ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্থ হওয়ার পর করোনা রোগীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ঘরে থাকুন

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১ এপ্রিল ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ঘরে থাকুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গোটাবিশ্ব প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া কোন বাংলাদেশী প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বললেন। করোনাভাইরাস জয়ী ওই তরুণ দেশের সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘরে থেকে পরিবারকে সময় দিতেও অনুরোধ করেছেন এই তরুণ। ওই তরুণ জার্মানি থেকে দেশে ফেরার দশ দিন পর পরিবারের সঙ্গে থাকার সময় নিজ বাড়িতেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তার পরিবারের কোন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এমনকি তার কোন বন্ধুবান্ধবও আক্রান্ত হননি বলে ওই যুবক জানান। সুস্থ তরুণের এমন তথ্য দেশবাসীর মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। মঙ্গলবার গণভবন থেকে ৬৪ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের এক পর্যায়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ওই তরুণের সঙ্গে কথা বলেন। ওই যুবকের নাম ফয়সাল শেখ। ওই যুবক করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দিনগুলোতে সবাইকে ঘরে থেকে পরিবারকে সময় দেয়ার অনুরোধ জানান। করোনা থেকে মুক্ত হওয়া জার্মানি ফেরত ফয়সাল শেখ বলেন, আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করছি। আমার পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানোর জন্য গত ১ মার্চ দেশে ফিরি। এখানে আসার ১০ দিন পর আমার খুব খারাপ লাগে, শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যায়। তখন আমার ও আমার পরিবারের সবার নিরাপত্তার জন্য আমি নিজেই আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করি টেস্ট করানোর জন্য। যুবক বলছিলেন, এরপর যখন আমার করোনা পজিটিভ আসে, তখন আমি ভয়ে ছিলাম। কারণ করোনা একটি নতুন ধরনের রোগ, এটি কীভাবে সামাল দেয়া হবে এখানে! আমি এখানে জার্মানির মতো চিকিৎসা সেবা পাব কি-না, এখানে কীভাবে চিকিৎসা হবে, এটা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম। যুবক জানান, টেস্টে পজিটিভ আসার পর আইইডিসিআর আমাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে চায়। আমি রাজি হই। তারা বাসায় এসে আমাকে নিয়ে গিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি রাখেন। সেখানে আমি ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকি। শুধু তাই নয় আমার পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কয়েকদিন পর বার বার আমার টেস্ট করানো হয়। টেস্টে আমার করোনাভাইরাস সংক্রমণ নেগেটিভ অর্থাৎ শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মোতাবেক আমি আমার পরিবারের কাছে ফিরে যাই। আল্লাহর রহমতে আমার মাধ্যমে পরিবারের কারও করোনা হয়নি। চিকিৎসা অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, আমি আইইডিসিআর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছি। সেখান থেকে একজন ডাক্তার সবসময় আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। আমার কোন সমস্যা হচ্ছে কি-না জানতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ওই যুবক বলেন, আপনার নির্দেশনায় দেশে যে করোনা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, আমি আপনার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। দেশের জনগণের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানুন। করোনার সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে বাসায় থাকা, ঘরে থাকা। পরিবারকে সময় দিন। যতদিন ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে ঘরে থাকুন, তাহলেই কেবল আমরা করোনা থেকে মুক্ত থাকতে পারব। এ সময় ফয়সালকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে তুমি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছ। পরিবারের আর কারও তো কোন অসুবিধা হয়নি? প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তরে ফয়সাল বলেন, আমার পরিবার ও বন্ধুদের কারও কোন সমস্যা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব ভাল, শুনে খুব খুশি হলাম।
×