ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেলান্দহে আইসক্রিম কারখানায় বিষাক্ত রং ব্যবহার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেলান্দহ, জামালপুর

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ১ জুন ২০২৫

মেলান্দহে আইসক্রিম কারখানায় বিষাক্ত রং ব্যবহার

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আইসক্রিম কারখানাগুলোতে বিষাক্ত রং ও কৃত্রিম ফলের ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আইসক্রিম। এতে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এসব কারখানার নেই পরিবেশ ছাড়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স কিংবা অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। ফলে সরকার রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি আইসক্রিম কারখানার পরিবেশ একই রকম নোংরা। স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে বিভিন্ন রঙ ও কৃত্রিম ফলের ফ্লেভার পড়ে আছে। ড্রামের ভিতরে কাপড়ের জন্য ব্যবহৃত বিষাক্ত রং ও ফ্লেভার মেশানো হচ্ছে। মোটা দানার চিনি পানিতে গুলিয়ে মুখরোচক স্বাদ তৈরি করা হয়, যাতে শিশু-কিশোররা সহজেই আকৃষ্ট হয়। ওই ড্রামের ভিতরে তৈরি রঙ ও ফ্লেভার মিশ্রিত পানি কারিগররা ফর্মায় ঢেলে বরফে জমিয়ে আইসক্রিম বানাচ্ছেন।

আইসক্রিম কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাদা আইসক্রিম তৈরির নির্দেশনা থাকলেও শিশুদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ফ্লেভারের আইসক্রিম তৈরি করা হয়।

মেলান্দহের সবচেয়ে বড় আইসক্রিম কারখানা হচ্ছে ম্যানোলা আইসক্রিম কারখানা। মেলান্দহসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে এই কারখানার আইসক্রিম সরবরাহ করা হয়। এখানেও বিভিন্ন রঙ মিশিয়ে তৈরি করা হয় আইসক্রিম, বিশেষ করে পাইপ আইসক্রিম।

দুরমুঠ বাজারে একটি নামসর্বস্ব আইসক্রিম কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, কারখানার মালিক খন্দকার শফিউল আলম শাফির সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন, “আমার কারখানার কোনো কাগজপত্র নেই— না স্যানিটারি ইনস্পেক্টরের ছাড়পত্র, না ট্রেড লাইসেন্স। স্যানিটারি ইনস্পেক্টর এসে সাদা আইসক্রিম তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু শিশুরা রঙ ছাড়া আইসক্রিম খেতে চায় না, তাই রঙিন আইসক্রিম বানানো হয়।”

মাহমুদপুর বাজারের পিওর আইসক্রিম কারখানায় গিয়েও দেখা গেছে স্যাঁতসেঁতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আইসক্রিম তৈরি হচ্ছে। ড্রামের ভিতরে বিভিন্ন কৃত্রিম রঙ মেশানো হচ্ছে। প্রশিক্ষণ ছাড়াই অনুমানভিত্তিকভাবে রঙ ও ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আইসক্রিম। কৃত্রিম নারকেলের ভূষি দিয়ে বানানো হচ্ছে নারকেল ফ্লেভারের আইসক্রিম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. আলমগীর জানান, “দ্রুতই এসব আইসক্রিম কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

সজিব

×