ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নরেন বিশ্বাস পদক পেলেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

নরেন বিশ্বাস পদক পেলেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা ভাষা ও উচ্চারণের বিকাশে বিশেষ অবদান রেখেছেন বাকশিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাস। বাংলা উচ্চারণ অভিধান, প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা, প্রসঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি, ভারতীয় কাব্যতত্ত্ব, অলঙ্কার অন্বেষা, কাব্যতত্ত্ব অন্বেষা, ব্যবহারিক উচ্চারণ অভিধানসহ তিনি ভাষার ওপর অনেক বই লিখেছেন। ঐতিহ্যের অঙ্গীকার, প্রিয় পঙ্ক্তিমালাসহ বেশ কিছু ক্যাসেট রয়েছে তার। বাংলা শব্দ ভা-ারের এই মানুষটিকে পদক প্রদানের আয়োজন করেছে সাহিত্যের বাচিক চর্চা ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কণ্ঠশীলন। গান, আবৃত্তি আর কথামালায় ‘নরেন বিশ্বাস পদক ২০১৯’ প্রদান করা হয় বরেণ্য আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়কে। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। এরপর নরেন বিশ্বাস ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে পর্দায় তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে ‘নরেন বিশ্বাস পদক ২০১৯’ প্রদান করা হয় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর শুরু হয় আলোচনা। অতিথিরা বলেন, নরেন বিশ্বাস শেখাতেন বাংলা শব্দের উচ্চারণ রীতি। তার প্রবল উৎসাহ শিক্ষার্থীদের মাঝে সঞ্চারিত হতো অতি দ্রুত। জেরক্স করা উচ্চারণ সূত্র তাদের মাঝে বণ্টনের পর শুরু করতেন বক্তৃতা। এভাবে কণ্ঠশীলন ছাড়িয়ে বিস্তৃত হতে থাকে তার বিচরণ ক্ষেত্র। থিয়েটার স্কুল, গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আবৃত্তি ও নাটকের দল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উচ্চারণ বিষয়ক বক্তৃতা দেয়ার জন্য তার ডাক পড়ত। তিনি বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ও ঐতিহ্যাশ্রয়ী রচনাগুলোর সুনির্বাচিত পাঠ বাণীবদ্ধ করেছেন তার জীবতকালের অন্তিমলগ্নে। তিনি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের উপদেশনায় ‘ঐতিহ্যের অঙ্গীকার’ নামে তেরোটি ধারাবাহিক ক্যাসেট প্রকাশ করেন। অল্পদিনে এই সুকর্মের জন্য অর্জন করেন ‘আনন্দ পুরস্কার’ (কলকাতা, ভারত)। আবৃত্তির ক্যাসেট ‘প্রিয় পঙ্ক্তিমালা’ এবং উচ্চারণ বিষয়ক বক্তৃতার পাঁচটি ক্যাসেটও প্রকাশ করেন শেষ সময়ে। পুরস্কাপ্রাপ্ত বাচিক শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বলেন, সত্তর ও আশির দশকে সেলিব্রেটি বলতে বোঝায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় আবৃত্তিকার হিসেবে সেই সেলিব্রেটি পরিচয়টি তৈরি করতে পেরেছিলেন। তাকেই বলা যায় বাংলাদেশের প্রথম তারকা আবৃত্তিকার, আমাদের আবৃত্তি সাফল্যের শীর্ষে। দেশের আবৃত্তি শিল্পে ধ্রুপদী চলনের পরিণত প্রয়োগ তার হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। আলোচনার পর পরিবেশিত হয় কণ্ঠশীলন আবৃত্তি প্রযোজনা ‘শিল্পযুদ্ধে আমি তো কর্ণ’। প্রযোজনাটি নির্দেশনা দিয়েছেন রইস উদ্দীন স্বপন। এতে অংশগ্রহণ করেন জহিরুল হক খান, প্রদীপ কুমার আগারওয়ালা, ইসরাত জাহান, মৌসুমী সুব্রত, মায়মুনা মিলি, শিল্পী রায় ও মাসুদ হোসেন। অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি করেন বাচিক শিল্পী ডালিয়া আহমেদ, বেলায়েত হোসেন, মাসকুরে সাত্তার কল্লোল, মাহমুদা আক্তার, আবু নাসের মানিক, মাসুম আজিজুল বাশার, ইভা ম-ল, এনায়েত কাজল ও শামীমা নাজনীন।
×