ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ সিইউজের নির্বাচন

প্রতিটি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিল সংবাদপত্র ॥ ড. অনুপম সেন

প্রকাশিত: ১১:১৫, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

প্রতিটি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিল সংবাদপত্র ॥ ড. অনুপম সেন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর আমরা স্বাধীনতা পাইনি। আমরা ছিলাম পাকিস্তানের ঔপনিবেশ। বাঙালী জাতি অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিল এ দেশের সংবাদপত্র। স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল। নিপীড়ন তুচ্ছ করে সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র হবে। সেই যাত্রা শুরু হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল ও সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ। ড. অনুপম সেন বলেন, এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিকরা রক্ত দিয়েছেন। ’৭১-এ সংবাদ ভবন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। একজন সাংবাদিক আগুনে পুড়ে শহীদ হন। ২৫ মার্চ রাতে একজন সাংবাদিক মারা যান। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা বাংলার মুক্তি সংগ্রামে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন। আইয়ুব খানের শাসনামলে ছিল কণ্ঠরোধ অবস্থা। কথায় কথায় বেত্রাঘাত চলত। সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল সংবাদপত্র। জনগণের ক্ষোভ প্রচ্ছন্নভাবে প্রকাশ করেছে। ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীনতা পেলাম তখন আমাদের কিছুই ছিল না। শিল্প ছিল না, সেবাখাত ছিল না। কিছু জমি ও কিছু কৃষক ছিল। তখন বাংলাদেশ ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ। বছরে মাত্র এককোটি মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হতো। এখন ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। আমরা ক্ষুধাকে জয় করেছি। কিন্তু দারিদ্র্যকে এখনও জয় করতে পারিনি। এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে ২১ শতাংশ মানুষ। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র নাছির বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম। সাংবাদিকতা না থাকলে সমাজে সাম্য, ভারসাম্য থাকত না। তিনি বলেন, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু নিষ্ঠুর বাস্তবতা হলো আন্দোলন সংগ্রামে বিভক্তি, বিভাজন হয়। এ সুযোগ মালিকপক্ষ নেন। বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, দেশে এখন গণমাধ্যমের রমরমা অবস্থা হলেও সাংবাদিকদের বেহাল অবস্থা। এতদিন ইউনিয়ন যে প্রক্রিয়ায় চলেছে, সেভাবে চললে হবে না। চাকরির নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করতে হবে। সর্বজনগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তে আসতে হবে। চট্টগ্রামে ট্রেড ইউনিয়ন চর্চা যেভাবে হয়, ঢাকায় সেভাবে হয়নি। তবে আমরা দৃশ্যমান পরিবর্তন আনছি। আমি পিছিয়ে থাকার লোক নই। বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক সমাজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নবম ওয়েজবোর্ডে দুটি পক্ষ। একটি সরকার, অন্যটি মালিকদের সংগঠন নোয়াব। সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ওয়েজবোর্ড নিয়ে মামলা করেছেন, যা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌসের পরিচালনায় আরও বক্তৃতা করেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। সিইউজের এবারের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সম্মাননা প্রদান করা হয় মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক নওশের আলী খান এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজীকে। বার্ষিক সাধারণ সভায় বিগত বছরের প্রতিবেদন সর্বসম্মতভাবে অনুমোদিত হয়। আজ সিইউজে নির্বাচন সিইউজের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। ইউনিয়নের ৪০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
×