ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাঁচা ও বাঁচানোর যুদ্ধ ॥ করোনা মোকাবেলায় এক কাতারে গোটা বিশ্ব

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ৩ এপ্রিল ২০২০

বাঁচা ও বাঁচানোর যুদ্ধ ॥ করোনা মোকাবেলায় এক কাতারে গোটা বিশ্ব

ওয়াজেদ হীরা ॥ করোনাভাইরাস নামের অতিক্ষুদ্র জীবাণুর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ছে গোটা বিশ্ব। এ লড়াই নিজেকে বাঁচানোর এবং অন্যকে বাঁচানোর। অর্থনৈতিক মন্দার হাতছানি দেয়া স্থবির বিশ্বে আগামীর সঙ্কট মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই যৌথ এবং একক চেষ্টায়। স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী থেকেও অন্যকে বাঁচানোর যুদ্ধে ভালবাসার হাত বাড়িয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ। লড়াই চালানোর পাশাপাশি আগামীর দিনগুলোর কথা ভেবে দেশে দেশে নেয়া হচ্ছে নানা অর্থনৈতিক প্রস্তুতি। নেয়া হচ্ছে জীবন বাঁচানোর প্রযুক্তি আবিষ্কারের চেষ্টা। এমন পরিস্থিতিতে দেশ ও মানুষের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশও। ঘর থেকে প্রতিবেশী আর দেশ থেকে বিশ্ববাসীর জীবন বাঁচানোর এ যুদ্ধে এক কাতারে শামিল সবাই । নোভেল করোনাভাইরাসে সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে আর প্রতি ঘণ্টায় আসছে মৃত্যুর সংবাদ। সর্বশেষ তথ্যে এই ভাইরাসে বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখের বেশি মানুষ আর মারা গেছেন ৪৭ হাজারে ওপরে। আইইডিসিআর তথ্যমতে, বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ আর মারা গেছেন ৬ জন। শোকের ছায়ায় কাঁদছে গোটা বিশ্ব। তিনমাস হয়ে গেলেও এই নিয়ে এখনও কোন প্রতিষেধকের সুখবর নেই। আর তাই সারাবিশ্বের মানুষই এখন নিজে বাঁচার অন্যকে বাঁচানোর যুদ্ধে এককাতারে শামিল হয়েছেন। ভাইরাসের আক্রমণের প্রকোপ কমাতে দেশে দেশে লকডাউন, শাটডাউন করে রাখায় স্থবির হয়ে গেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। এর মধ্যেই স্বপ্ন দেখতে হচ্ছে আগমী দিনের। করোনা গ্রাস থেকে মুক্তির পর কিভাবে চলবে দেশ, জাতি, মানুষ এই পরিকল্পনায় ব্যস্ত পর থেকেই সচেতনতার কথা বেশি বেশি করে বলা হচ্ছে। ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষদের রক্ষায় গত ২৬ মার্চ থেকে লম্বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। প্রথম ১০ দিনের ছুটি হলেও তা এখন বেড়ে ১৭ দিন হয়েছে। এই সময়ে নিজেকে বাঁচানোর যুদ্ধ করছে সবাই। প্রয়োজন ছাড়া সারাদেশের মানুষ খুব একটা বের হচ্ছেন না। নানা কাজে ছুটে চলা মানুষগুলো নিজেদের প্রয়োজনেই নিজেদের গৃহবন্দী করে রাখছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য কিছু। অন্যান্য পণ্যের ব্যবসায়ীরাও এখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য নিজে নিজে হোম কোয়ারেন্টাইনে সময় কাটাচ্ছেন। সচেতনভাবেই নিজেদের গুটিয়ে রাখছেন মানুষ। একই সময়ে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বা মুঠোফোনে বন্ধু-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেউ কেউ এগিয়ে আসছেন মানবিক সহায়তায়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সমাজকর্মী তৌহিদুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ছুটে চলা মানুষরা নিজেদের বাঁচাতে এখন নিজেদের বন্দী করেছি নিজ ঘরে আবার আমরাই কারও না কারও পাশে দাঁড়াচ্ছি, মানবিক হচ্ছি, সহায়তার হাত বাড়াচ্ছি। আমরা নিজেও বাঁচার চেষ্টা করছি অন্যকেও বাঁচানোর চেষ্টা করছি। প্রতিদিনই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ঘরে থাকার উৎসাহ দিয়ে নানা বিষয় পোস্ট করা হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মী হামিদুল লিখেছেন, ‘আমি টানা বাসায় অবস্থান করছি, সবাই ঘরে থাকুক, সুস্থ থাকুন এবং অন্যকেও সুস্থ রাখুন।’ এর আগে একাধিক মন্ত্রী সচিবের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এটি এমন একটি বিষয় যেখান থেকে বাঁচার উপায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে দূরত্ব বজায় রাখা অর্থাৎ ঘরে থাকাই উত্তম। এই সময় ঘরে বই পত্রিকা পড়ে সময কাটাচ্ছেন কেউ কেউ আবার অনলাইনে কাজকর্ম সারছেন। এদিকে, আতঙ্ক আর নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী ঘরবন্দী অবস্থায় আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিকের ক্লাস নেয়া হচ্ছে সংসদ টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে। মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল খবির জানান, ধারাবাহিক মূল্যায়ন বার্ষিক পরীক্ষার ফলের সঙ্গে যোগ হবে। অন্যদের বাঁচাতে মানুষের পাশে মানুষ ॥ এদিকে, করোনার কারণে সবাই যেখানে গৃহবন্দী সেখানে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের অসচ্ছল দরিদ্র মানুষগুলো। কাজ না থাকায় আয় নেই, নেই খাবারের নিশ্চয়তাও। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন সমাজের অন্যান্য মানুষ। ব্যক্তি উদ্যোগ, সামাজিক বা বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে নিত্যপণ্য নিয়ে দরিদ্রদের ঘরে ঘরে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে সরকার ঘোষিত ছুটির মধ্যে ৬৪ জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, ৩৯ হাজার ৬৬৭ টন চাল ও ১১ কোটি ২৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে বিনামূল্যে দরিদ্ররা এসব সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি সারাদেশে ৫০ লাখ কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি যেটা ঢাকার বাইরে সেই কর্মসূচী চালু রয়েছে। ঢাকায় খোলাবাজার ব্যবস্থার (ওএমএস) মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি সেটিও চালু রেখেছে সরকার। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. আইনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, এই করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা দিন আনে দিন খায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ্ কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ ইতোমধ্যেই ডিসিদের কাছে অনেক আগেই পৌঁছে গেছে। আমরা প্রথমে ৮ কোটি টাকা ২৮ হাজার ৭১৭ টন চাল দিয়েছি। পরে আরও বরাদ্দ দিয়েছি। এসব গরিব, নিম্ন আয়ের মানুষ বিনা পয়সায় পাবে। ৯ লাখ মানুষ এর সুবিধা পাবেন বলেও জানা গেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালু আছে। বর্তমানে সারাদেশে ৫০ লাখ কার্ডধারী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি যেটা ঢাকার বাইরে সেই কর্মসূচী চালু রয়েছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার গরিব ও স্বল্প আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ঢাকায় ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি করবে। আগামী সপ্তায় এটি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে করে শহরের স্বল্প আয়ের মানুষ বিশেষ করে রিক্সাচালক, সিএনজি চালক, অটোচালক, চা বিক্রেতাসহ সবার খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও জেলা প্রশাসকদের দরিদ্র মানুষের খাবার নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার ৬৪ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে বলেন, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষদের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিন। তারা যেন এই সঙ্কটকালে না খেয়ে থাকে সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সকল শ্রেণির মানুষ-শ্রমিক, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী, বৃদ্ধ কিংবা অসহায়দের চিহ্নিত করে এই সেবা পৌঁছে দিতে হবে। মানবিকতায় আর মানবতায় এগিয়ে আসছেন প্রতিদিনই ॥ প্রতিদিনই মানুষের পাশে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে দাঁড়াচ্ছে মানুষ। রাজধানীসহ দেশের সর্বত্রই অসহায়, দরিদ্র কর্মহীন মানুষদের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সহায়তা। ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসছেন মানুষ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব খবর পাওয়া যায় এর মধ্যে, রাজধানীর দিনমজুর শ্রেণীর ২০০টি পরিবারকে এক সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ নূর আলম মিয়া। শাহজাদপুর ও গুলশান লিংক রোড এলাকায় তিনি এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, লবণ ও হাত ধোয়ার সাবান। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত টানা সাধারণ ছুটিতে দিনমজুর শ্রেণীর আয় কমে যাওয়ায় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজ উদ্যোগে দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান এনজেএন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য নূর আলম। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দিনমজুর শ্রেণী বেশি কষ্টে আছে। তারা স্বাভাবিক সময়ে কাজ করে খেলেও এখন তাদের কাজ বন্ধ। তিনি বলেন, তাই এখন আমাদের সবার উচিত এসব দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এদিকে, হোম কোয়ারেন্টাইন বাস্তবায়নে ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনের পরও মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। এরই অংশ হিসেবে পাঁচ শতাধিক পথশিশু ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে দুপুরের খাবার পরিবেশন করেছে রেলওয়ে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশনে নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৫ শতাধিক পথশিশু ও ছিন্নমূলের মাঝে এ খাবার বিতরণ করা হয়। খাবার পরিবেশনকালে রেলওয়ে অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মহসিন হোসেনসহ রেলওয়ে পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। রেলওয়ের অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, করোনার এই দুর্যোগময় মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পথশিশু ও ছিন্নমূল মানুষেরা। তাদের পাশে মানবতার স্বার্থে বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এই দুর্যোগময় মুহূর্তটা আরও ভালভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব। এদিকে আয় বন্ধ হওয়া অনেক মানুষ আছেন যারা লোকলজ্জার ভয়ে খাদ্যসামগ্রী নিতে আসতে পারেন না। এসব মানুষের জন্যই হটলাইন চালু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। হটলাইনে দেয়া নির্ধারিত নম্বরে ফোন করলেই সময়মতো বাসায় খাদ্য পৌঁছে দেবেন ডিএসসিসির কর্মীরা। ডিএসসিসি এলাকার অসহায়দের কেউ খাদ্যসামগ্রী সহায়তা পেতে চাইলে ০১৭০৯-৯০০৭০৩ ও ০১৭০৯-৯০০৭০৪ এ দুটি নম্বর যোগাযোগের জন্য আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। সহায়তাপ্রত্যাশী কলদাতাদের তথ্য নিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে নিজ বাসায়। হটলাইন সেল পরিচালনাকারী ও ডিএসসিসির সিস্টেম এ্যানালিস্ট আবু তৈয়ব রোকন বলেন, মেয়র স্যারের নির্দেশে হটলাইন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ৩৬৯ জনকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি তাদের বাসায়। এ বিষয়ে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, মানবিক কারণে আমরা মানুষের পাশে খাদ্যসামগ্রীর সহায়তা নিয়ে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় কাউন্সিলর ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এসবের মাঝেও যদি কেউ সহায়তা থেকে বাদ পড়ে বা কেউ তালিকায় নাম না লেখায় অথবা লজ্জা পাচ্ছেন তাদের জন্যই এই হটলাইন সার্ভিসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অন্নহীন অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘স্টেজ ফর ইয়ুথ’ সংগঠনটি। ঢাকার ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় তারা এই নিম্ন আয়ের মানুষদের অন্তত ১০ দিনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে। এছাড়াও কামরাঙ্গীরচরে অসহায় ২৫শ’ পরিবারে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন এ্যাডভোকেট মোঃ কামরুলই ইসলাম এমপি। এ সময় বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। লালবাগ আজিমপুর নিউ পল্টন যুব সংসদ নামে একটি সংগঠনও এদিন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। করোনার এই সময়ে রাজধানীর খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড, গুলশান ও আমেরিকান দূতাবাসসংলগ্ন কূটনৈতিক এলাকার প্রধান সড়ক, ফুটপাত ও আশপাশের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখতে জীবাণুনাশক ছিটানোসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে নৌবাহিনী। এছাড়ও নৌবাহিনীর সদস্যরা দিনব্যাপী বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে সাবান ও মাস্ক, চাল, ডাল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণ করেন। ঢাকার বাইরেও এই কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে। মানুষের পাশাপাশি রাস্তার অসহায় প্রাণীদের জন্যও এগিয়ে আসছেন মানুষ। ফাঁকা রাস্তায় মানুষ না থাকায় অভুক্ত প্রাণীদের কেউ কেউ খাবার দিচ্ছেন। রাজধানীর উত্তরা এলাকার বাসিন্দা এবং অভিনয়শিল্পী জুঁই জান্নাত বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমরা মানুষেরাও যেমন বাঁচার চেষ্টা করছি, তেমনি এ প্রাণীগুলোকেও আমাদের বাঁচাতে হবে। কিছুদিন যাবত আমি আমার এলাকায় ছিন্নমূল কুকুর-বিড়ালগুলোর মধ্যে খাবার বিতরণের চেষ্টা করছি। মিরপুর এলাকায় কুকুর-বিড়ালের মধ্যে খাবার বিতরণ করছেন গৃহবধূ ফাহিমা নূর তন্বী ও তার দল। অন্যদিকে এসব প্রাণীর খাবার জোগান দিতে ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন কমিউনিটি গ্রুপও এগিয়ে আসছে। এদের মধ্যে ‘এক বেলার খাবার বোবা প্রাণীদের জন্য, ফুড ফর স্ট্রীট এ্যানিমেলস’ এবং ‘ডগ লাভারস অব বাংলাদেশ’ অন্যতম। ফেসবুক কাজে লাগিয়ে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবার সহযোগিতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কুকুর-বিড়ালদের মধ্যে খাবার বিতরণ করছে সংগঠনটি। অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটানোর প্রস্তুতি বিষাদের ছায়ার মধ্যেও অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য দেশে দেশে প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে। করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার হাতছানি রয়েছে। দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০০৮ সালের মন্দাকে ছাড়িয়ে যাবে বর্তমানের করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট। আগামী দিনগুলোতে অর্থনেতিক গতি প্রবাহ রাখতে মানুষের জীবন বাঁচানোর নানা উদ্যোগ নেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব। বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পোশাক খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিষয়টি এখনই ভেবে দেখার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। করোনা সঙ্কট উত্তরণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে সরকার। আগে মানুষের জীবন বাঁচানো পরে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. সামছুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, সকল উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৫ কোটির বেশি মানুষ এই খাতে কাজ করে। তাদের আয়ও মোটামুটি বন্ধ। মন্দা দেখা দিতে পারে, মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে। এজন্য দেশকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। সরকার সে বিষয়ে কাজও করছে। ইতোমধ্যেই পোশাক খাতে সহায়তা দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সহয়তাও যত সম্ভব নিতে হবে। অনানুষ্ঠানিক খাতে সহায়তা বেশি লাগবে বলে মনে করেন। ধনীশ্রেণীর সহায়তাও নিতে হবে। প্রয়োজনে বাজেট পুনর্বিন্যাস করে অর্থ সংস্থান করতে হবে। এর আগে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। গত ১৯ মার্চ এই টাকা বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সরকারকে সম্প্রতি ৩ লাখ ডলার জরুরী অনুদান অনুমোদন করেছে এডিবি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর আগে জনকণ্ঠকে বলেছেন, করোনাভাইরাস চিকিৎসা কিংবা নিয়ন্ত্রণে যত টাকা প্রয়োজন হবে তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। এদিকে, করোনাভাইরাসের মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অর্থ জমা দিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। সরকারের বিভিন্ন বাহিনী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তাদের কর্মকর্তাদের বেতন বা বিভিন্ন ভাতা না নিয়ে এই তহবিলে অর্থ জমা দিচ্ছেন স্বেচ্ছায়। এছাড়াও রয়েছে দেশের বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, শিল্পগোষ্ঠী। দেশ জাতির সঙ্কট এড়াতে সবাই এগিয়ে আসছেন। ড. কে এ এস মুরশিদ বলেন, আমাদের সক্ষমতা যতটুকু, ততটুকুই আমাদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। এছাড়াও দেশের দরিদ্র মানুষদের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া রয়েছে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আগামী জুন পর্যন্ত কোন কিস্তি জোর করে আদায় করতে পারবে না, তবে কেউ স্বেচ্ছায় দিলে নিতে পারবেন উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। জারি করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা দেখভালে সম্প্রতি মনিটরিং সেলও গঠন করেছে। এদিকে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর পরদিন বুধবার বৈঠক করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রীও। এদিকে, অর্থনৈতিক প্রস্তুতি ও দেশের মানুষদের জন্য বিশে^র অন্যান্য দেশও নানা পন্থায় কাজ করছে। জানা গেছে, ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপীর প্রণোদনা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য এই সময় নগদ ও খাদ্যে ভর্তুকি দেবে মোদি সরকার। মার্কিন অর্থনীতিকে বাঁচাতে দুই ট্রিলিয়ন বা ২০০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস)। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই এযাবতকালের বৃহত্তম প্রণোদনা প্যাকেজ। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও দেশটির নাগরিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৮ হাজার ২০০ কোটি ডলারের প্যাকেজ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ৩৩ হাজার কোটি পাউন্ডের (৪০ হাজার কোটি ডলার) সরকারী ঋণের ঘোষণা দেন বরিসের সরকারের নতুন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। একই সঙ্গে ২ হাজার কোটি পাউন্ডের কর মওকুফেরও ঘোষণা দেন তিনি। সাড়ে ৪ হাজার কোটি ইউরোর (৫ হাজার কোটি ডলার) সহায়তা প্যাকেজ হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সও। বিমান কোম্পানি বাঁচাতে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে সুইডেন ও ডেনমার্ক। ঋণ করে হলেও করোনা মোকাবেলা করতে চায় ভেনিজুয়েলা। পিছিয়ে নেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও। কাতার ঋণের কিস্তি পরিশোধ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে, বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ডলার। রমজান বিবেচনায় বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ চলতি মাসেই ৯ এপ্রিল শব-ই-বরাতের পর মাঝামাঝি পহেলা বৈশাখ এবং শেষ সপ্তাহে মাহে রমজান শুরু হবে। যদিও সরকারপ্রধান বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘরে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই সময়গুলোতে মানুষের নিত্যপণ্যের কেনাকাটা বাড়তে পারে। আর সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাজারে দ্রব্যমূল্য সরবরাহ নিশ্চিতে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছরই রমজানে একটা বাড়তি চাহিদা মানুষের তৈরি হয়। এবার যদিও বৈশাখের মতো সার্বজনীন উৎসব ঘরে পালন হবে, মানুষ স্বাভাবিকভাবেই কেনাকাটা করবে সেটি বিবেচনায় রাখতে হবে। এদিকে, যে কোন মূল্যে দেশের সর্বত্র সব ধরনের নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও মজুদ ঠিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। নিত্যপণ্যের স্বাভাবিক মজুদ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশের ব্যবসায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, চারটি গোয়েন্দা সংস্থাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে বলেও জানা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে টিসিবির কার্যক্রম আরও জোরদার করার জন্য বলা হয়েছে। সরকারের সব ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত কার্যক্রম শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে সরকারের নজর রয়েছে। যখন যা প্রয়োজন তাই করা হবে। রোজা, শব-ই-বরাত ও ঈদে সব ধরনের নিত্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেদিকে নজর রেখে সরবরাহ বাড়ানোরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন বলেন, পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করতে পারছে। এছাড়া দ্রুত পণ্য খালাসে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে, করোনার কারণে শপিংমল মার্কেট ও বিপণিবিতান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে মুদিপণ্যের দোকান, সুপারশপ এবং কাঁচা বাজার খোলা রয়েছে। এছাড়া টিসিবি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় ভর্তুকি মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলা করে মুজিববর্ষ আর রমজান মাসে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবিকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। এবারই প্রথমবারের মতো সংস্থাটি নিজেই রমজানের পণ্য আমদানি জন্য এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করে। সব মিলিয়ে এবার রমজানের আগেই অন্যবারের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি পণ্য নিয়ে টিসিবিকে মাঠে নামতে বলা হয়েছে এবং টিসিবি সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে। টিসিবির মুখপাত্র মোঃ হুমায়ূন কবির জনকণ্ঠকে বলেন, রোজা সামনে রেখে আমাদের কোন কোন পণ্য দশগুণে বেশি রাখা হয়েছে। আর করোনার কারণে আমরা এখন সররবাহ তিনগুণ বাড়িয়েছি। ট্রাক ডাবল করেছি। যাতে মানুষের সমস্যা না হয়। সতর্কতা সামনের দিনগুলোতেও ॥ প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসের এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, যা এই ভাইরাসকে মারতে পারে অথবা মানুষকে রক্ষা করতে পারে। তবে এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরামহীন গবেষণা করে চলছেন বিজ্ঞানীরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী এই ভাইরাস ঠেকাতে বিশ্বের প্রায় ৩৫টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন তৈরির কাজ জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সময় থাকতে শিক্ষা নেয়া উচিত। নইলে ব্যাপকতা দেখা দিলে কেউ কাউকে খুঁজে পাবে না। আমেরিকার মতো দেশের এখন টালমাটাল অবস্থা। তাই বিশ্ব থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাইকে দুই সপ্তাহ ঘরে থাকতে হবে। আর ঘরে থাকা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘরে থেকে নিজে বাঁচুন, পরিবার ও দেশকে বাঁচান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বারবার দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানিয়ে আসছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, রোগ হওয়ার আগে প্রতিরোধ দরকার। যেহেতু করোনাভাইরোসের কোন প্রতিষেধক নেই, তাই প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। ঘরে থাকার মাধ্যমে এই ভাইরাস ব্যারিকেড দেয়া সম্ভব হবে। আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডাঃ মোশতাক হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসে প্রতিরোধে যা যা করার দরকার তাই করতে হবে। সবারই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাহলে নিজে, দেশ ও জনগণ রক্ষা পাবে।
×