ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে কেউ রাজনীতি করতে পারে না’

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে  কেউ রাজনীতি করতে পারে না’

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে দেশে কেউ রাজনীতি করতে পারে না। জনমত জরিপেই উঠে এসেছে, দেশের ৮৬ ভাগ মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থাশীল। আর দেশের মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ বিএনপির প্রতি আস্থাশীল। বিএনপি ও তাদের সঙ্গে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তা প্রমাণ হয়েছে। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এ দাবী জানান। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমিন, সরকারি দলের নেছার আহমদ, মজাহারুল হক প্রধান, সেলিম আলতাফ জর্জ, আনোয়ারুল আজিম আনার, আহসানুল ইসলাম টিটু, বেগম জাকিয়া পারভীন খানম, আবু জাহির, বেগম ফেরদৌসী ইসলাম, মোজাফফর হোসেন ও জাতীয় পার্টির নাজমা আখতার। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন বলেন, শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন-অগ্রগতির বাতিঘর হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র ১০ বছরেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে উন্নয়নের বিষ্ময়, উন্নয়নের রোলমডেল। সব দিক থেকে এবং সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সোনার বাংলা গড়ে তুলছেন তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টির নাজমা আখতার বলেন, মাদকের ছোবলে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস হতে বসেছে। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। এই মাদকচক্রের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। শুধু মাদকসেবী নয়, মাদকের গডফাদার ও সিন্ডিকেটের হোতাদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও দুর্নীতি সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। শিশু ও নারী ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষায় কঠোর আইন করতে হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করতে হবে। সরকারি দলের নেছার আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নয়, পাকিস্তানের চর হিসেবে খুনী-জিয়ারা কাজ করেছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যেন বাংলাদেশ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে না পারে সেজন্য তাঁকে স্বপরিবারে হত্যা করে এই খুনী চক্র। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিরা এখনও নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে। এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেলিম আলতাফ জর্জ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের একটি লাইনও লিখতে হলে বঙ্গবন্ধুর নাম লিখতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে একটি দেশকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রকাশ্য স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী এখনও প্রকাশ্য রাজনীতি করে। খালেদা জিয়া ১৫ আগস্টে কাল্পনিক জন্মদিন পালন করে। কীভাবে তারা এতো অকৃতজ্ঞ হতে পারে? মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে তারা এদেশে রাজনীতি করতে পারে না। আবু জাহির সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দাবী জানিয়ে বলেন, বিএনপির মুখে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের কথা মানায় না। বিএনপি আমলে দুঃশাসনের কথা জনগণ কোনদিন ভুলবে না। জঙ্গীনেতা মুফতি হান্নান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়ে বলেছে, হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের নির্দেশ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাসহ পুরো আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূণ্য করতে চেয়েছিল। ৬৩ জেলায় বোমা হামলা করে জজ-আইনজীবীসহ শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। তখন বিএনপির মানবাধিকার কোথায় ছিল? আহসানুল হক টিটু বলেন, পাকিস্তানী প্রেমিক বিএনপি নেতারা সংসদে অনেক কথা বলেন। কিন্তু পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকাতেই বেরিয়েছে বাংলাদেশ ওই দেশটি থেকে সবদিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ ভাগ, পাকিস্তানের ৩ দশমিক ৫, বাংলাদেশের মুদ্রামান পাকিস্তানের থেকে অনেক এগিয়ে। মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিপ্রেমী বিএনপি নেতাদের চোখে এসব কথা চোখে পড়ে না। আনোয়ারুল আজিম আনার আরিচা-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক জরিপেই প্রকাশ পেয়েছে দেশের ৮৬ ভাগ মানুষ আস্থা রাখে। আর বিএনপির প্রতি মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট। অথচ বিএনপি নেতারা আজ অনেক বড় বড় কথা বলেন। দেশের মানুষ ভাল করেই জানেন, বিএনপির কাছে শুধু দেশের মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও নিরাপদ নয়।
×