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, “একটি সামাজিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল সন্ত্রাসী নিহত ইমামের ছোট ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। তখন চাচাকে রক্ষার জন্য ঘটনাস্থলে ছুটে যান মাওলানা কাউছারের ছেলে। তাকেও হামলার শিকার হতে হয়। সন্তানকে বাঁচাতে ছুটে যান ইমাম সাহেব নিজেও। তখন সন্ত্রাসীরা তাকেও নির্মমভাবে মারধর করে। কিছু সময় পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।”
জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন বলেন, “মাওলানা কাউছারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সারাদেশের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা ঘরে বসে থাকবে না। তারা আন্দোলনে নামবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইমাম-মুয়াজ্জিনরা দুর্বল নয়।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে এই হত্যাকাণ্ড দেশের জন্য একটি অশনিসংকেত। জাতীয় ইমাম সমিতি আশা করে, প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”
উল্লেখ্য, মাওলানা কাউছার হোসেন মিলনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নিহতের স্ত্রী শিল্পি আক্তার লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা বিএনপি এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নিহত কাউছারকে গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে সন্ত্রাসীরা হামলার শিকার করে, এবং সেদিন সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আসিফ